মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
বিকল তিনটি জরুরি যন্ত্র, দুর্ভোগে রোগী
মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত বিভাজন মেশিন দেড় বছর ধরে ও থ্যালাসেমিয়া বাহক নিণার্য়ক মেশিন ও এলাইজা মেশিন মাস ছয়েক ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তদের পাশাপাশি সাধার রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকেদের চরম দুর্ভোগ পড়তে হচ্ছে। ব্লাড ব্যাঙ্কের প্রধান ও থ্যালাসেমিয়ার বিভাগের প্রধান মেডিক্যাল কলেজের সুপারের মাধ্যমে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সে সব মেরামতের জন্য আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ বছর আগে ন্যশনাল এইড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে আড়াই কোটি টাকা দামের রক্ত বিভাজন মেশিন পাঠিয়েছিল। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মেশিনটি ব্লাডব্যাঙ্কের বাইরে পড়ে ছিল। এর পর দুই বছর ওই মেশিনটি চালু থাকার পর দেড় বছর আগে খারাপ হয়ে যায়। পাশাপাশি এলাইজা মেশিনও খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। দুই বছর আগে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ৭৫ লক্ষ টাকার থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্ণায়ক মেশিন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। এই মেশিনে পরীক্ষা করে জানা যায় রক্তে থ্যালাসেমিয়ার বাহক আছে কিনা।  মালদহ জেলায় বর্তমানে ৫০০ বেশি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রয়েছেন। মেশিন খারাপ হয়ে যাওয়ার বহু মানুষকে বাইরে থেকে ৮০০ -৯০০ টাকা খরচ করে থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণায়ের পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। অমৃতির বাসিন্দা গাড়ির চালক দেব্রবত গুপ্ত বলেন, “আমার মেয়ের রক্ত পরীক্ষা করার জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজে গিয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসক জানান এখানে রক্ত পরীক্ষা হবে না। মেশিন খারাপ। বাধ্য হয়ে নার্সিংহোম থেকে ৮০০ টাকা দিয়ে মেয়ের রক্ত পরীক্ষা করিয়েছি। ” বিনা পয়সায় রক্ত পরীক্ষার সূযোগ থাকলেও তাঁর মতো অনেক গরিবকে বাইরের নার্সিংহোমে রক্ত পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।
জেলা ভলেন্টারি ব্লাড ডোনারস ফোরামের সম্পাদক সৌমিত্র দত্ত এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমাদের সংগঠন থেকে একাধিক বার থ্যালাসেমিয়ার বাহক নির্ণায়ক মেশিন এবং এলাইজা মেশিন এবং রক্ত বিভাজনের মেশিন মেরামত করার জন্য মালদহ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি লিখেছি। কিন্তু এর পরেও মেশিনগুলি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।” তিনি জানান, মালদহে বছরে ১৯ হাজার ইউনিটের বেশি রক্ত প্রয়োজন। অথচ জেলায় বিভিন্ন রক্তদান শিবির থেকে ৯০০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়। এই রক্ত বিভাজন মেশিনটি ঠিক থাকলে জেলায় রক্ত সংকট হত না। পাশাপাশি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তদের কেবলমাত্র যে লোহিত কণিকা প্রয়োজন তারা তা অনায়াসেই পেতে পারত। কিন্তু এই রক্ত বিভাজন মেশিনটি খারাপ থাকায় রোগীদের দেহে লোহিত রক্ত কণিকা ছাড়া অন্য রক্ত কণিক চলে যাচ্ছে। তাঁরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এত দিন ধরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ব্লাড ব্যাঙ্ক ও থ্যালাসেমিয়া বিভাগে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ মেশিন খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে, অথচ এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রাজ্য পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী এবং মালদহ মেডিক্যাল কলেজ সুপার মহম্মদ আবদুর রসিদও। কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “বুধবারেও আমি রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে নিয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৈঠক করেছি। কই কেউ তো আমাকে ওই তিনটি মেশিন খারাপ হয়ে পড়ে থাকার ব্যাপারে কিছুই জানাননি। খুব তাড়াতাড়ি কী ভাবে তিনটি মেশিন মেরামত করে চালু করা যায় দেখছি।”
এ দিন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার মহম্মদ আবদুর রসিদ বলেন, “এই ব্যাপারে আমাকে কেউই কিছুই জানাননি।” সুপার না জানার কথা বললেও মেডিক্যাল কলেজ ব্লাডব্যাঙ্কের প্রধান প্রলয় দাস বলেন, “অনেক দিন ধরে ব্লাড ব্যঙ্কের রক্ত বিভাজন মেশিন ও এলাইজা মেশিন খারাপ হয়ে আছে। মেশিন ঠিক করার জন্য স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়েছে। কেন হচ্ছে না জানি না।” থ্যালাসেমিয়া বিভাগের প্রধান বিদ্যুৎকুমার ঘোষ বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে থ্যালসেমিয়া বাহক নির্ণায়ক মেশিন মেরামত করার আর্জি জানানো হয়েছে। শুনেছি মেশিনের যন্ত্রাংশ মুম্বই থেকে আনিয়ে তারপর সারানো হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.