|
|
|
|
কোন দল বেশি বিষাক্ত, তিক্ত তরজায় সনিয়া-মোদী
সংবাদ সংস্থা • বাঁশওয়াড়া (রাজস্থান) |
সনিয়া গাঁধী বলছেন, “বিজেপি বিষাক্ত লোকে ভরা!”
নরেন্দ্র মোদীর জবাব, “কংগ্রেসের চেয়ে বিষাক্ত দল আর হয় না!”
সনিয়ার পাল্টা কটাক্ষ, “কেউ কেউ সব জেনেও চোখ বুঁজে রয়েছেন এবং মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন।”
কংগ্রেস-বিজেপি-র চাপানউতোর ক্রমেই তীব্র আকার নিচ্ছে ভোটের মুখে। আজ তা নাটকীয় মাত্রা পায় কংগ্রেস সভানেত্রী ও বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বাগ্যুযুদ্ধে।
সনিয়া কাল রাজস্থানের কোটায় এক সভায় বলেছেন, বিজেপি বিষাক্ত লোকেদের দল। আজ সে রাজ্যেরই বাঁশওয়াড়ায় এক সভা থেকে তার জবাব দিলেন মোদী। আর তার জন্য তিনি রাহুল গাঁধীরই পুরনো একটি বক্তব্যকে হাতিয়ার করেন তিনি। মোদীর কথায়, “ম্যাডামের শাহাজাদাই এক বার জানিয়েছিলেন তাঁর মা তাঁকে বলেছেন, ক্ষমতা হল বিষ। স্বাধীনতার পরে প্রায় ৫০ বছর তো ওঁরাই দেশশাসন করেছেন। তা হলে সবচেয়ে বেশি বিষ কে পান করেছে? কংগ্রেস। তাই কংগ্রেসের চেয়ে বেশি বিষাক্ত আর কে হতে পারে?”
মাঝে মধ্যেই দলিতদের বাড়ি চলে যান রাহুল। তাঁদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়াও করেন। দলিত পরিবারে রাতেও থেকেছেন সনিয়া-পুত্র। দলিতদের সঙ্গে রাহুলের এই ওঠাবাসাকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মোদী। তিনি বলেন, “এক মাত্র সংবাদমাধ্যম থাকলেই শাহাজাদা গরিব আর গরিবি নিয়ে কথা বলেন। বছরে দু’-তিন বার শাহাজাদার ফটোশু্যট করা হয়। শুধু এটা দেখানোর জন্য যে, তিনি দারিদ্র নিয়ে কতটা উদ্বিগ্ন।” মোদী আর বলেন, “কাল দিল্লিতে লোকে আমায় বলছিলেন, শীলা দীক্ষিতের কেন্দ্রে রাহুলের বাংলোর লাগোয়া একটি বস্তি আছে। সেখানে ৮০০ লোকের জন্য মাত্র দু’টি শৌচাগার রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস এ সব দেখতে পায় না। কেবল সংবাদমাধ্যম থাকলেই কংগ্রেস নেতৃত্ব দারিদ্র দেখতে পান।”
মোদী নিজেকে গরিব ও পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে উঠে আসা নেতা হিসেবে তুলে ধরতে তৎপর। তাই গরিব বা দলিতদের সঙ্গে ওঠাবসার মাধ্যমে গরিব-দরদী যে ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা রাহুল করছেন, সেটাকেই মোদী সরাসরি আক্রমণ করে যাচ্ছেন গত কিছু দিন ধরে। যে কারণে রাহুলকে কখনও ‘শাহাজাদা’ কখনও বা ‘সাহাবজাদা’ আখ্যা দিয়ে বিঁধে চলেছেন তিনি।
জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন মোদী। তাঁর কথায়, “সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহ এবং রাহুল গাঁধী তিন জনেই রাজস্থানে প্রচারে এসেছেন। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কোনও কথা বলেননি। কেন সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, তারও জবাব দিতে পারেননি।”
কংগ্রেসের ঝুলি থেকে আদিবাসীদের ভোট বার করে আনার লক্ষ্যে মোদী এমনও বলেন, “দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে আদিবাসীদের বহু অবদান রয়েছে। কিন্তু তাকে স্বীকৃতি না দিয়ে কংগ্রেস বলে বেড়ায় দেশের জন্য আত্মবলিদান দিয়েছে শুধু একটি মাত্র পরিবার। কিন্তু সত্যি হল, তাঁরা জেলের থেকেও বেশি সময় কাটিয়েছেন প্রাসাদে।”
মোদীর এই আক্রমণের কড়া জবাব দিয়েছেন সনিয়া। দিল্লির শাস্ত্রী পার্কের ডিডিএ গ্রাউন্ডে আজ জনসভা করেন তিনি। সেখানে মোদী বা বিজেপি-র নাম না করে সনিয়া বলেন, “আমাদের বিরোধী দল জেনেশুনে মিথ্যা বললে কিছু করার নেই। কারণ, স্বাধীনতার পর থেকেই বিরোধীরা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ করে আসছে।” এর পর নাম ধরে ধরে সনিয়া বলেন, “মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী এবং জওহরলাল নেহরুর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছাড়েনি তারা। গরিবদের জন্য আজীবন কাজ করে যাওয়া ইন্দিরা গাঁধী বা রাজীব গাঁধীকেও রেহাই দেয়নি তারা। আমাকে, রাহুলকে, মনমোহনকে বা শীলা দীক্ষিতকে এরা ছাড়বে কেন?” এই সূত্রে গাঁধী-ইন্দিরা-রাজীব হত্যার প্রসঙ্গও টেনে আনেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর এক তরুণীর উপর নজরদারি চালানোর অভিযোগ উঠেছে মোদীর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সাসপেন্ড হওয়া আইএএস অফিসার প্রদীপ শর্মা। বিজেপি নেতা অরুণ জেটলির অভিযোগ, এর পিছনে কংগ্রেসের হাত রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “মোদীকে বিপাকে ফেলতে ফের অসন্তুষ্ট পুলিশ অফিসার, আমলাদের ব্যবহার করছে কংগ্রেস। এটা তাদের পুরনো খেলা।” |
|
|
|
|
|