বেঁচেও ‘মৃত’ অশীতিপর, বন্ধ বার্ধক্য ভাতা
ভোটার কার্ড আছে। চলতি বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটও দিয়েছেন। তবুও নাকি তিনি ‘মৃত’। কাঁথি-৩ ব্লকের দুরমুঠ গ্রাম পঞ্চায়েতের সমীক্ষায় ‘মৃত’ দেখানোয় বেতালিয়া গ্রামের বছর বিরাশির নটেন্দ্র কামিলা আর বাধর্ক্যভাতা পান না। ভাতা চালু করার জন্য এই বয়সে নটেন্দ্রবাবু প্রতিদিন পঞ্চায়েত অফিস থেকে ব্লক অফিসে দৌড়ঝাঁপ করছেন। প্রায় দেড় বছর কেটে গেল ছোটাছুটিতেই। ভাতা চালু হয়নি আর।
গত ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে বিপিএল তালিকাভুক্ত নটেন্দ্রবাবুর নাম ওঠে বার্ধক্যভাতা প্রাপকের তালিকায়। প্রথমে চারশো টাকা ও পরে সাতশো টাকা করে মিলছিল। কয়েক মাস অন্তর টাকা আসত। দুরমুঠ শাখা ডাকঘর থেকে টাকা তুলে আনতেন নটেন্দ্রবাবু। কষ্ট করে হলেও দিন চলে যাচ্ছিল। আচমকাই একদিন দুরমুঠ শাখা ডাকঘরে টাকা তুলতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, তাঁর নামে বাধর্ক্য ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঞ্চায়েতের সমীক্ষায় তাঁকে মৃত বলে দেখানো হয়েছে। তাই ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
নটেন্দ্র কামিলা।
এমনটা হল কী করে?
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরই ভাতা প্রাপকদের নামের তালিকা তৈরি হয় পঞ্চায়েত অফিসে। পরে সেই তালিকা ব্লক অফিস থেকে চলে যায় রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে। সেই তালিকা দেখেই উপভোক্তাদের টাকা পাঠায় রাজ্য ও কেন্দ্র। দুরমুঠ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৎকালীন প্রধান ও বতর্মান উপপ্রধান স্বপন মাইতি বলেন, “সে বার গ্রাম সমীক্ষক ভুলবশত নটেন্দ্রবাবুকে মৃত দেখানোয় এই সমস্যা হয়েছে। ভুল ধরার পর ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সংশোধন করে পুনরায় যাতে নটেন্দ্রবাবু বাধর্ক্যভাতা পান তার সুপারিশ বিডিও-র কাছে পাঠানো হয়েছিল। ব্লক থেকেও বিষয়টি জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিকের কাছে পাঠানো হয়। ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কাছে যায়
সেই সুপারিশ। কিন্তু ভাতা আজও চালু হয়নি।”
কাঁথি-৩ ব্লক অফিসেরও বক্তব্য মোটামুটি এক। অর্থাৎ রাজ্যস্তরে গিয়ে লাল ফিতের ফাঁসে আটকে নটেন্দ্রবাবুর ভাতার সুপারিশ। কবে ফাঁস খুলবে, জানা নেই কারও।
এক ছটাক বাস্তুভিটেতে বসে মাথা চাপড়াচ্ছেন অশীতিপর বৃদ্ধ। সোনার দোকানে কাজ করতেন আগে। এখন কাজ করার ক্ষমতা নেই, চাষ জমিও নেই। দুই ছেলে অন্যের দোকানে কাজ করে সামান্য যা রোজগার করেন, তাতে দুমূর্ল্যের এই বাজারে এত জনের সংসার চালানো কঠিন। বিশেষ করে অসুখ-বিসুখ হলে ওষুধ আর পথ্যি কিনতে টানাটানি শুরু হয়ে যায়। ভাতা পাওয়ার আশায় নটেন্দ্রবাবু এই বয়সেও প্রতিদিন পঞ্চায়েত অফিসে ধর্না দিয়ে যাচ্ছেন।
মাঝে-মধ্যে যান ডাকঘরেও। নিরাশ হয়ে ফিরতে হয় প্রতিবারই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.