শান্তিতে মিটেছে বহরমপুরের পুরভোটপর্ব। শুক্রবার সকাল সাতটা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত পুরসভার ২৮টি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ চলেছে। ভোট পড়েছে ৭৯.৪৮%। গত পুরভোটে অবশ্য প্রায় ৮৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ফলে গত বারের তুলনায় এ বার পাঁচ শতাংশের বেশি ভোট কম পড়েছে। ভোট চলাকালীন বহরমপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভোটগ্রহণ কেন্দ্র এলাকা থেকে ৩৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, “পুরসভায় প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”
তবে বহরমপুর পুরভোটে ফের ‘অধীর ম্যাজিক’ কাজ করবে কি না বা বহরমপুর পুরভোটে তৃণমূল ‘ফুল ফোটাতে’ পারবে কি না, তা আগামী ২৫ নভেম্বর জানা যাবে। কিন্তু তার আগে বহরমপুর নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ ভোট উপহার দিয়ে সকলকে টেক্কা দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর। পুলিশ সুপার বলেন, “গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টার অভিযোগে ৩৪ জনকে আটক করা হয়েছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “পুলিশের জন্যই শান্তিতে ভোট হয়েছে।” একই কথা বলেছে কংগ্রেস ও তৃণমূলও।
এদিন পুরভোটকে কেন্দ্র করে বহরমপুর উৎসব নগরীতে পরিণত হয়। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পুরভোটে অংশ নেন। বিশেষ করে মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ভোট উপলক্ষে বহরমপুরের সমস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল সমস্ত স্কুল-কলেজও। পরিবহণ শিল্পের উপরেও ভোটের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এদিন পথে বাস নামেনি বললেই চলে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষও এদিন বহরমপুরে অনুপস্থিত ছিলেন।
এদিন সকাল থেকেই জেলা কংগ্রেস কার্যালয়, ভাগীরথী পাড় লাগোয়া তৃণমূল কার্যালয় সরগরম ছিল। পঞ্চায়েতের ভোটার হওয়ায় আবু তাহের, অপূর্ব সরকার, শাওনী সিংহ রায়, রবিউল আলম চৌধুরী, ইমানি বিশ্বাস, আখরুজ্জামানের মতো কংগ্রেসের বিধায়করা দলীয় কার্যালয়ে নিজেদের বন্দি রাখেন। ভোটকে কেন্দ্র করে উৎসাহ ছিল সিপিএম জেলা কার্যালয়েও।
তবে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এদিনও বলেন, “এ বারও বিরোধী শূন্য পুরবোর্ড গঠন করবে কংগ্রেস। তবে এবার ওই পুরবোর্ডের বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব আমি নিজে। কেননা, গত পুরবোর্ডের ভুল-ত্রুটি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ-অভিযোগ রয়েছে। চেষ্টা করেছি তা মেটানোর। আশা করি মানুষ বিশ্বাস করে কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন।”
তৃণমূলের হুমায়ুন কবীর এবং সিপিএমের মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য অবশ্য ‘বিরোধী শূন্য পুরবোর্ড হবে না’ বলে এক সুরে কথা বলেন। হুমায়ুনবাবুর দাবি, “তৃণমূল ৩ থেকে ৫টি আসনে জয়ী হবে।” মৃগাঙ্কবাবুরও দাবি, “বিরোধী শূন্য পুরবোর্ড এ বার হচ্ছে না। ৩ থেকে ৫টি আসনে বামফ্রন্ট লড়াই দিয়েছে। কোনও আসনে জয় হতে পারে আমাদের।” |