হামলার পর হালিশহরে ইস্তফা ছয় পুরপিতার
বাইকবাহিনীর হামলার পরের দিনই ইস্তফা দিলেন হালিশহর পুরসভার চার সিপিএম কাউন্সিলর। তাঁদের সঙ্গেই দলের আরও দুই কাউন্সিলর সোমবার ব্যারাকপুর মহকুমাশাসকের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন। তবে আক্রান্ত হয়েও আরও চার জন ইস্তফা দেননি। বামফ্রন্টের পুরবোর্ড ফেলে দিতে তৃণমূল অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে।
রবিবার সন্ধ্যায় মুখে কাপড় বাঁধা তৃণমূলের বাইক-বাহিনীই উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরে ওই হামলা চালায় বলে বামেদের অভিযোগ। যদিও ওই রাতে পুলিশের কাছে যে সাধারণ ডায়েরি করা হয়, তাতে তৃণমূলের নাম করা হয়নি। তবে এ দিন ফের তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের কথা উল্লেখ করে একটি ডায়েরি করা হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট করে লিখিত অভিযোগ (এফআইআর) দায়ের করা হয়নি।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ প্রথমে তিন জন কাউন্সিলর মহকুমাশাসকের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন। বেলা ২টো নাগাদ ইস্তফা দেন আরও তিন জন। সকলেই শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। যে প্রসঙ্গে সন্ধ্যায় বারাসতে জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম দেব দাবি করেন, “মহকুমাশাসকও বুঝতে পারছেন, আমাদের ছ’জন কাউন্সিলরের এক সঙ্গে অসুস্থ হয়ে পদত্যাগ করাটা অবাস্তব।”
গৌতমবাবুর অভিযোগ, “রবিবার রাতে হামলার সময়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ওঁদের ভয় দেখায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা না দিলে ভাঙচুর-লুঠপাট চলবে। গায়ের জোরে রাজনীতি করছে ওরা।’’ হালিশহরের কাছেই বীজপুরে বাড়ি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের। তিনি বিষয়টি প্রায় উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আমাদের কাছে এমন অভিযোগ আসেনি। যাঁরা হামলার অভিযোগ করছেন, তাঁরা কি পুলিশের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন? আমাদের কাছে খবর, পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।”
রবিবার সন্ধ্যায় হালিশহরের তেঁতুলতলা, প্রসাদনগর, বারুইপাড়া, চক্রবর্তীপাড়ায় যে আট সিপিএম কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল, তার মধ্যে রঞ্জিত নাথ, হরিদাস চক্রবর্তী, লক্ষ্মী রাহা এবং রামচন্দ্র প্রসাদ নামে চার জন এ দিন ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেই ইস্তফা দেন কল্পনা ঘোষ ও মৃণাল মজুমদার নামে আরও দু’জন। স্থানীয় সিপিএম নেতা শম্ভু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সিপিএম করাটা এখানে অপরাধের মতো গণ্য হচ্ছে। আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। আইনের রক্ষকেরাও একতরফা আচরণ করেন। তাই বাধ্য হয়েই মুখ বুজে ইস্তফা দিয়েছেন ওই কাউন্সিলরেরা।’’
সন্ধ্যায় বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক, মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায় অবশ্য বলেন, ‘‘ওঁরা কী কারণে ইস্তফা দিয়েছেন তা ওঁদের দল বুঝবে। কিন্তু সিপিএম কাউন্সিলরেরা ইস্তফা দেওয়ায় আমরা অনাস্থা এনেছি। খুব শিগগিরই নতুন পুরবোর্ড হবে, যারা সত্যি মানুষের জন্য কাজ করবে।’’
হামলা সত্ত্বেও শম্ভুনাথ ঘোষ, অঞ্জলি হাসলা, নারায়ণ দাস এবং ভাগীরথী প্রসাদ নামে চার জন অবশ্য ইস্তফা দেননি। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শম্ভুবাবুর বছর বারোর মেয়েকে দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ। ওই রাতে রঞ্জিত নাথ শুধু ‘দুষ্কৃতী’ লিখে ডায়েরি করার পরে এ দিন শম্ভুবাবুই ফের তৃণমূলের নাম দিয়ে ডায়েরি করেন। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান দেবাশিস বেজ বলেন, “ঘটনার তদন্ত করছি। তবে কেউ ধরা পড়েনি।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.