‘গড়’ দখলে রাখার লড়াই মৃগেন-দীপকের
পুরভোটের ময়দানে তাঁরা নেই। তবু এ লড়াই যেন তাঁদেরই লড়াই। নিজেদের এলাকা ধরে রাখতে মরিয়া শাসক-বিরোধী দুই দলের দুই হেভিওয়েট নেতা। এক জন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, অন্য জন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার।
মৃগেনবাবুর বাড়ি মেদিনীপুর শহরের সিপাইবাজারে। এলাকাটি ২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। আর দীপকবাবু বিধাননগরের বাসিন্দা। এই এলাকা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। ২ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের শক্তঘাঁটি বলেই পরিচিত। আর ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বরাবর সিপিএমের জমি শক্ত। কিন্তু এ বার? মৃগেনবাবু বলছেন, “মানুষের উপর আমাদের আস্থা আছে। মানুষই আমাদের জেতাবেন।” আর দীপকবাবুর বক্তব্য, “ফল কী হবে, তা জনগণ বলবে। গণতন্ত্রে তো জনগণই শেষ কথা বলেন।”
পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ বার লড়াইটা দু’জনের কাছেই কঠিন। কঠিন বলেই বিধায়ক মৃগেনবাবুকেও নিজের পাড়ায় প্রচারে বেরোতে হচ্ছে। বলতে হচ্ছে, ‘ভোটটা কিন্তু তৃণমূলকেই দেবেন।’
মৃগেন মাইতি ও দীপক সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে, দীপকবাবু কর্মিসভা করছেন। সামাজিক অনুষ্ঠান কিংবা অন্য কোথাও পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হলে বলছেন, ‘এ বার একটু দেখবেন।’ জেলার সদর শহর মেদিনীপুরে বরাবর অ-বামদের প্রভাব বেশি। গোটা জেলা যখন লালদুর্গ, তখনও এই শহরে সবুজের রমরমা ছিল। তবে, শহরের কিছু এলাকায় সিপিএমের সংগঠন বেশি মজবুত। যেমন ৫ নম্বর ওয়ার্ড (পুরনো ২৩ নম্বর ওয়ার্ড)। এখান থেকে বরাবর বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন সিপিএম প্রার্থী। ২০০৩ সালে এই ওয়ার্ডে সিপিএমের প্রফুল্ল শাসমল ১৩৬৩ ভোটে হারিয়েছিলেন তৃণমূলের নন্টু খামরুইকে। ২০০৮ সালে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ায় ব্যবধান কিছুটা কমে। তবে, জেতার জন্য তেমন কাঠখড় পোড়াতে হয়নি সিপিএমকে। সে বার প্রফুল্লবাবু তৃণমূল প্রার্থী মৌ রায়কে ৯১৩ ভোটে হারান। কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছিল ১২৫টি ভোট।
২ নম্বর ওয়ার্ডে আবার বরাবর তৃণমূলের পাল্লা ভারী। ২০০৩ সালে এই ওয়ার্ডে ৫ জন প্রার্থী ছিলেন। মূল লড়াই হয় সিপিএমের স্বপন বিশ্বাসের সঙ্গে তৃণমূলের দেবী চক্রবর্তীর। তৃণমূল প্রার্থী ১৭৩টি ভোটে জেতেন। কংগ্রেস পেয়েছিল ৭৮০টি ভোট। ২০০৮ সালে এই ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিলেন ৪ জন।
চুটিয়ে প্রচার
 
রবিবারের প্রচারে ব্যস্ত তৃণমূল প্রার্থী প্রণব বসু (বাঁ দিকে উপরে), সিপিএম প্রার্থী
কীর্তি দে বক্সী (বাঁ দিকে নীচে), বিকাশ পরিষদ প্রার্থী নাজিম আহমেদ
(ডান দিকে উপরে), কংগ্রেস প্রার্থী সৌমেন খান। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
মূল লড়াই ছিল তৃণমূলের দেবী চক্রবর্তীর সঙ্গে বাম সমর্থিত বিকাশ পরিষদ প্রার্থী প্রাক্তন পুরপ্রধান নাজিম আহমেদের। ৮১৫ ভোটে হার হয়েছিল নাজিম আহমেদের। ঘটনাচক্রে, এই দু’টি ওয়ার্ড দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিলর-শূন্য। পুরনো ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রফুল্ল শাসমল হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবী চক্রবর্তীর মৃত্যু হয় পথ দুর্ঘটনায়। এ বার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। আর ২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী সংখ্যা ৫ জন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমকে চিন্তায় রেখেছে পরিবর্তন-হাওয়া। শাসকদল প্রার্থী করেছে মহিলা তৃণমূলের শহর সভাপতি মৌ রায়কে। আর সিপিএমের ‘তুরুপের তাস’ স্থানীয় সিপিএম নেতা সমর ঘোষের স্ত্রী সোনালি ঘোষ।
২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলকে বিঁধছে নির্দল-কাঁটা। প্রতীক না পেয়ে এখানে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি অসীম ধর। অসীমবাবুকে অবশ্য ইতিমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তৃণমূল এখানে প্রার্থী করেছে প্রয়াত দেবীদেবীর ছেলে নির্মাল্য চক্রবর্তীকে। আর সিপিএমের প্রার্থী স্বপন বিশ্বাস। এ তো গেল খাতায়কলমে প্রতিদ্বন্দ্বীদের নাম। আসলে কিন্তু লড়াইটা দীপক সরকার এবং মৃগেন মাইতির। কে নিজের ‘গড়’ ধরে রাখতে পারেন, সে দিকেই নজর গোটা শহরের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.