কর্মী নেই চার বছর, কাজ চালাচ্ছেন শিক্ষক
ক্লাস নিয়ে বেরিয়ে ঘণ্টা বাজাচ্ছেন শিক্ষক। স্কুল শুরুর আগে ক্লাসঘর পরিষ্কার করছেন শিক্ষক। ছুটির পরে তালাও লাগাচ্ছেন তিনি।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই সব কাজ করতে হচ্ছে শিক্ষককে। কারণ, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীই তো নেই বারাবনির পুঁচড়া মহাবীর দিগম্বর জৈন সরাক উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, বারবার এই পদে কর্মী চেয়ে আবেদন করা হয়েছে, কিন্তু এখনও সাড়া মেলেনি। কবে কর্মী মিলবে, কবেই বা শিক্ষক অসিতবরণ মাজিকে এ সব কাজ করতে হবে নাসদুত্তর নেই কারও কাছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ উপাধ্যায় জানান, চতুর্থ শ্রেণির যে কর্মী ছিলেন, তিনি অবসর নিয়েছেন ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে। শিক্ষা দফতরের নানা স্তরে এই কর্মী চেয়ে আবেদন জানালেও এখনও পর্যন্ত কোনও ফল হয়নি, জানান তিনি। চতুর্থ শ্রেণির কর্মী অবসর নেওয়ার পরে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সমাধানে এগিয়ে আসেন সংস্কৃতের শিক্ষক অসিতবরণ মাজি। ক্লাসঘর পরিষ্কার, ঘণ্টা বাজানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি।
ক্লাস শেষে ঘণ্টা বাজাচ্ছেন সংস্কৃতের শিক্ষক অসিতবরণ মাজি। ছবি: শৈলেন সরকার।
অসিতবাবু জানান, সরকারের কাছে বারবার আবেদন করেও কর্মী মেলেনি। অথচ, স্কুলও তো বন্ধ রাখা যায় না। সময় মতো স্কুলের গেটের তালা খুলতে হবে। শ্রেণিকক্ষের তালা খুলে ঘর পরিষ্কার করতে হবে। আরও কত কাজ। এ দিকে স্কুলের ভাঁড়াড়ে এত টাকা নেই যে এ সব কাজ করার জন্য মাস মাইনে দিয়ে লোক রাখা হবে। সাত-পাঁচ ভেবে স্কুলের সকলে সমস্যায় পড়ে যাওয়ায় তিনি এগিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, পাশেই একটি গ্রামে থাকেন। তাই স্কুল সমস্যায় পড়লে তিনি ভেবে দেখেন, এ সব কাজ করতে তাঁর অসুবিধা হবে না। আবার স্কুলের পড়াশোনাও বিঘ্নিত হবে না। অসিতবরণবাবু বলেন, “কাউকে এক জনকে তো দায়িত্ব নিতেই হত। নিজের কাজের পাশাপাশি আমার প্রতিষ্ঠানের কাজই করছি।” প্রধান শিক্ষক অভিজিৎবাবু বলেন, “শিক্ষা দফতরের সর্বস্তরে লোক চেয়ে আবেদন করেও না পেয়ে অথৈ জলে পড়েছিলাম। অসিতবরণবাবু এগিয়ে এসে সমস্যা মিটিয়েছেন।”
অসিতবরণবাবু জানান, এ সব কাজ করার জন্য তাঁকে সবার আগে স্কুলে আসতে হয়। স্কুল ছুটির শেষে শ্রেণিকক্ষের তালা লাগিয়ে গোছগাছ করে আবার তালা দিয়ে বাড়ি ফেরেন। এর সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২৪টি ক্লাস নিতে হয় তাঁকে। তিনি জানান, ২০১৫ সালে অবসর নেবেন। তার পরেও কর্মী না এলে কী হবে, তা ভেবে চিন্তিত স্কুল কর্তৃপক্ষ। অসিতবরণবাবু যদিও জানাচ্ছেন, তখনও কর্মী না এলে তিনি এই কাজ চালিয়ে যাবেন।
কেন এত দিনেও কর্মী নিয়োগ হল না ওই স্কুলে, সে প্রশ্নে জেলার সহকারী স্কুল পরিদর্শক অজিত হাজরা জানান, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিযুক্ত হন স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। ওই স্কুলে যাতে শীঘ্র কর্মী আসেন, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস তাঁর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.