আলু রফতানি বন্ধের বিজ্ঞপ্তি অবৈধ: কোর্ট
দালতে ফের ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার! এ বার আলু নিয়ে।
অন্য রাজ্যে আলু পাঠানো যাবে না বলে ২৩ অক্টোবর রাজ্য সরকার যে-বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, আপাতগ্রাহ্য ভাবে সেটি অবৈধ মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নির্দেশ দেন, ওই বিজ্ঞপ্তি মেনে সরকার এখন কোনও রকম ব্যবস্থা নিতে পারবে না।
খোলা বাজারে জ্যোতি আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় তার দর (প্রতি কিলোগ্রাম ১৩ টাকা) বেঁধে দিয়ে মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম দিতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। একই উদ্দেশ্যে সরকারের নির্দেশ ছিল, পশ্চিমবঙ্গের আলু অন্য কোনও রাজ্যে রফতানি করা যাবে না। সরকারের এই নির্দেশের তীব্র বিরোধিতা করেন আলু ব্যবসায়ীরা। মেদিনীপুরের আলু ব্যবসায়ী মধুসূদন সেন এবং অন্য কয়েক জন হাইকোর্টে মামলা করে বলেন, রাজ্য সরকার তাঁদের ব্যবসা করার অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। রাজ্য বলেছে, সাত দিন আগে সরকারের অনুমতি নিয়ে তবেই অন্য রাজ্যে আলু রফতানি করা যাবে। কিন্তু এ ভাবে ব্যবসা চলতে পারে না। আবেদনকারীদের বক্তব্য, ব্যবসায়ী কী দরে আলু বিক্রি করবেন, রাজ্য সরকার তা ঠিক করে দিতে পারে না। এক জন ব্যবসায়ী যে-দরে আলু কিনবেন, তার উপরে কিছু লাভ রেখেই তিনি তা বিক্রি করবেন।
আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ বলেন, সংবিধানের ৩০১ ধারা অনুযায়ী কোনও রাজ্য সরকার এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারিই করতে পারে না। এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হলে রাষ্ট্রপতির অনুমতি নিতে হয়। সাত দিন আগে অনুমতি নিয়ে আলু রফতানি করার কথা বলাটাও অবৈধ। কারণ, এক জন ব্যবসায়ী কবে, কাকে পণ্য রফতানি করবেন, তা অনেক আগেই ঠিক করা থাকে। সেই অনুযায়ী আলু পাঠাতে না-পারলে ব্যবসায়ীর আর্থিক ক্ষতি হবে। আবেদনকারীরা বলছেন, সরকারের এই নির্দেশ মানতে হলে তাঁদের আত্মহত্যা করা ছাড়া পথ নেই।
সরকার পক্ষের হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের নির্দেশ সমর্থন করে যুক্তি দেন, সংবিধান মেনেই ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি বলেন, মামলার প্রাথমিক তথ্য দেখে তাঁর মনে হচ্ছে, বিজ্ঞপ্তিটি সংবিধানসম্মত নয়। ২৮ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে। তার পরে, ২ ডিসেম্বর আবেদনকারীরা হলফনামা দিয়েই তার জবাব দেবেন। মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে ৩ ডিসেম্বর।
আদালতের নির্দেশের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “নির্দেশের প্রতিলিপি হাতে না-পাওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” তবে সরকারের এক মুখপাত্র জানান, আলুর দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় আস্তে আস্তে রফতানির দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহে সরকারের খাদ্য সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে পড়শি রাজ্য ওড়িশায় ফের আলু পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট এ দিন তাদের নির্দেশ দেওয়ার পরে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সভাপতি লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন করে আসছিলাম। সরকার সেই আবেদন বিবেচনা করছে। ইতিমধ্যে ওড়িশায় আলু পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই। তাতে ব্যবসায়ী এবং চাষি দু’পক্ষই উপকৃত হবেন।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.