নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
পাত্রপক্ষের দেখতে আসার কথা ছিল রবিবার। খুবই দরিদ্র পরিবারে সে জন্য সামান্য কিছু আয়োজনও করা হয়েছিল। কিন্তু রাত থেকেই বাড়ির সেই মেয়ে নিখোঁজ। সকালে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার খোসালপুরের ওই তরুণীর দেহ মিলল তাঁর বাড়ির দেড়শো মিটার দূরে একটি খেত থেকে। এ দিনই ওই তরুণীর দেহর ময়নাতদন্ত হয়েছে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। তার পরে পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই খুনের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তিই জড়িত বলে পুলিশের সন্দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, খুব সরু দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে।
ওই তরুণী পেশায় বিড়ি শ্রমিক। রাতে তাঁর বোনের সঙ্গে এক ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁর বোন জানিয়েছে, গভীর রাতে তার দিদির মোবাইলে ফোন আসে। সে বলে, “দিদি ফোন পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আমি আর বিছানা থেকে উঠিনি।” রাতভর বাড়ি না ফেরায় রবিবার সকালে খোঁজ শুরু হয়। তখনই একটি আখ খেত থেকে দেহ উদ্ধার হয় সেই যুবতীর। এরপরই ফরাক্কা থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ওই তরুণীর বাবা দিনমজুর। তাঁর তিন মেয়ে দুই ছেলে। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন গ্রামেই। মেজো মেয়েকে পাত্রপক্ষের দেখতে আসার কথা ছিল এই দিন। ওই তরুণীর মা বলেন, “অনেক দিন ধরেই মেয়ের বিয়ের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আমরা গরিব বলে পারছিলাম না। এই দিন তিলডাঙা থেকে পাত্রপক্ষের আসার কথা ছিল। তাঁদের সঙ্গে বিয়ের কথাবার্তা অনেক দূরই এগিয়েছিল। খুব আশায় ছিলাম। কিন্তু সুখবরের বদলে পেলাম এমন দুঃসংবাদ।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই যুবকই রাতে ওই তরুণীকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। তবে সেই যুবতীর বাড়ির লোক এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি। জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই তরুণীর পরিচিত কেউই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই তরুণীর মোবাইল ফোনের কললিস্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশের অনুমান, খুব ঘনিষ্ঠ কেউই ফোন করেছিল ওই তরুণীকে। না হলে, শীতের রাতে ওই তরুণী একা বাড়ির বাইরে যেতেন না। পুলিশ সুপার বলেন, “আমাদের সন্দেহ, অন্য কোথাও ধর্ষণ ও খুন করে ওই তরুণীর দেহটি বাড়ির কাছাকাছি ফেলে রেখে যাওয়া যায়।” |