পণ্যবাহী লরি চলাচলের উপরে নিয়ামতপুরে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করল পুলিশ। গত সপ্তাহে সীতারামপুর স্টেশন রোডে এক দুর্ঘটনার পরে সময়ে-অসময়ে রাস্তায় লরি রেখে পণ্য তোলা-নামা নিয়ে সরব হন এলাকাবাসী। এর পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি (ট্রাফিক) তন্ময় মুখোপাধ্যায় জানান, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই রাস্তা দিয়ে পণ্যবাহী লরি যাতায়াত করবে না। শনিবার থেকে এই নিয়ম চালু হয়েছে।
কুলটি থানার নিয়ামতপুরে সীতারামপুর স্টেশন রোডে গত ১৯ নভেম্বর একটি পণ্য বোঝাই লরির ধাক্কায় এক তরুণের মৃত্যু হয়। এর পরেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জি টি রোড অবরোধ করেন। তাঁরা দাবি করেন, ব্যস্ত সময়ে ওই রাস্তায় পণ্যবাহী লরির যাতায়াত বন্ধ করতে হবে। পুলিশ ও পুর কর্তৃপক্ষ তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছিলেন। শনিবার থেকে এই রাস্তায় নতুন করে যান নিয়ন্ত্রণের নিয়ম লাগু করা হল।
সীতারামপুর স্টেশন রোডটি এই এলাকার ব্যস্ততম রাস্তা। দু’পাশে ঘন জনবসতি ছাড়াও রয়েছে একাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল, সরকারি দফতর। ফলে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বহু মানুষ যাতায়াত করেন। যানবাহনের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এর পরে বড় বড় পণ্যবাহী লরি যাতায়াত করায় পরিস্থিতি খারাপ হয়। রাস্তার দু’পাশে বহু গুদাম রয়েছে। মূলত সেখানেই নিয়মিত যাতায়াত করে পণ্যবাহী লরিগুলি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ব্যস্ত সময়ে লরি যাওয়া-আসা এবং কার্যত রাস্তা আটকে পণ্য তোলা-নামা করায় যানজট হয়। স্কুল পড়ুয়া থেকে সরকারি কর্মী, রেলযাত্রীরা সময়ে মতো গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন না। ভারী লরি যাতায়াতের জন্য প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, উপযুক্ত ব্যবস্থার আবেদন জানিয়ে বহু বার পুলিশ-প্রশাসনকে জানালেও কাজ হয়নি। ১৯ নভেম্বর দুর্ঘটনার পরে এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কুলটির উপ-পুরপ্রধান বাচ্চু রায় নোটিস দিয়ে জানান, সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই রাস্তায় পণ্যবাহী লরি যাতায়াত করবে না। নির্দেশ না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে পুলিশকে চিঠি লেখেন তিনি।
পুরসভার জারি করা এই বিজ্ঞপ্তির পরে অবশ্য এলাকার ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা দাবি জানান, দিনে ১১ ঘণ্টা পণ্যবাহী লরি না এলে ব্যবসার ক্ষতি হবে। আখেরে সমস্যা হবে নাগরিকদেরই। এর পরেই ব্যবসায়ী ও নাগরিকদের নিয়ে বৈঠকে বসে পুলিশ। ঠিক হয়, পুরসভার বিজ্ঞপ্তি কিছুটা শিথিল করা হবে। সেই মতো শনিবার থেকে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। নিয়ামতপুর বণিকসভার সম্পাদক গুরবিন্দর সিংহ বলেন, “আমরা এই নতুন নির্দেশ মেনে চলব।” তাঁরও মত, সাধারণ মানুষ ও পড়ুয়াদের স্বার্থে এই রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন রয়েছে। স্থানীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলীপ বিশ্বাসের দাবি, পুলিশ ও পুর কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ যেন মানা হয়, সে দিকে নজর দিতে হবে।
|