গোয়া থেকে বলেছিলেন ডার্বি জেতাটাই তাঁর প্রথম লক্ষ্য। কিন্তু শহরে পা দিয়েই ইস্টবেঙ্গলের নতুন কোচ আর্মান্দো কোলাসো ডার্বি নিয়ে অন্য কোচেদের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করে দিলেন। বলে দিলেন, “ডার্বি ম্যাচ আর চার-পাঁচটা ম্যাচের মতোই। ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করাটাই আসল কাজ।” এটা বলার লক্ষ্য একটাই, চিডি-মোগাদের উপর থেকে বড় ম্যাচের চাপ কমানোর চেষ্টা।
সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ময়দানের প্রথম গোয়ান কোচ যখন দমদম বিমানবন্দরে পা দিচ্ছেন তখন তাঁকে বরণ করতে বাইরে হাজির শ’খানেক সমর্থক। হাজির ছিলেন স্বপন বল-সহ অন্য কর্তারাও। আর্মান্দোকে পুষ্পস্তবক দেওয়ার পাশাপাশি পরিয়ে দেওয়া হয় লাল-হলুদ উত্তরীয়। যা দেখে পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী কোচের প্রতিক্রিয়া, “কলকাতার মানুষের ফুটবলের প্রতি এই ভালবাসাটাই গোয়ায় মিস করতাম।” তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, গোয়ার বাইরে প্রথম কোচিং করতে এলেন, এটা তো বড় চ্যালেঞ্জ? “প্রথম যখন প্রস্তাবটা এসেছিল তখন মনে একটা দ্বিধা ছিল। কিন্তু পরে ভাবলাম এখন যদি চ্যালেঞ্জটা না নিই কবে নেব?” বলে দিলেন মার্কোস ফালোপার উত্তরসুরী। |
কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছে লাল-হলুদের নতুন কোচ। ছবি: উৎপল সরকার। |
মঙ্গলবার নিজেদের মাঠে কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে। আর্মান্দো সেই ম্যাচ দেখবেন গ্যালারিতে বসে। ইস্টবেঙ্গলের চুক্তিপত্রেও তিনি সই করবেন বলে খবর। এ দিকে আর্মান্দোর আগমনে খুশি ফুটবলাররাও। সোমবার সকালে অনুশীলনের পর অতীতে তাঁর কোচিংয়ে খেলা সুয়োকা, জোয়াকিমরা বলে গেলেন, “পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী কোচ। প্রচুর অভিজ্ঞতা। দলের কাজে লাগবে।”
রবিবার বড় ম্যাচ। তার আগে জর্জের বিরুদ্ধে টেস্ট পরীক্ষা লাল-হলুদ শিবিরের। সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরী বলছেন আর্মান্দোর উপস্থিতিটাই দলের এক্স ফ্যাক্টর। তাঁর কথায়, “বড় ম্যাচে অন্য খেলা। অন্য আবহ। তখন চার বিদেশি মাঠে থাকবে। এখানে তো দুই বিদেশি। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ প্রস্তুতি নিচ্ছি। ডার্বিতে আর্মান্দোর উপস্থিতিই দলকে তাতিয়ে দেবে।”
এ দিন লাল-হলুদের অনুশীলন দেখে পরিষ্কার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের দলের বিরুদ্ধে চিডি শুরু থেকেই খেলবেন। কিন্তু আক্রমণে তাঁর সঙ্গী কে হবেন তা নির্ভর করছে রক্ষণে উগা ওপারার খেলার ওপর। নাইজিরীয় ডিফেন্ডারের কুঁচকিতে চোট। তিনি খেললে এক রকম ফর্মেশন। না খেললে চিডির সঙ্গে সুয়োকা এবং মোগাকে অদলবদল করে খেলানো হতে পারে বলে খবর টিম সূত্রে। কার্ড সমস্যায় নেই গুরবিন্দর। অর্ণব জাতীয় শিবিরে। তাই স্টপারে সেই সৌমিক। মাঝমাঠে সুবোধ এবং লোবোকে রেখেই দল সাজাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল।
বিপক্ষ জর্জ লিগে মোহনবাগানকে রুখে দিলেও ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে নামার আগে কিছুটা ব্যাকফুটে। শৃঙ্খলাজনিত কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে দুই বিদেশি তোরেস এবং ওয়াহেদিকে। তাই ভূমিপুত্রদের নিয়েই লাল-হলুদের মুখোমুখি বিশ্বজিতের ছেলেরা। জর্জ কোচ বলছেন, “ইস্টবেঙ্গল একটু নড়বড়ে অবস্থায় থাকলেও এগিয়ে। তবে আমাদের ছেলেরাও লড়াই ছাড়বে না।”
কলকাতা লিগ জমে ওঠার মাঝেই আবার সূচি বদল হল। এরিয়ান পরপর দুটো বড় দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার ব্যাপারে নিজেদের অপত্তির কথা জানিয়েছিল। এরিয়ান কোচ রঘু নন্দী বললেন, “আমরা আর মোহনবাগান আটটা করে ম্যাচ খেলে ফেললাম। ইস্টবেঙ্গল মাত্র চারটি ম্যাচ খেলেছে। লিগে এটা হবে কেন? ওরা তো সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে।” পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হচ্ছে বুঝতে পেরে ২০ নভেম্বরের মোহনবাগান-এরিয়ান ম্যাচ বাতিল করতে বাধ্য হল আই এফ এ। |