|
|
|
|
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে নতুন নিয়ম, বিতর্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
বন্যা কবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির মতো ঝঞ্ঝাট কিছুতে নেই। কখনও অভিযোগ ওঠে পক্ষপাতিত্বের, কখনও অনিয়মের। এই টানাপোড়েনে অধিকাংশ সময়ই তালিকা তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ত্রাণ বিলি বহু দূর। এই প্রেক্ষিতে ত্রাণ বিলির কাজ দ্রুত ও মসৃন করতে সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নিয়মে রাজ্য সরকার কিছু রদবদল করেছে। যার ফলে তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে বিরোধী দলের মতামত গৌণ হয়ে পড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বন্যা-সহ যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করতে প্রথমেই সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করা প্রয়োজন। সেই জন্য প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে চার জনের সরকারি যৌথ কমিটি রয়েছে। ওই কমিটিতে এত দিন পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও বিডিও-র প্রতিনিধির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা অথবা একজন নির্দল সদস্য থাকতেন। সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন থেকে ওই কমিটিতে আগের চার জন সদস্য ছাড়াও থাকবেন স্থানীয় বিধায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্যের এক জন করে প্রতিনিধি। নতুন নির্দেশিকায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা অনুমোদনের নিয়মেও পরিবর্তন করা হয়েছে। পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা অনুমোদনের জন্য চার সদস্যের কমিটির সকলের সম্মতি নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। এখন থেকে কমিটির ছয় সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতি নিয়েই ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা অনুমোদন করা যাবে। অর্থাৎ কমিটির কোনও সদস্য তালিকায় স্বাক্ষর করতে সম্মত না হলেও সরকারি ত্রাণ বিলির কাজ বন্ধ হবে না।
গত ৩০ অক্টোবর রাজ্যের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতরের যুগ্ম সচিব অমিত চৌধুরী জেলাশাসক ও জেলা সভাধিপতির কাছে এই নির্দেশিকা পাঠানোর পরই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, এখন পঞ্চায়েত, প্রশাসনে তৃণমূলের আধিপত্য। এই অবস্থায় তালিকা তৈরিতে অনিয়ম হলে আপত্তি করতে পারতেন একমাত্র একমাত্র বিরোধী দলের প্রতিনিধি। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুমতি হলেই চলবে মানে ওই বিরোধী দলের প্রতিনিধির কোনও আপত্তি থাকলেও তা কার্যত ধোপে টিকবে না। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নির্ধারণে বিরোধী দলনেতার ভূমিকা আরও গৌণ হয়ে পড়বে বলেই আশঙ্কা ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের নিরঞ্জন সিহি বলেন, “এর ফলে তালিকা তৈরিতে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা আরও কঠিন হবে। সঠিক ভাবে তালিকা তৈরির ক্ষেত্রেও ঘাটতি থাকবে।” যদিও বিরোধীদের এই আশঙ্কা অমূলক বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। জেলা তৃণমূলের সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, “ত্রাণ বিলির কাজ মসৃণ করতে এই উদ্যোগ। আগেও কমিটিতে বিরোধীরা ছিলেন, এখনও থাকবেন। নতুন ব্যবস্থায় জেলা পরিষদের সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি থাকলেন কমিটিতে। তা ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের কথা বলা হলেও আমরা চেষ্টা করব ভোটাভুটি এড়িয়ে সর্বসম্মত ভাবেই তালিকা বানানোর।” |
|
|
|
|
|