|
|
|
|
খুনের অভিযোগ থেকে মুক্ত কাঞ্চির শঙ্করাচার্য |
সংবাদ সংস্থা • পুদুচেরি |
প্রমাণ না মেলায় খুনের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন কাঞ্চিপুরমের শঙ্করাচার্য জয়েন্দ্র সরস্বতী। ন’বছর আগে খুন হয়েছিলেন বরদারাজুপেরুমল মন্দিরের পরিচালক এ শঙ্কররামন। তাঁর স্ত্রী ও ছেলে অভিযোগ করেছিলেন শঙ্করাচার্য জয়েন্দ্র, তাঁর সহযোগী বিজয়েন্দ্র সরস্বতীই চক্রান্ত করে খুন করিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চালিয়ে কাঞ্চির পুলিশ ওই দুই সন্ন্যাসী-সহ মোট
২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছিল। কিন্তু স্থানীয় নিম্ন আদালত আজ ২৩ জনকেই বেকসুর ঘোষণা করেছে। কথিরাবন নামে এক অভিযুক্ত চলতি বছরের মার্চে খুন হয়েছেন চেন্নাইয়ে। রায় বেরোনোর পরে
আজ দৃশ্যতই স্বস্তির হাসি ফিরে পেয়েছেন শঙ্করাচার্য। আদালত বেকসুর ঘোষণার পরপরই তিনি তিরুপতি মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেন। যদিও সরকার পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁরা উচ্চতর আদালতে যাওয়ার জন্য আবেদন করবেন পুদুচেরি সরকারের কাছে।
পুদুচেরির বিশেষ আদালত আজ এই রায় দিতে গিয়ে কার্যত ভর্ৎসনাই করেছে পুলিশকে। বিচারক সি এস মুরুগনের বক্তব্য, খুনের উদ্দেশ্য প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ। উপরন্তু তদন্তে অকারণ নাক গলিয়েছেন কাঞ্চিপুরমের পুলিশ সুপার প্রেম কুমার। তাঁর হস্তক্ষেপের কারণেই ঠিকঠাক তদন্ত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে তদন্তকারীরা আইনের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়ে কাজ করেছেন। যত তথ্যপ্রমাণ তাঁরা জোগাড় করেছেন, তার অনেক কিছুই ঠিকঠাক কাজে লাগানো হয়নি মামলায়।
এই রায়কে অবশ্য ধাক্কা বলে মনে করছেন না সরকার পক্ষের কৌঁসুলি দেবদস। তিনি বলেছেন, “আমরা আমাদের কর্তব্য করেছি। অনেক বিষয় আদালতের সামনে এনেছি। যদিও সেগুলিকে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ বলে মনে করেনি আদালত।”
শঙ্কররামন খুন হন ২০০৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। পর দিন সকালে বরদারাজুপেরুমল মন্দির চত্বরে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপানো হয়েছিল। খুন হওয়ার দিনকয়েক আগেই জয়েন্দ্র ও বিজয়েন্দ্রর দুর্নীতি প্রকাশ্যে এনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শঙ্কররামন। এবং সে কারণেই তাঁকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে পরিবার। যদিও নিম্ন আদালত তার রায়ে জানিয়েছে, খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি নিহত শঙ্কররামনের স্ত্রী পদ্মা ও ছেলে আনন্দ শর্মা। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতেই দায়ের হয়েছিল মামলা।
ঘটনার মাস দুই পর ২০০৪-এর নভেম্বরে গ্রেফতার হন শঙ্করাচার্য জয়েন্দ্র ও বিজয়েন্দ্র। ২০০৫ এর জানুয়ারিতে জামিন পান তাঁরা। সে সময় প্রশ্ন উঠেছিল, তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী খোদ জয়ললিতা তাঁর শলাপরামর্শ মেনে চলেন বলেই কি শঙ্করাচার্য জামিন পেলেন। ২০০৫-এর অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তামিলনাড়ু আদালত থেকে পুদুচেরি আদালতে সরানো হয় মামলাটি। তখন থেকে এ পর্যন্ত ১৮৯ জন সাক্ষীর বক্তব্য শুনেছে আদালত। বিরূপ সাক্ষী ঘোষণা করেছে ৮৩ জনকে।
শঙ্করাচার্যের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা অবশ্য ঝুলে আছে এখনও। একটি মন্দিরের হিসেবরক্ষকের উপর হামলার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে ২০০২ সালে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ওই হিসেবরক্ষক মন্দিরের ৮০ কিলোগ্রাম সোনা উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরেই দুষ্কৃতী হামলার শিকার হন। |
|
|
|
|
|