সালটা ১৯৬৮। উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়া থেকে ব্রিটেনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন এক ছাত্রী। নাম সিতি আইশা। কিন্তু বিদেশে পৌঁছনোর কিছু দিন পরই পরিবারের সঙ্গে সিতির সব রকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার প্রায় ৩০ বছর পর হঠাৎই খবরের শিরোনামে উঠে আসে তিন মহিলার কথা। যাঁদের এত দিন বন্দি করে রেখেছিলেন লন্ডনের এক দম্পতি। সংবাদপত্রে সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই তিন মহিলার কথা জানতে পারেন মালয়েশিয়ার হাসনা আব্দুল ওয়াহাব নামে এক বৃদ্ধা। তাঁর দাবি, ওই তিন মহিলার মধ্যে মালয়েশিয়ার বৃদ্ধা হাসনার হারিয়ে যাওয়া বোন সিতি আইশাও আছেন। |
বোনের ছোটবেলার ছবি হাতে হাসনা আব্দুল ওয়াহাব। ছবি: এএফপি। |
লন্ডন পুলিশ গত ২৫ অক্টোবর এক দম্পতির বাড়ি থেকে উদ্ধার করে তিন মহিলাকে। তিন জনের মধ্যে এক জনের বয়স ৫৭। বাড়ি আয়ার্ল্যান্ডে। অন্য জন ব্রিটিশ নাগরিক। বয়স ৩০ এর কোঠায়। আর তৃতীয় জন মালয়েশিয়ার ৭০ বছরের এক বৃদ্ধা। হাসনার মতে, উদ্ধার হওয়া ওই তৃতীয় জনই তাঁর হারিয়ে যাওয়া বোন। বুধবার এ কথা জানিয়েছে কুয়ালা লামপুর পুলিশ। হাসনার সব কথা শোনার পর মালয়েশিয়ার পুলিশকর্তা খালিদ আবু বকর জানান, ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। হাসনাকে তাঁর বোন সিতির সঙ্গে দেখা করানোর জন্য সব রকম সাহায্য করা হবে।
অন্য দিকে, প্রায় ৩০ বছর পর বোনের খবর পেয়ে উচ্ছ্বসিত ৮৮ বছরের দিদি হাসনা সংবাদমাধ্যমকে বললেন, “আল্লাহকে ধন্যবাদ। তিনি আমার প্রার্থনা শুনেছেন। মনে হচ্ছে, খুব শীঘ্রই দেখা হবে বোনের সঙ্গে।” তিনি আরও জানালেন, ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন সিতি। মালয়েশিয়ার ভাল স্কুল থেকে পাশ করার পর স্কলারশিপ পেয়ে ব্রিটেন গিয়েছিলেন। তার পরই হঠাৎই এক দিন হারিয়ে যান সিতি। অনেক চেষ্টা করেও আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর। কী করে লন্ডনের ওই দম্পতির খপ্পরে পড়লেন তা-ও বুঝতে পারচ্ছেন না তাঁরা।
তবে সিতি আইশার সঙ্গে দেখা করার জন্য কামার মাহতুম নামে এক আত্মীয় আজই মালয়েশিয়া থেকে লন্ডনে উড়ে গিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কামার মাহতুম বললেন, “এত দিন পর সিতির সঙ্গে দেখা করতে পারব বলে আনন্দিত। কিন্তু ওঁর শরীরের অবস্থা ভাল নয়। সে কথা ভেবে খারাপ লাগছে।”
|