পটনা বিস্ফোরণের পরই স্পষ্ট হয়েছে, সন্ত্রাসবাদীদের নিশানায় রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার নয়া তথ্য জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, ভিড়ের মধ্যে কোনও মহিলা জঙ্গি হামলা চালাতে পারে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর উপরে। এই হুঁশিয়ারি পাওয়ার পরে রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছে মোদীর নিরাপত্তারক্ষীদের।
গুজরাত সরকারের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, মহিলাদের মধ্যে মোদী এমনিতেই জনপ্রিয়। যে কোনও সভায় মঞ্চের সামনে নিরাপত্তা বেষ্টনী ‘ডি’-এর পরেই থাকে মহিলাদের বসার জায়গা। ফলে সেই সুবাদে মহিলারা মঞ্চের খুব কাছাকাছি থাকেন। শুধু সভাস্থল নয়, অন্য কোনও অনুষ্ঠানেও মোদীর চারপাশে যে ভিড় তৈরি হয়, তাতেও মহিলাদের সংখ্যা কম নয়।
এই তথ্য পাওয়ার পরেই গুজরাত পুলিশ ও মোদীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসাররা এক জরুরি বৈঠক করেন। তাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই হামলা ঠেকাতে সাদা পোশাকে মহিলা পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে। সে জন্য আরও মহিলা পুলিশ নিয়োগ করা হচ্ছে। গুজরাত পুলিশ সূত্রে খবর, এই মহিলা পুলিশরা ভিড়ে মিশে মহিলাদের উপরে নজরদারি করবেন।
পটনায় বিস্ফোরণের পরেই মোদীর নিরাপত্তা আটোসাঁটো করা হয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রীর মতোই তাঁর জন্য রয়েছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা। যেখানেই যান, তাঁকে ঘিরে থাকেন প্রায় ৪৫ জন এনএসজি কম্যান্ডো। তার পর থাকে গুজরাত পুলিশের বেষ্টনী। তারও বাইরে থাকে যে রাজ্যে মোদী গিয়েছেন সেই রাজ্যের পুলিশ। এখন তাতে যোগ হল নতুন একটি স্তর। সেটি শুধুই মহিলা বাহিনী।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অফিসাররা জানিয়েছেন, মহিলাদের দিয়ে হামলার ছক কষা নতুন কৌশল নয়। মহিলা জঙ্গির হাতেই নিহত হয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। আশির দশক থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গি কার্যকলাপে মহিলাদের ব্যবহার করার চল বাড়তে শুরু করেছে। ইরাক, চেচনিয়া, ইজরায়েল, প্যালেস্তাইন, মিশর, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা বিভিন্ন দেশেই মহিলা সন্ত্রাসবাদ বেড়েছে। কেনিয়ার ওয়েস্টগেট মলে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলাতেও এক মহিলার জড়িত থাকার কথা শোনা গিয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, পটনায় বিস্ফোরণের পরে এটা স্পষ্ট যে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের খতম তালিকায় রয়েছেন মোদী। এমনকী গোয়েন্দাদের কাছে খবর রয়েছে, বব্বর খালসার মতো জঙ্গি সংগঠনও হামলার ছক কষছে। তাতে মদত দিচ্ছে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। এই পরিস্থিতিতে মোদীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসাররা কোনও ঝুঁকি নিতে চান না।
সম্প্রতি মোদীকে প্রধানমন্ত্রীর মনমোহন সিংহের পর্যায়ের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল বিজেপি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে জানিয়ে দেন, মোদী প্রধানমন্ত্রীর পর্যায়ের নিরাপত্তাই পান। তবে মনমোহনের মতো এসপিজি বাহিনীর নিরাপত্তা তাঁকে দেওয়ার আইন নেই। কেন্দ্র নিরাপত্তা না বাড়ানোয় মোদীর জন্য আরও রক্ষী নিয়োগ করে গুজরাত পুলিশই।
মহিলা জঙ্গির হামলার সম্ভাবনা নিরাপত্তা বিতর্ককে ফের উস্কে দিতে পারে বলেই আশঙ্কা অনেকের।
|