জেলবন্দি জিটিএ সদস্যদের মুক্তির জন্য রাজ্যের উপরে চাপ বাড়াতে এবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার হুমকি দিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রথম সারির নেতা হরকাবাহাদুর ছেত্রী। বুধবার মহাকরণে কালিম্পঙের মোর্চা বিধায়ক হরকা বাহাদুর পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করেন। তার পরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। প্রতিশ্রুতি দিয়েও মোর্চা নেতাদের মুক্তি না দেওয়ায় তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ‘দ্বিচারিতার’ অভিযোগও এনেছেন তিনি।
এখনও ১০ জন জিটিএ সদস্য জেলে বন্দি। তাঁদের মধ্যে ৩ জন কার্যনির্বাহী সমিতির সদস্য। হরকা বাহাদুর এ দিন বলেন, “কিছু দিন আগে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছিল, তাতে ধৃতদের মুক্তির ব্যবস্থা হবে বলে আশা করেছিলাম। বাস্তবে তা হচ্ছে না। উপরন্তু, সাত জনের বিরুদ্ধে আরও একটি পুরনো মামলা থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা পাহাড়বাসীর কাছে অস্বস্তিতে পড়ছি। জনসমক্ষে হেয় হচ্ছি। সে ক্ষেত্রে বিধায়ক থাকা অর্থহীন। তাই ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছি দলের সভাপতি
বিমল গুরুঙ্গকে।”
সেই সঙ্গে পুরমন্ত্রীকেও তাঁদের বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছেন বলে এ দিন দাবি করেন কালিম্পঙের বিধায়ক। বিধানসভার চলতি অধিবেশন শেষ হওয়ার পরে পাহাড়ে ফিরে দলনেতার মতামত নিয়ে পদক্ষেপ করবেন
বলে তিনি জানিয়েছেন। যদিও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দাবি করেন, তাঁকে ইস্তফার ব্যাপারে কালিম্পঙের বিধায়ক কোনও কথা বলেনননি। পুরমন্ত্রী জানান, “হরকাবাহাদুর ছেত্রী আমাকে এই বিষয়ে কিছু বলেননি। এটা আমার বিষয়ও নয়। স্বরাষ্ট্র দফতরের ব্যাপার।”
হরকাবাহাদুর ছেত্রী মহাকরণে সাংবাদিকদের জানান, যাঁদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দেওয়া হয়েছে তাঁদের নাম হল মহেন্দ্র প্রধান, পাশাং তামাং, অরূপ সিকজি, অনিত থাপা, অনুজ থাপা, প্রণয় থাপা এবং যোগেন রাই। এঁদের বিরুদ্ধে দার্জিলিঙ আদালতে বুধবার ৪৩৬, ৪৩৭ এবং ১২০বি ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে অনিত থাপা এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য। হরকা বলেন, “পাহাড়ের মানুষ আমাদের ভুল বুঝছেন। আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।”
এ দিনই জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে শিপচু মামলায় অভিযুক্ত মোর্চা নেতা তথা জিটিএ সদস্য বিনয় তামাঙ্গ জামিন পেয়েছেন। জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী হেফাজত করিম বিনয় তামাঙ্গের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলা আদালতে আরও কয়েকটি মামলা থাকায় এখনই তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিনয় তামাঙ্গের বিরুদ্ধে থাকা মালবাজার থানার একটি মামলার শুনানি আগামী ২ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি আদালতে হবে বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি মুক্তির দাবিতে অনশনও করেছিলেন গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ এই নেতা। |