অন্যের জমিতে থাবা, আগেও হাজত পরাগের
র্ট স্ট্রিটের আগেই সাদার্ন অ্যাভিনিউ!
শর্ট স্ট্রিটে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে পরাগ মজমুদার এখন পুলিশি হাজতে। তবে তাঁর ক্ষেত্রে এটা নতুন কিছু নয়। এই ধরনের অভিযোগে এর আগেও হাজতবাস করেছেন জমি-বাড়ির কারবারি পরাগ। ২০১০ সালে সাদার্ন অ্যাভিনিউ (মেঘনাদ সাহা রোড) এলাকায় একটি ১৫ কাঠা জমির দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে এক মহিলার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই মামলায় পরাগকে সাত দিন পুলিশি হাজতে থাকতে হয়েছিল।
পুলিশ ও আদালত সূত্রের খবর, একাধিক বার শেক্সপিয়র সরণি থানায় পরাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেও কোনও সাহায্য পাননি ৯এ শর্ট স্ট্রিটের স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মমতা অগ্রবাল। ১১ নভেম্বর ভোরে সেখানে জমি দখল নিয়ে যথেচ্ছ গুলি চলে। দু’জন মারা যান।
পুলিশি তদন্ত বলছে, থানার একাংশও ওই দখল অভিযানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল। থানার সাহায্য না-পেয়ে রাজ্যপাল এবং পুলিশ কমিশনারের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মমতা। একই ভাবে সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের সেই মহিলাও লেক থানার কোনও সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ। পরে লালবাজারে গোয়েন্দা বিভাগের এক মহিলা আইপিএসের দ্বারস্থ হন তিনি। ওই আইপিএসের তৎপরতাতেই শেষ পর্যন্ত পরাগ গ্রেফতার হয়েছিলেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর।
কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবী জানান, ১০৪, সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ে ১৫ কাঠা জমির মালিক ছিল সাউ পরিবার। ২০০২ সালের নভেম্বরে কল্পনা মজুমদার নামে শিলিগুড়ির এক বাসিন্দা এক কোটি ২০ লক্ষ টাকায় সেই জমি কিনতে রাজি হন। সেই অনুযায়ী কাগজপত্রও তৈরি করা হয়। কিন্তু জমির কেনাবেচা প্রক্রিয়া চলাকালীন তদন্তে জানা যায়, ওই জমির মালিকানা স্বত্ব নিয়ে হাইকোর্টে আয়কর দফতরের সঙ্গে মালিক পক্ষের মামলা চলছে। ওই আইনজীবী জানান, সাউ পরিবারের কোনও শরিক ওই জমির দাম প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেকটাই কম দেখিয়ে বিক্রির চেষ্টা করেছিলেন। জমির দাম কম করে দেখানোর অভিযোগে আয়কর দফতর জমির মালিকদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। মালিকানা স্বত্ব নিয়ে ঝামেলা বাধায় কল্পনাদেবী জমির মালিক পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা অগ্রিম দিয়ে একটি চুক্তিপত্র তৈরি করেন।
চুক্তিপত্রে বলা হয়, যদি সাউ পরিবার জমির মালিকানা স্বত্ব পায়, মামলার যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে কল্পনাদেবীই ওই জমি কিনবেন। সেই জন্যই অগ্রিম বাবদ ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হল। বাকি এক কোটি টাকা থেকে মামলার খরচ বাদ যাবে। ২০ লক্ষ টাকা অগ্রিম দেওয়ায় জমিটি থাকবে কল্পনাদেবীর হেফাজতেই। চুক্তি অনুযায়ী ওই জমিতে নিজের নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করেন কল্পনাদেবী। তাঁর আইনজীবী জানান, ওই চুক্তিপত্রটি আইন মোতাবেক রেজিস্ট্রি করা হয়।
কল্পনাদেবীর আইনজীবীর অভিযোগ, “সাউ পরিবারের হাতে জমিটির দখল আসার সম্ভাবনা দেখা দিতেই পরাগ মজমুদার এবং ভবানীপুরের চক্রবেড়িয়া (সাউথ) এলাকার বাসিন্দা, সিপিএম-ঘনিষ্ঠ এক প্রোমোটার ওই জমি দখল করার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠেন।” সাউ পরিবারের পাঁচ শরিক ছিলেন। কল্পনাদেবীর অভিযোগ, তাঁকে শাসাতে শুরু করেন পরাগ। একই ভাবে সাউ পরিবারের দুই শরিক চুক্তি ভাঙার জন্য চাপ দিতে থাকেন কল্পনাদেবীকে। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, কল্পনাদেবীর উপরে জোড়া ফলায় আক্রমণ শুরু হয়। কল্পনাদেবী বিষয়টি লেক থানায় জানান। কিন্তু থানা থেকে সাহায্য না-পেয়ে তিনি সরাসরি অভিযোগ জানান লালবাজারে। শেষ পর্যন্ত লালবাজারের হস্তক্ষেপে পরাগ এবং সাউ পরিবারের ওই দুই শরিককে গ্রেফতার করা হয়।
কল্পনাদেবী সোমবার অভিযোগ করেন, “ধৃতেরা হাজত থেকে বেরিয়ে আসার পরেও হুমকি বন্ধ হয়নি। ওই জমি দখল করার জন্য পরাগ এখনও নানা ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বার শাসানি দিলে ফের হাইকোর্ট মামলা দায়ের করব।”

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.