|
|
|
|
৬৩টি কিচেন গার্ডেন’ |
মডেল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়ে পরিকাঠামোর উন্নয়ন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জেলার এক হাজার অঙ্গনওয়াড়িতে খোলা আকাশের নীচে ক্লাস চলে। বিদ্যুৎ রয়েছে সামান্য কয়েকটি কেন্দ্রে। ফলে গ্রীষ্মকালে শিশুদের কষ্ট হয়। কোথাও স্কুলে রান্নাঘর নেই, আবার কোথাও শৌচাগার নেই। জেলার বেশিরভাগ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রই এমন নানা সমস্যায় জর্জরিত। তাই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির বেহাল দশা ফেরাতে উদ্যোগী হচ্ছে জেলা প্রশাসন। এই সব কেন্দ্রগুলির উন্নয়নে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ঠিক হয়েছে, পিছিয়ে পড়া গ্রাম উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রথম ধাপে ৩৩টি মডেল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি করা হবে। এছাড়াও প্রথম ধাপে ৬৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কিচেন গার্ডেন তৈরি হবে। একশো দিনের প্রকল্প ও উদ্যান পালন দফতরের অর্থানুকুল্যে তা করা হবে। তারই সঙ্গে অন্যান্য প্রকল্পে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নেও জোর দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি বলেন, “বিভিন্ন প্রকল্পে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। দ্রুত গতিতে সেই কাজ করার চেষ্টা করছি।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৯০০৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির সমস্যা জানতে সমীক্ষাও করা হয়। সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, রান্নাঘর নেই এমন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ৬৩১৭টি, গুদাম নেই ৫২৯৪টি-তে। ৪২৩৩টি কেন্দ্রে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। শৌচাগার নেই ৬৩৮০টিতে। বিদ্যুৎ রয়েছে মাত্র ৩৫২টি কেন্দ্রে। বাকি কোনও কেন্দ্রেই বিদ্যুৎ নেই। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কোনও-টা চলে ক্লাব ঘরে আবার কোনও-টা ভাড়া বাড়িতে। এবার বাড়ি নেই এমন কেন্দ্রে বাড়ি তৈরিরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে জমির সমস্যা রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৫ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব কোনও জমি নেই। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় জমিরও খোঁজ করছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক্ষেত্রে জমির সমস্যা বেশি হওয়ার কারণ হল, সংশ্লিষ্ট এলাকাতেই জমি প্রয়োজন। কারণ, লোকালয় থেকে অনেক দুরে তো কেন্দ্র করা যায় না। লোকালয়ের মাঝে বা পাশেই করতে হয়। নাহলে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের যাতায়াতের সমস্যা হবে। কিন্তু সর্বত্র কেন্দ্র তৈরির মতো পর্যাপ্ত খাস জমি মিলছে না। তবে যে কয়েকটি কেন্দ্রের জমি রয়েছে সেখানে শৌচাগার করার মতো পর্যাপ্ত জমি রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। পরবর্তীকালে যাতে শৌচাগার করা যায় সে জন্যও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলার মাওবাদী উপদ্রুত ১১টি ব্লকে ৩টি করে ৩৩টি মডেল অঙ্গনওয়াড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। যে অঙ্গনওয়াড়িতে রান্নাঘর, গুদাম, পানীয় জল-সহ যাবতীয় সুবিধে থাকবে। এছাড়াও থাকবে দোলনা, স্লিপ প্রভৃতি। থাকবে সব্জির বাগানও। যেখান থেকে ইচ্ছে করলেই সব্জি নিয়ে রান্নাও করা যাবে। মূলত, পুষ্টিদায়ক সব্জি ও ফল গাছই লাগানো হবে বাগানে। এর বাইরেও আরও ৬৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এমনই কিচেন গার্ডেন তৈরি করা হবে। মাটি সমতলীকরণের কাজ করা হবে একশো দিনের প্রকল্পের টাকায়। উদ্যান পালন দফতর বিভিন্ন সব্জি ও ফলের বীজ দেবে। রান্নার সঙ্গে যুক্ত কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়করাই বাগান দেখভাল করবেন।
ফলে বাগানের সঠিক পরিচর্যাওকরা যাবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রগুলির সামনে থাকা জায়গাগুলি সাধারণ ভাবে আগাছায় ভরে থাকে। কিন্তু বাগান তৈরি করলে একদিকে যেমন সব্জি মিলবে তেমনি তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নও থাকবে। সব মিলিয়ে কেন্দ্রের পরিবেশ হবে সুন্দর। আর সুন্দর পরিবেশ হলে তা শিশু মনেও ভাল প্রভাব ফেলবে। এই লক্ষ্যেই মডেল অঙ্গনওয়াড়ি তৈরির পাশাপাশি সব্জির বাগান তৈরির উপর জোর দিচ্ছে প্রশাসন। শীঘ্রই এই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। |
|
|
|
|
|