শীতের সব্জির দামও বাড়ছে বল্গাহীন ভাবে
শীত পড়তে শুরু করলেও বাজারে সব্জি কিনতে গিয়ে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আলুর দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও নতুন সব্জিতে হাত লাগানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তাঁদের বক্তব্য, আলু, পেঁয়াজ, আদার সঙ্গে একটা সব্জি কিনতে গেলেই খরচ হয়ে যাচ্ছে কড়কড়ে একশো টাকা।
মঙ্গলবার শহরের বাজারগুলোতে তেরো টাকা দরে জ্যোতি আলু এবং আঠেরো টাকা দরে চন্দ্রমুখী আলু বিক্রি হলেও নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ টাকা কিলো দরে। টোম্যাটোর দাম ছিল ষাট টাকা কিলো। কড়াইশুঁটির কিলো ছিল দেড়শো টাকা। নিয়মিত গড়িয়াহাট বাজারে যান গোলপার্কের বাসিন্দা আশিস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “প্রতি বছর এই সময়ে নতুন আলু, টোম্যাটো এবং কড়াইশুঁটি দিয়ে জবরদস্ত আলুর দম বাড়ির খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে অন্তত দু’তিন দিন থাকত। এই বছরে দামের জন্য এখনও পর্যন্ত তা খাওয়ার সাহস করিনি। আর ক’টা দিন যাক। যদি দামটা কমে যায়, তখন দেখা যাবে।”
শীতের সব্জির আগুন দরের পাশপাশি পটল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙের দামও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরেই রয়ে গিয়েছে। সব্জি ব্যবসায়ীরা জানান, এই সময়ে এই সব সব্জির দাম অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু এ বারই পাইকারি বাজরে এ সবের কিছুতেই দাম কমছে না। এ দিন শহরের বিভিন্ন বাজারে ঢ্যাঁড়স বিক্রি হয়েছে সত্তর থেকে আশি টাকা কিলোগ্রাম দরে। পটল এবং ঝিঙে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ষাট টাকা দরে। নদিয়ার চাষি সরোজ কয়াল কোলে মার্কেটের পাইকারি বাজারে এসেছিলেন পটল বেচতে। তিনি বললেন, “অতি বৃষ্টিতে সমস্ত সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যা বেঁচেছে, তাই বাজারে বিক্রি করছে সবাই। সে জন্য কোনও সব্জিই এ বার সস্তায় দিতে পারছি না।”
ক্রেতাদের বক্তব্য, এই সব সব্জিতে হাত লাগাতে না-পেরে সাধারণ মানুষকে পেঁপে, লাউ, কুমড়ো কিনে থলি ভরাতে হচ্ছে। শোভাবাজার, মানিকতলা, যাদবপুর, গড়িয়হাট, লেক মার্কেটে এ দিন পেঁপে বিক্রি হয়েছে কুড়ি থেকে পঁচিশ টাকা কিলোগ্রাম দরে। কুমড়োর কিলো ছিল পঁচিশ থেকে ত্রিশ টাকার মধ্যে। দেশি মোটা লাউ বিক্রি হয়েছে কিলো প্রতি পঁয়ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকা দরে। অপেক্ষাকৃত সস্তা ছিল সরু লম্বা লাউ। এই দিন কিলো ছিল ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ টাকার মধ্যে। শোভাবাজারে নিয়মিত বাজার করেন এলাকার বাসিন্দা রাজা দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘শীতের সব্জি ছুঁতেই পারছি না। পেঁপে খেয়ে পেটে চড়া পড়ে গেল। কাঁচকলার জোড়া দশ টাকা। কাঁচালঙ্কা আশি টাকা। আর কত দিন এ ভাবে চলবে কে জানে? ”
শীতের নতুন সব্জির মধ্যে ভিআইপি এখন গাজর। শহরের বিভিন্ন বাজারের গাজর বিক্রি হয়েছে একশো কুড়ি থেকে দেড়শো টাকা দরে। কোথাও কোথাও আশি টাকা কিলো দরে এক রকমের গাজর মিললেও তা মন ভরাতে পারছে না ক্রেতাদের। মাঝারি মাপের ফুলকপির দাম ছিল ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ টাকা। অপেক্ষাকৃত ছোট ফুলকপির দাম পঁচিশ টাকা। বাঁধাকপির কিলো ছিল পঁয়ত্রিশ টাকা। সিম, বরবটির কিলো ছিল আশি টাকা করে। মুলো, পালংশাক, বেগুন বিক্রি হয়েছে পঞ্চাশ থেকে ষাট টাকা। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে সজনে ডাঁটার দাম। শহরের বিভিন্ন বাজারে সজনে ডাঁটার দাম ছিল কিলোগ্রাম প্রতি দু’শো টাকা!
তবে সব্জির এই চড়া দাম প্রসঙ্গে রাজ্য টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, “ভারতবর্ষের সব রাজ্যে একই অবস্থা। রাজ্যে এ বার অতিবৃষ্টির জন্য সব্জি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাষিরা নতুন করে সব্জির চাষ শুরু করেছেন। ডিসেম্বরের মধ্যে দামটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছি।”
রাজ্য সরকারেরও অবশ্য আশা, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সব্জির জোগান বাড়বে। অন্য রাজ্য থেকেও সব্জি আসা শুরু হলে দাম কমবে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.