মেয়রকে আজ সমর্থন প্রত্যাহারের চিঠি আসানসোলে
তৃণমূলের সঙ্গে আর নয়, সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের
বিবাদ চলছিল অনেক দিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত আসানসোল পুরসভায় ক্ষমতাসীন জোট থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। দলের প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, আজ, সোমবার সমর্থন প্রত্যাহারের চিঠি মেয়রকে দেওয়া হবে। চিঠি পাওয়ার আগে এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে তাঁদের দাবি, কংগ্রেস সমর্থন তুললেও পুরবোর্ড সঙ্কটে পড়বে না।
পুরসভার তিনটি ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন হবে আগামী ২২ নভেম্বর। তার ঠিক আগে এই ঘটনায় চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে পুরসভায়। এরই মধ্যে শনিবার রাতে পুরসভার দুই কাউন্সিলর দয়াময় রায় ও মাধব ঘোষ কংগ্রেস ছেড়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আর এক কাউন্সিলর অরুণ মণ্ডলও। মলয়বাবুর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের অগ্রগতিকে সমর্থন জানিয়েই ওঁরা আমাদের সঙ্গে আসছেন। আমাদের সামনে কোনও সঙ্কট নেই।”
২০০৯ সালে বামেদের থেকে আসানসোল পুরসভার ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। মোট ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে এখন তিনটিতে কোনও কাউন্সিলর নেই। বাকি ৪৭টি আসনের মধ্যে এখন ২১টি তৃণমূল, ১০টি কংগ্রেস ও ১৬টি বামেদের দখলে। পুরসভা সূত্রে খবর, বছরখানেক আগে থেকেই নানা বিষয় নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে মতান্তর শুরু হয়েছিল। মাস দুয়েক আগে অনৈতিক কাজকর্মের অভিযোগে কংগ্রেসের এক মেয়র পারিষদকে মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিলে বিবাদ প্রকাশ্যে আসে। কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের একাংশ তখন বোর্ড থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে প্রদেশ নেতৃত্বকে চিঠি পাঠান। তখনই না করলেও শেষ পর্যন্ত সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তই নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপবাবু বলেন, “আমরা আসানসোলে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরিষদীয় নেতাকে সোমবার এই সিদ্ধান্ত লিখিত ভাবে জানানোর নির্দেশ দিয়েছি।” তিনি অভিযোগ করেন, তাঁদের সমর্থন নিয়ে বোর্ড চালালেও কংগ্রেসকে পিছন থেকে ছুরি মেরে অপদস্থ করার চেষ্টা চালিয়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সঙ্গে থাকা বাঞ্ছনীয় মনে না করায় দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসানসোল পুরসভায় কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা তথা ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা প্রদেশ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনে কাজ করব।” তিনি আরও জানান, আঞ্চলিক স্তরে একটি সভা থেকে প্রদেশের সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এর পরে তাঁরা সোমবার সমর্থন প্রত্যাহারের চিঠি মেয়রকে দেবেন।
কংগ্রেসের সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে মেয়র তাপসবাবু কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, “আগে চিঠি আসুক। তার পরে দেখা যাবে।” ২২ নভেম্বর যে তিন ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন, এর আগে তার মধ্যে দু’টি বামেদের এবং একটি তৃণমূলের দখলে ছিল। তৃণমূল যদি এ বার তিনটি আসনেও জেতে, তাদের আসন দাঁড়াবে ২৪টি। কিন্তু পুরসভায় সংগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ন্যূনতম ২৬টি আসন। এই অবস্থায় বামফ্রন্ট বা কংগ্রেস, কেউ অনাস্থা প্রস্তাব আনলে তৃণমূল সঙ্কটে পড়তে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। কংগ্রেস সমর্থন প্রত্যাহারের পরে অনাস্থা আনতে চলেছে কি না, দলের প্রদেশ সভাপতি প্রদীপবাবু সে ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে চাননি।
তৃণমূল নেতাদের অবশ্য দাবি, তাঁরা বিন্দুমাত্র সঙ্কটে নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মলয় ঘটক-ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল মেয়র পারিষদের দাবি, “আরও তিন কংগ্রেস কাউন্সিলর আমাদের দলে যোগ দিতে পা বাড়িয়ে রয়েছেন। উপ-নির্বাচন মিটলেই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাঁদের দলে নেওয়া হবে।” পুরসভার চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “আমরা বিচলিত নই। সমর্থন প্রত্যাহার মানেই তো অনাস্থা আনা নয়।”
ফরওয়ার্ড ব্লকের এক কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, তা আগে কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল বলে জানান পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়। তবে কংগ্রেসের সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্যে নারাজ তাঁরা। তাপসবাবু বলেন, “আমরা পুরো বিষয়টি নজরে রাখছি। এখনই কোনও প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় আসেনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.