পড়ুয়াদের স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মারল বাস। বুধবার সকালে দুর্গাপুরের ডিপিএল কলোনির এই ঘটনায় চোট পায় চার পড়ুয়া। তাদের ডিপিএল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। যে স্কুলের পড়ুয়া নিয়ে বাসটি যাচ্ছিল, সেই স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, চালকদের আরও সতর্ক হয়ে বাস চালানোর পরামর্শ দেওয়া হবে। এ দিনের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের চালক ও খালাসি অবশ্য ঘটনার পরেই পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাসটিতে বিধাননগরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বিভিন্ন ক্লাসের প্রায় ২০ জন পড়ুয়া ছিল। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শেখ আব্দুল সাত্তার জানান, তিনি তখন ‘ডিউটি’ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। কলোনির এ-জোন থেকে বি-জোনে যাওয়ার সময়ে ডিপিএল আইএনটিইউসি কার্যালয়ের সামনে হঠাৎ বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। বাঁ দিকে রাস্তার পাশে একটি জামগাছে ধাক্কা মেরে দাঁড়িয়ে যায় সেটি। আচমকা এমন ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ুয়ারা চিৎকার-চেঁচামেচি জুড়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। আব্দুল সাত্তার জানান, পড়ুয়াদের সঙ্গে থাকা কার্ডে লেখা নম্বর দেখে অভিভাবকদের ফোন করেন তাঁরা। অভিভাবকেরা এসে তাদের নিয়ে যান। |
দুর্ঘটনার পরেই বাস ফেলে চম্পট দেয় চালক ও খালাসি। অভিভাবকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বাসটি থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ‘ব্রেক ফেল’ হওয়ার জন্যই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তদন্তের জন্য বাসের মালিককে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। খোঁজ চলছে চালক এবং খালাসিরও।
এ দিন দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসে থাকা অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া নেহা সরকার, তৃতীয় শ্রেণির সিমিকা বৈদ্যেরা জানায়, তারা সহপাঠীদের সঙ্গে গল্প করছিল বাসে বসে। হঠাৎ বাসটি গাছে ধাক্কা মারায় তারা সকলেই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তাদের কথায়, “ভয়ে চিৎকার করে উঠেছিলাম। চালক আর খালাসি পালিয়ে গেল। বড়রা আসার পরে অবশ্য ভয় কেটে যায়।” দুর্ঘটনায় চোট পাওয়া অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়ার অভিভাবক শঙ্করপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “কপার ভাল বেশি জোরে ধাক্কা মারেনি বাসটি। তা না হলে আরও বড় বিপদ ঘটতে পারত।”
ওই ইংরেজি মাধ্যম স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার খবর পেয়েই স্কুলের তিন শিক্ষককে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। অভিভাবকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে স্কুলের সম্মতিক্রমে বাস সংস্থার সঙ্গে পড়ুয়াদের আনা-নেওয়ার চুক্তি হয়ে থাকে। সরাসরি স্কুলের তেমন কিছু করণীয় নেই। কিন্তু এ দিন দুর্ঘটনার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ চিন্তিত। তাঁরা জানান, যে সংস্থা বাসগুলি দেয় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চালকদের আরও সতর্ক হয়ে বাস চালানোর পরামর্শ দেওয়া হবে। অধ্যক্ষা মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খবর পেয়েই স্কুলের শিক্ষকদের পাঠানো হয়। আমি নিজেও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি।” |