|
|
|
|
বুদবুদ |
অরক্ষিত এটিএম ভেঙে লুঠ
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
বেঙ্গালুরুর এটিএমে মহিলার উপরে দুষ্কৃতী হামলার পরে আসানসোল ও দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন এটিএমে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় বিষয়টি যে এখনও কার্যত উপেক্ষিত, শনিবার গভীর রাতে বুদবুদের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অরক্ষিত এটিএমে টাকা লুঠের ঘটনায় তা-ই যেন সামনে এল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানকর রোডের ধারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক লাগোয়া ওই এটিএমের উপরের অংশ ভেঙে ফেলে দুষ্কৃতীরা। মাটির নীচে থাকা ভল্ট বহু চেষ্টা করেও ভাঙতে পারেনি তারা। ফলে, ভল্টের ভিতরে থাকা টাকা খোয়া যায়নি। তবে ভল্ট থেকে যে যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে টাকা বেরিয়ে আসে, সেখানে থাকা টাকা লুঠ করে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। রবিবার সকালে এই খবর জানাজানি হতেই ছুটে আসেন ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা। পৌঁছয় পুলিশও। এ দিন বিকেলে ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, “ভল্ট থেকে যেখান দিয়ে টাকা বেরিয়ে আসে সে পর্যন্ত অংশে কত টাকা ছিল, তা সহজে বলা সম্ভব নয়। হিসেব চলছে। পুলিশের কাছে অভিযোগে তাই ক্ষতির নির্দিষ্ট পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি।” |
|
লুঠের পরে। —নিজস্ব চিত্র। |
বাসিন্দারা জানান, বুদবুদের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেরই থানার পাশে থাকা অন্য একটি এটিএমে গত মার্চে হামলা চালায় এক যুবক। পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করে জানতে পারে, মূত্রনালীর জটিল রোগের চিকিৎসার খরচ জোগাতেই সে টাকা লুঠের চেষ্টা করেছিল। পুলিশ তাকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করায়। সেই ঘটনার পরেই এটিএমে রক্ষী না থাকার বিষয়টি নিয়ে সরব হন স্থানীয় বাসিন্দারা। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে এক মহিলার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার পরে নতুন করে এটিএমে রক্ষী নিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পাচ্ছে।
ওই ঘটনার পরে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট জানায়, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে শহরের যে সব এটিএম অরক্ষিত, সেখানে প্রহরী নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তা এমনও দাবি করেছিলেন, অধিকাংশ এটিএমেই ক্যামেরা ঠিক থাকে না। সিসিটিভি ফুটেজে ঘোলাটে ছবি ওঠে। তাতে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটে। এর পরে দুর্গাপুর শহরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমগুলিতে ইতিমধ্যে রক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু মহকুমার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে তা হয়নি।
বুদবুদের এটিএমটি যে ভাবে ভাঙা হয়েছে তাতে পুলিশের ধারণা, দীর্ঘ ক্ষণ ধরেই ‘অপারেশন’ চালায় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু সেই সময়ে পুলিশের কোনও টহল ছিল না। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “এটিএমগুলিতে রক্ষী থাকলে দুষ্কৃতীরা প্রাথমিক বাধার সম্মুখীন হয়। তা ছাড়া সেই রক্ষী প্রয়োজনে পুলিশকে খবরও দিতে পারেন।” ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, “রক্ষী রাখার বিষয়টি ব্যাঙ্কের শাখার হাতে নেই। তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এটিএমে সিসিটিভি ছিল। তবে রবিবার ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় কর্তৃপক্ষ পুলিশের হাতে ফুটেজ তুলে দিতে পারেননি।
পুলিশের দাবি, তাদের পক্ষে সব সময় এটিএম পাহারা দেওয়া কার্যত অসম্ভব। তবে ওই এলাকায় রাতে টহল বাড়ানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
|
|
|
|
|
|