প্রতি ওয়ার্ডে বহুমুখী লড়াই,
প্রার্থীদের ভাবাচ্ছে ব্যবধান

মাত্র ৪২টি ভোট। পুর-নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে তাই ঢের। ২০০৮ সালে ৪২ ভোটের ব্যবধানেই মেদিনীপুরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে (পুরনো ৭ নম্বর) হার-জিত নিশ্চিত হয়েছিল। সিপিএমের বলরাম সিংহ জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ সিংহকে হারিয়ে। আরও কয়েকটি ওয়ার্ডেও খুব কম ব্যবধানে জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয়েছিল।
এ বারও এমনটা হবে না তো? ভোট যত এগোচ্ছে ততই ভাবনা বাড়ছে বহু প্রার্থীর। এই দলে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম থেকে নির্দল, সকলেই আছেন। ভাবনার প্রধান কারণ, এ বারের পুরভোটে প্রার্থী সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। ২৫টি ওয়ার্ডের সবক’টিতে বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। ২০০৩ সালে ২৪টি ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিল ৮৭ জন। ২০০৮ সালে সংখ্যাটা হয় ৮৩। আর এ বার ২৫টি ওয়ার্ডে প্রার্থী সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৫ জন! সব দেখে শুনে পোড়খাওয়া এক প্রার্থী বলছেন, “এ বার কী হবে, কিছুই বলা যাচ্ছে না! এত প্রার্থী। কত অঙ্ক! আগে থেকে কেউ জিতে বসে নেই!”
এ বার সবথেকে বেশি প্রার্থী ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে, ৭ জন। আর সব থেকে কম প্রার্থী ৪ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে, ৩ জন করে। ৪ জন করে প্রার্থী রয়েছে ১২টি ওয়ার্ডে। ৫ জন প্রার্থী ৬টি ওয়ার্ডে। ৬ জন করে প্রার্থী আছে ৪টি ওয়ার্ডে। গত বার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে (পুরনো ১৯ নম্বর) ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তৃণমূলের মৃণাল চৌধুরী এবং কংগ্রেসের কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায়। মাত্র ১৩৬ ভোটে জিতেছিলেন মৃণালবাবু। এ বারও এই ওয়ার্ডে এঁরাই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। কৌস্তভবাবু বলছেন, “গেল বার অল্প মার্জিনে হারায় কিছুটা মন খারাপ হয়েছিল। তবে, এ বার মানুষ আমাদের দিকেই রয়েছেন।” মৃণালবাবু অবশ্য মনে করছেন, “পাঁচ বছরে যতটা সম্ভব কাজের চেষ্টা করেছি। তাই এ বার জয়ের ব্যবধান অনেকটাই বাড়বে।”
২০০৮ সালে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে (পুরনো ৩ নম্বর) তৃণমূল প্রার্থী শিপ্রা মণ্ডল জিতেছিলেন মাত্র ৬৪ ভোটে। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বাম- প্রার্থী ভাস্বতী বন্দ্যোপাধ্যায়। সে বার এই ওয়ার্ডে ৩ জন প্রার্থী ছিলেন। আর এক নির্দল প্রার্থী ২২০টি ভোট পেয়েছিলেন। গতবারই ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী কৃষ্ণা দাসের জয়ের ব্যবধান ছিল ১০৪ ভোট। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সিপিএমের অমিতা সাহু। তৃণমূল প্রার্থী অঞ্জনা রায় ৩৬৮টি ভোট পেয়েছিলেন।
১১ নম্বর ওয়ার্ডে (পুরনো ৮ নম্বর) বাম-সমর্থিত বিকাশ পরিষদ প্রার্থী রহিমা আহমেদ গত বার জিতেছিলেন ৮৭ ভোটের ব্যবধানে। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী নিবেদিতা পাল পেয়েছিলেন ৭৩৬টি ভোট। সে বার ওয়ার্ডে ৫ জন প্রার্থী ছিলেন। ২০০৩ সালের নির্বাচনেও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে কম ব্যবধানে জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে। ওই বছর পুরনো ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বাম-প্রার্থী হিরামনি হেমব্রম জিতেছিলেন মাত্র ৮২ ভোটে। আর পুরনো ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী স্বাতী মিশ্রের জয়ের ব্যবধান ছিল মাত্র ৩২ ভোট।
মেদিনীপুর শহরে বরাবরই অ-বামদের প্রাধান্য বেশি। ২০০৮ সালের পুরভোটে শহরে ১৫,৭৩৪ ভোটে পিছিয়ে ছিল বামেরা। ২০০৩ সালের পুর-নির্বাচনে শহরে বামেরা পিছিয়ে ছিল ৭,৭৩৫ ভোটে। গত বিধানসভা নির্বাচনে সব ‘রেকর্ড’ ভেঙে যায়। বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে মেদিনীপুর শহর বাম-শূন্য! ওই নির্বাচনে তৃণমূল এগিয়ে ছিল ৩২,১০১ ভোটের। তবে সব দলের নেতারাই মানছেন, পুরভোট আর বিধানসভা ভোট এক নয়। তার উপর এ বার প্রার্থী সংখ্যা বাড়ায় ভোট কাটাকুটির খেলাও চলবে। এই পরিস্থিতিতে অনেক প্রার্থীরই ভাবনা কেবল ভোটের ব্যবধান।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.