ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল আগেই। সেই অনুযায়ী সোমবার আসানসোল পুরসভায় ক্ষমতাসীন জোট থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানাল কংগ্রেস। দলের জেলা শিল্পাঞ্চল কমিটির পর্যবেক্ষক মনোজ পাণ্ডে জানান, প্রদেশ নেতৃত্বের তরফে সেই চিঠি এ দিন ফ্যাক্স বার্তা মারফত পাঠানো হয়েছে। তবে, মেয়র দফতরে না থাকায় এই চিঠি প্রাপ্তির খবর পুরসভা সূত্রে পাওয়া যায়নি।
এরই মধ্যে পুরসভায় ভাঙন ধরেছে কংগ্রেসে। শনিবার দু’জনের পরে রবিবারও তাদের আর এক কাউন্সিলর রূপা বাউড়ি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এখন পুরসভায় তাঁদের কাউন্সিলর সংখ্যা ৯ জন, জানিয়েছেন মনোজবাবু। কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, সমর্থন তুললেও এখন পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার ভাবনা নেই তাঁদের। মনোজবাবুর কথায়, “এখন অনাস্থা আনার পরিস্থিতি নেই। আমরা এ নিয়ে ভাবছি না।”
শনিবারই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য আসানসোল পুরসভায় সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন। সোমবার চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানানো হয়েছিল সে দিন। সেই মতো সোমবার কলকাতা থেকে আসানসোল আসেন মনোজবাবু। তিনি এ দিন বলেন, “দুপুরে আমরা সমর্থন প্রত্যাহারের চিঠি ফ্যাক্স মারফত পুরসভায় পাঠিয়ে দিয়েছি।” তিনি আরও জানান, পুরসভায় তাঁদের যে সব কাউন্সিলর মেয়র পারিষদ তাঁদেরও নিজেদের পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে।
পুরসভার কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও আর এক নেতা রবিউল ইসলাম তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে তৃণমূলের একটি সূত্র কয়েক দিন ধরে দাবি করছে। ওই দু’জন তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে গোপনে বৈঠকও করেছেন বলে দাবি। প্রদেশ কংগ্রেসের জেলা শিল্পাঞ্চল পর্যবেক্ষক মনোজবাবুর অবশ্য দাবি, ওই দু’জন-সহ দলের অন্য কাউন্সিলররা কথা দিয়েছেন, তাঁরা দল ছেড়ে যাবেনা না। অমরনাথবাবু এ দিন বলেন, “আমি এখনও কোনও স্থির সিদ্ধান্ত নিইনি।” তবে রবিউল ইসলামের বক্তব্য, “রাজনীতিতে কোনও কিছুই চিরস্থায়ী নয়। এখন দলের প্রদেশ নেতাদের নির্দেশ পালন করছি। ভবিষ্যতে কী করব, তা জানার জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।” তবে প্রদেশ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনে সোমবার পুরসভায় নিজেদের দফতরে বসেননি এই দুই নেতা। তাঁরা জানান, মেয়র ফিরলেই নিজেদের পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।
কংগ্রেস সমর্থন তুললেও আসানসোল পুরসভায় তাঁদের কোনও সঙ্কট নেই বলে আগেই দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেতারা। মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য চিঠি পাওয়ার আগে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুরসভায় না আসায় এ দিনও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
কংগ্রেসের সমর্থন প্রত্যাহারের চিঠির বিষয়ে এ দিনও কোনও মন্তব্য করতে চাননি পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের তাপস রায়। তিনি বলেন, “আমরা এ বিষয়ে দেখেশুনে পদক্ষেপ করছি।” তবে পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার ভাবনা তাদেরও নেই বলে বামফ্রন্ট সূত্রে খবর। বিরোধী নেতা তাপসবাবু বলেন, “শহরবাসী আমাদের বিরোধী আসনে বসিয়েছেন। আমরা সেখানেই থাকব।”
|