টানা পাঁচ বছর ধরে আইনি লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত রায় গেল তাঁর পক্ষেই। খবরটা শোনার পর নবদ্বীপের বাবলারির মাধবী সাহার প্রতিক্রিয়া, “এ জয় শুধু আমার নয়, এ জয় সত্যের।” কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্ত ও বিচারপতি তরুণ কুমার দাসকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ গত ১৯ সেপ্টেম্বর নবদ্বীপ ব্লকের বাবলারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গ্রাম সেবিকা পদে মাধবী সাহাকে নিয়োগ করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে।
ঠিক কী ঘটেছিল বাবলারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গ্রাম সেবিকা পদের নিয়োগ নিয়ে? মাধবীদেবীর আইনজীবী স্বপনকুমার মজুমদার জানান, ২০০৮ সালের অগষ্ট মাসে জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে, রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর বিভিন্ন পঞ্চায়েতের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে একজন করে গ্রামসেবিকা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বাবলারি পঞ্চায়েতে মোট ২২ জন আবেদন করেন। ওই নিয়োগের প্রধান তিনটি শর্ত ছিল- এক, প্রার্থীকে বিবাহিতা হতে হবে। দুই, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তিন, ভোটার ও রেশন কার্ডে স্থায়ী ঠিকানা হিসাবে ওই পঞ্চায়েতের নাম থাকতে হবে। মাধবীদেবী বলেন, “আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর ২২ জনের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল তাতে দ্বিতীয় স্থানে নাম ছিল আমার। আর এক নম্বরে যাঁর নাম ছিল তিনি তখন এই পঞ্চায়েতের বাসিন্দাই ছিলেন না। ওই ঘটনার পাঁচ বছর আগেই বর্ধমানের কেতুগ্রামে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু সিপিএমের প্রভাবশালী নেতা তথা তৎকালীন নদিয়া জেলা পরিষদের পূর্ত-কর্মাধ্যক্ষের মেয়ে হওয়ার সুবাদে তাঁর নাম প্রথমে ছিল। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। তারপরেই আদালতের দ্বারস্থ হই।” এই মামলায় হাইকোর্ট ২০১১ তে মাধবীদেবীর পক্ষে রায় দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন অন্য পক্ষ। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চেও সেই আগের রায়ই বহাল থাকল। শুক্রবার নবদ্বীপের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা নিজে মাধবী সাহার হাতে র স্বাস্থ্য দফতরের নিয়োগপত্র তুলে দেন। |