ভাইচুংকে টপকে স্বপ্নপূরণ সুনীলের
সৌমিত্র কুণ্ডু • শিলিগুড়ি
ভারত: ২ (সুনীল, ক্লিফোর্ড)
নেপাল: ০ |
উইম কোভারম্যান্সের লক্ষ্য ছিল, নেপালকে হারিয়ে সাফ কাপের হারের বদলা নেওয়া।
সুনীল ছেত্রীর স্বপ্ন ছিল, ভাইচুং ভুটিয়াকে টপকে দেশের জার্সিতে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া।
শিলিগুড়ির ভিড়ে ঠাসা কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম ভারতীয় দলের কোচ ও অধিনায়ককে নিরাশ করেনি। ম্যাচের পর বাইশ হাজার দর্শকের উচ্ছ্বাস তাই ছিল দেখার মতো।
১৫ নভেম্বর ফিলিপিন্সের বিরুদ্ধে প্রদর্শনী ম্যাচে এই মাঠেই ভাইচুং ভুটিয়ার রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন সুনীল ছেত্রী। নেপালের বিরুদ্ধে এ দিন গোল করে ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ভাইচুং-এর ৪২ গোলের রেকর্ড টপকে সুনীল পৌঁছে গেলেন ৪৩-এ। ভাইচুং-এর চেয়ে সুনীল ২৭টি কম ম্যাচ খেলেছেন।
ম্যাচের শেষে মাঠে ঢুকে সুনীলকে জড়িয়ে ধরেন ভাইচুং। দু’জনেই উচ্ছ্বসিত। ভাইচুং বলছিলেন, “আমি খুব খুশি। আমারই এলাকার ফুটবলার আমার রেকর্ড ভেঙেছে। মাঠে বসে সেটা দেখতে পেরে দারুণ লাগছে।” ভাইচুং ছাড়াও এ দিন গ্যালারিতে ছিলেন হোসে ব্যারেটো। সুনীলের খেলা দেখে উচ্ছ্বসিত তিনিও।
উইম কোভারম্যান্সকে সে ভাবে উচ্ছ্বসিত না দেখালেও তিনি যে তৃপ্ত তা বোঝা যাচ্ছিল ম্যাচের পর তাঁর চোখমুখ দেখেই। সাফ কাপে নেপালের সঙ্গে ১-২ হারের বদলা নিলেন তিনি। এ দিন ২-০ গোলে কার্যত নেপালকে উড়িয়ে দিয়েছে কোভারম্যান্সের ভারত। সব কিছু ঠিক থাকলে আরও অন্তত চার গোল তো অনায়াসেই করতে পারতেন সুনীল, মেহতাবরা। |
রেকর্ড ভেঙে ভাইচুংয়ের বুকে সুনীল। মঙ্গলবার। ছবি: এএফপি। |
ডাচ কোচ এ দিন টিমের প্রশংসার পাশাপাশি সুনীলকে নিয়ে আলাদা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বলেন, “সুনীলের পরিশ্রম ও চেষ্টা ওকে এই সম্মান এনে দিল।”
দুর্লভ সম্মান পেয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা সুনীল বললেন, “গোল করতে পেরে আমি খুশি। তবে আরও কয়েকটি সুযোগ এ দিন কাজে লাগাতে পারিনি। তার জন্য আমি দুঃখিত। দলের সতীর্খ ফুটবলারদের সাহায্য ছাড়া এটা হত না। তা ছাড়া কোচের প্রশিক্ষণ একটা বড় ব্যাপার। ঘরের মাঠে দর্শকরাও আমাদের সমর্থন করেছে। আমি খুশি।” নেপাল কোচ জ্যাক স্টিভেনস্কিও সার্টিফিকেট দিয়ে গেলেন কোভারম্যান্সের নতুন ভারতকে। “সাফ কাপে যে ভারতকে দেখেছি এই ভারত তার থেকে আলাদা। তারা অনেক উন্নতি করেছে। ফিরে গিয়ে আমাদের সেই কাজটাই করতে হবে। যা ঘটল তা নিয়ে আর কিছু বলার নেই।”
এ দিন শুরু থেকেই সুনীল-ক্লিফোর্ডরা চেপে ধরেন নেপালকে। ১৫ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন রবিন সিংহ। ২১ মিনিটে ক্লিফোর্ডের বাড়ানো বল রবিন গোলে ঠেললেও নেপালের গোলরক্ষক কিরণ কুমার তাতে চাপড় মারেন। তাঁর হাতে লেগে বল বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই সুনীল তা কাজে লাগান। প্রথমার্ধে ১-০ এগিয়ে থেকে বিরতির পর খেলতে নামে ভারত। ৫২ মিনিটে গোল করেন ক্লিফোর্ড। নেপালের দর্শকদের একাংশ এ দিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন তবে তারা উচ্ছ্বাস দেখাবার সুযোগই পেলেন না। ম্যাচের পর কোভারম্যান্স বললেন, “আমার টিম আজ ভাল খেলেছে। আরও অন্তত ৪-৫টি গোল আমরা করতে পারতাম।” |
পুরনো খবর: সুনীলের রেকর্ড দেখতে আজ গ্যালারিতে থাকবেন ভাইচুং |
|