টানটান উত্তেজনা, তবে ভোট শান্তিতে
প্রায় আধ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে ভোট দিতে গিয়ে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেবরাজ গঙ্গোপাধ্যায় ও তার দাদা মহারাজ গঙ্গোপাধ্যায় জানতে পারলেন, তাঁদের ভোট পড়ে গিয়েছে। তাদের ভোট ছিল ঘূর্ণির স্বর্ণময়ী বালিকা বিদ্যামন্দিরে ১৭ নম্বর বুথে। বাধ্য হয়ে ভোট না দিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন।
একই অভিজ্ঞতা হল ওই একই বুথের ভোটার শেফালি সিংহের। তিনি অবশ্য ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নন। প্রিসাইডিং অফিসারকে লিখিত ভাবে জানিয়ে টেন্ডার ব্যালটে ভোট দিলেন। বিরোধীদের অভিযোগ, এর বাইরেও বহু ভোটার টেন্ডার ব্যালটে ভোট না দিয়েই ফিরে গিয়েছেন। ভোটার কার্ড ছাড়াই বহিরাগতরা এসে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগে বেশ কিছু সময় এই বুথে ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক মৈত্রেয়ী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রিসাইডিং অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৭ নম্বর বুথে ভোটার কার্ড ছাড়াই কিছু ভোট পড়েছে। তাই ওখানে কিছু সময় ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”

ভোট চিত্র। কৃষ্ণনগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে গল্পে মেতেছেন চার দলের চার প্রার্থী।
সিপিএম ও কংগ্রেসের অভিযোগ, ভোট গ্রহণ চলাকালীন তৃণমূলের একদল বহিরাগত বুথে ঢুকে ছাপ্পা ভোট দিতে থাকে। প্রার্থীরা প্রতিবাদ করলে তাদের মারধর করা হয়। এর আগেই অবশ্য ২১ নম্বর বুথে বামফ্রন্ট সমর্থিত নাগরিক কমিটির প্রার্থীকে মারধর করার পাশাপাশি তাদের শিবির ভাঙচুর করা হয় বলে বামফ্রন্টের অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। অভিযোগ, বেশ কিছু বহিরাগত ২১ নম্বর ওয়ার্ডের ১২৪ নম্বর বুথ জ্যাম করার চেষ্টা করে। এই দু’টি ঘটনা ছাড়া এবার কৃষ্ণনগর পুরসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে। সিপিএম-এর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এস এম সাদি বলেন, “৩ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। বিষয়টি মহকুমাশাসককে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।”
একই অভিযোগ করেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহও। তিনি বলেন, “আমরা আগেই প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম যে বাইরে থেকে সমাজবিরোধী নিয়ে এসে সন্ত্রাস চালাবে তৃণমূল। আর সেটাই ঘটল। কৃষ্ণনগরের মানুষ এর আগে এই জিনিস বরদাস্ত করেনি। এবার তারা এর যোগ্য জবাব দেবে।”

কৃষ্ণনগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে পুলিশি নজরদারি।
তৃণমূল অবশ্য এই সব অভিযোগ মেনে নিতে রাজি নয়। জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “মানুষ যে ভাবে আমাদের সমর্থন করেছে, তাতে বিপুল ভাবে আমাদের জয় হবে। আর সেটা বুঝতে পেরে মুখ বাঁচাতে এই ধরনের মন গড়া অভিযোগ আনছে বিরোধীরা।” এ দিন অবশ্য ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী অসীম সাহা ও সিপিএম প্রার্থী শ্যামল রায় দু’জনেই পুলিশের সামনে বহিরাগতরা তাদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ বলেন,“এমন কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়েছে।”
শহর জুড়ে যখন টানটান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রত্যক্ষ করেছে শহরবাসী, তখন তারই মাঝে শক্তিনগর বালিকা বিদ্যালয়ের মাঠে এক অন্য মুহুর্তের স্বাক্ষী হয়ে থাকল এলাকার ভোটাররা। প্রায় সারাটা দিনই বুথের কাছেই স্কুলের মাঠে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের চার প্রার্থী মাঝে মধ্যেই নিজেদের মধ্যে কাটিয়ে দিলেন গল্প করে।

ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.