ভোটের মুখে পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলরদের দল বদলে তৃণমূলে যোগ দেওয়াটা ঠিক হল? এই ভোটে জনতা কাদের পক্ষে রায় দেবেন? উপযুক্ত বিকল্প না পেয়ে পুরনোদের উপরেই ভরসা রাখতে বাধ্য হবেন? নাকি যে যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানে বিকল্প প্রার্থীকে
খুঁজে নিয়েছেন?
দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল। তবুও যেন চায়ের দোকানের সামনে থেকে ভিড়টা কিছুতেই সরতে চাইছিল না। সপ্তমবারের চায়ের কাপটা ঠোঁট থেকে সরিয়ে শহরের এক নামী স্কুলের শিক্ষক বলেন,“না, এ বারের ভোটটা ঠিক যেন জমল না। ‘সেমসাইড’ না হলে গোল খাওয়ার সম্ভাবনা তেমন দেখছি না।” দিনভর এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেন এলাকার বাসিন্দারা। |
আজ পুরভোটের ফল ঘোষণা। তারই প্রস্তুতিতে গণনা কক্ষ। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য। |
দু’দিন আগে ভোট মিটেছে। আজ, সোমবার ফলপ্রকাশ। রবিবাসরীয় শহর জুড়ে ভোটের রেশ। শারদ উৎসবের রেশ যেতে না যেতেই জগদ্ধাত্রী পুজোয় মেতেছিল কৃষ্ণনগর। তারপরই হুড়মুড়িয়ে চলে এল পুরভোট। ফলে গোটা নভেম্বর মাস জুড়েই উৎসবের মেজাজে ছিল এই শহর। তার আগে রবিবার দিনভর কাটল ভোট নিয়ে উত্তেজনায়। মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে ভিড়, ফল নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে তর্ক, ভোটের ফল বিচার আর তারই মাঝে চায়ের কাপে চুমুক। কৃষ্ণনগরের প্রাণ কেন্দ্র পোষ্ট অফিস মোড়ে এক চায়ে দোকানের মালিক অরুপ দাস বলেন, “নানা উৎসবের কারণে অন্য রবিবারের থেকে এই রবিবারগুলো বেশ অন্য রকমই কাটল।” মাথার উপরে এখনও ঝুলছে বিভিন্ন দলের পতাকা, একই রকম ভাবে টাঙানো বিভিন্ন দলের নেতা নেত্রীর ফ্লেক্স। তারই মধ্যে ‘চায়ের কাপে তুফান’ তুলে কৃষ্ণনাগরিকদের ভোটের ফল নিয়ে আলোচনা বলে দেয় এই শহর এখনও ভোট উৎসবে মজে।
অবশ্য রাজনৈতিক নেতারা আশার কথাই শুনিয়েছেন বাসিন্দাদের। জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “বিপুল ভাবে মানুষ আমাদের পাশে থাকবেন। আমরাই পুর বোর্ড গঠন করব।” আবার সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “এত সন্ত্রাসের পরও আমার অন্য বারের তুলনায় ভাল ফল করব। আসন ও ভোট দুইই আমাদের বাড়বে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহ বলেন, “যে ভাবে বহিরাগতদের এনে শহর জুড়ে সন্ত্রাস করেছে তৃণমূল বা আগে কোনও দিন দেখেনি এই শহরের মানুষ। কৃষ্ণনগরের মানুষ আগে এই সব বরদাস্ত করে নি। এবারও করবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস। মানুষ আমাদের পাশেই থাকবে।”
আর এই সব রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মধ্যে শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৭ নম্বর বুথে রবিবার চলল পুনর্নির্বাচন। উৎসবের রেশ যেন শেষ হয়েও শেষ হতে চাইছে না। |