শিক্ষক-নিগ্রহ রুখতে ফের সরব রাজ্যপাল
শিক্ষার আঙিনায় হিংসার বিরুদ্ধে আগেও একাধিক বার সরব হয়েছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। শিক্ষক-নিগ্রহে জড়িত ছাত্রদের জন্য লাঠ্যৌষধি প্রয়োগের নিদানও দিয়েছিলেন। এ বার তিনি বললেন, ছাত্রেরা যদি শিক্ষককে পেটায়, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে সেটাই অন্ধকারতম দিন। তাঁর মতে, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আরও বেশি শৃঙ্খলা জরুরি। অধ্যক্ষ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথামতো চললেই শৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিংসা, হানাহানি এ রাজ্যে মোটেই নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক কালে শিক্ষক-নিগ্রহও যেন রুটিনমাফিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর রায়গঞ্জ, মাজদিয়া, রামপুরহাট কলেজ থেকে শুরু হওয়া শিক্ষক-নিগ্রহের ধারায় এখনও ছেদ পড়েনি। চলতি বছরের অগস্ট ও সেপ্টেম্বরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজে অধ্যক্ষা, সন্দেশখালির কালীনগর কলেজে অধ্যক্ষ-নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষায় নকল ধরে এক দল ছাত্রছাত্রীর রোষের মুখে পড়তে হয় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামককে।
মেঘনাদ সাহা কলেজের ঘটনায় বিরক্ত রাজ্যপাল বলেছিলেন, অভিযুক্ত ছাত্রদের পিটিয়ে ঠান্ডা করা উচিত। তাঁর ওই মন্তব্য ঘিরে সেই সময় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও।
মঙ্গলবার স্কটিশ চার্চ কলেজের এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের সেই বিতর্কিত উক্তির উল্লেখ করেন কলেজের রেক্টর জন আব্রাহাম। পরে রাজ্যপাল বলেন, “আমার ওই উক্তি না-করলেও চলত।” তবে ওই কথার রেশ টেনেই তিনি বলেন, “একটা কথা বলা খুবই জরুরি। তা হল, জ্ঞানের ভিত্তি শৃঙ্খলার মধ্যে নিহিত। আজকাল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের হাতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিগৃহীত হতে হচ্ছে। এটা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে অন্ধকারতম দিন।”
অনুষ্ঠানের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আরও বেশি শৃঙ্খলা থাকা দরকার। অধ্যক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষিকারাই জানেন, কী ভাবে তা বজায় রাখতে হবে। তাঁদের কথা শুনে চললেই শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। এর জন্য বাইরে থেকে কারও কোনও রকম হস্তক্ষেপের দরকার নেই।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি, হিংসা, নৈরাজ্য তাঁর সরকার বরদাস্ত করবে না বলে একাধিক বার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার পরেও ছাত্র সংসদের নির্বাচন, পরীক্ষায় টোকাটুকি ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বারবার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সোমবারেই পরিচালন সমিতির কর্তা বাছাইকে কেন্দ্র করে বোমা-গুলি নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড বাধে তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা কলেজে। আতঙ্কিত শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, সাধারণ পড়ুয়ারা কলেজের ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে থাকতে বাধ্য হন। শাসক দলের দুই বিধায়কের অনুগামী ছাত্রদের কাজিয়া থেকেই ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আরও শৃঙ্খলার প্রয়োজন আছে। তাঁর কথায়, “শৃঙ্খলা এখনও রয়েছে। তবে আরও শৃঙ্খলা দরকার। আশা করি, আমরা এ বিষয়ে অনেক দূর এগোব।”
স্কটিশ চার্চের অনুষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ওই কলেজকেই দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরেন রাজ্যপাল। প্রশংসা করেন পাশে বসে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসেরও। অনুষ্ঠানে কলেজের রেক্টর জানান, তাঁরা স্কটিশ চার্চ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে চান। সেই উদ্যোগ চলছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.