সরকারি দফতরে নাকি আঠারো মাসে বছর। আর এই দীর্ঘসূত্রিতার খেসারত দিতে হচ্ছে খোদ সরকারি কর্মীদেরই।
পঞ্চম জাতিভিত্তিক আর্থ সামাজিক জনগণনা শেষ হয়েছে প্রায় বছর দেড়েক আগে। ওই কাজে যুক্ত নদিয়া জেলার ২৫৭৬ জন সাধারণ গণনাকারীর অভিযোগ, প্রথম দফার টাকা পেলেও এখনও অবধি দ্বিতীয় দফার একটি টাকাও মেলেনি। কানাকাড়ি মেলেনি ৪৭২ জন সুপারভাইজারের কপালেও।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ৪ মে সারা রাজ্যের মত নদিয়াতেও জাতিভিত্তিক জনগণনার কাজ শুরু হয়। পঞ্চায়েত কর্মী, সেচ দফতর, জন স্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা এই কাজে যুক্ত ছিলেন। সাধারণত এক একজন গণনাকর্মী কোনও গ্রামের ৪টি করে পাড়ায় গণনা করেছিলেন। এই কাজের জন্য গণনাকর্মীদের ১৮,০০০ টাকা ও সুপারভাইজারদের ২৪,০০০টাকা করে পাওয়ার কথা ছিল। গণনার কাজ শেষ হয় জুনের শেষ নাগাদ। রিপোর্ট জমা পড়ে ব্লক অফিসে। তারপর অক্টোবরের ১৮ তারিখ গণনাকর্মী ও সুপার ভাইজাররা যথাক্রমে ৯,৩০০ ও ১২০০০ টাকা করে পান। অর্থাৎ পারিশ্রমিকের অর্ধেক টাকা মেলে। কিন্তু বাকি টাকা এখনও পাননি গণনাকর্মীরা।
কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের সেচ দফতরের কর্মী শ্যামল বসু বলেন, “রোদে গরমে লোকের বাড়ি বাড়ি ঘুরে জনগণনার কাজ করলাম। কিন্তু এখনও অবধি দ্বিতীয় দফার কোনও টাকা পেলাম না। এর আগেও জনগণনা করেছি। কিন্তু টাকা পেতে এত হয়রানির স্বীকার হতে হয়নি কোনওদিন।” একই সুর জেলার একাধিক সুপারভাইজারের গলাতেও। তাঁদের বক্তব্য, “মাস দেড়েক ধরে গণনার কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করলাম। এত খাটাখাটনির পর টাকা পেলাম না।” এরই মধ্যে চলতি বছরের ১৯ অগস্ট থেকে জেলার ১৭টি ব্লকেই জোরকদমে শুরু হয়েছে ষষ্ঠ আর্থিক গণনা। সে কাজও প্রায় শেষের মুখে। আগের টাকা না পেলেও ছাপোষা সরকারি কর্মচারীরা এক প্রকার বাধ্য হয়েই আর্থিক গণনার কাজ করছেন।
এখনও অবধি গণনাকর্মীরা কেন টাকা পেলেন না? জবাবে নদিয়ার জেলা শাসক পিবি সালিম বলেন, “সাধারণত এত দেরি হওয়ার কথা নয়। তবে কিছুদিন আগেই আমরা ওই টাকা পেয়েছি। অতি সত্ত্বর ব্লকগুলিতে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
আশ্বাসই ভরসা গণনাকর্মীদের। |