আসানসোলে পানীয় জলের সঙ্কট নিয়ে এ বার প্রকাশ্যেই কাজিয়া বাধল পুরসভার ক্ষমতাসীন দুই শরিক কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে। তৃণমূলের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দফতরের কংগ্রেস মেয়র পারিষদের অকর্মন্যতার জন্যই জলের সঙ্কটে ভুগছেন শহরবাসী। কংগ্রেসের আবার পাল্টা দাবি, তৃণমূল নেতারা নানা ভাবে অহেতুক হস্তক্ষেপ করায় জলপ্রকল্পটি তৈরিতে দেরি হয়েছে।
আসানসোল পুর এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট বহু বছরের। প্রায় সারা বছর ধরেই এই সঙ্কট থাকে। গরমে তা তীব্র আকার ধারণ করে। এই পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ উদ্যোগে নতুন একটি জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। কবে সেই কাজ শেষ হবে, সে বিষয়েও নিশ্চিত নন পুর কর্তৃপক্ষ। অথচ পানীয় জলের সঙ্কট দিন-দিন বাড়ছে। ২০০৯ সালে বামেদের সরিয়ে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পরে জল দফতরের মেয়র পারিষদ হন কংগ্রেসের রবিউল ইসলাম। |
পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি শুক্রবার অভিযোগ করেন, জল দফতরের মেয়র পারিষদের অকর্মন্যতার জন্যই শহর জুড়ে এই সঙ্কট চলছে। চেয়ারম্যানের আরও অভিযোগ, শহর জুড়ে পানীয় জলের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা হয়েছে। এমনকী, উৎসবের দিনগুলিতেও শহরবাসী পর্যাপ্ত পানীয় জল পেলেন না। ফলে, পুরসভার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হল। জিতেন্দ্রবাবুর দাবি, “রবিউল ইসলাম সুকৌশলে এটা করলেন। আগামী দু’মাসের মধ্যে যদি পানীয় জলের সুরাহা না হয় তবে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনব।”
জিতেন্দ্রবাবু যে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, দিন দশেক আগে সেখান থেকে অপরিশোধিত জল পান করে প্রায় ৩২ জন বাসিন্দা ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হন। সেখানকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের কোনও ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়েই তাঁদের অপরিষ্কার পুকুর ও আগাছায় ভরে থাকা কুয়োর জল পান করতে হয়। এই ঘটনার পরেই পানীয় জলের সরবরাহ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় জিতেন্দ্রবাবুকে। এর পরেই এ দিন তিনি এই দফতরের মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
চেয়ারম্যানের অভিযোগ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম বলেন, “ওঁদের অযথা গা জোয়ারির জন্যই তো জলপ্রকল্পটি এখনও তৈরি হল না। আমাদের প্রস্তাব না মেনে ওঁরা একতরফা কাজ করতে গিয়েই যত বিপত্তি। এ সব এখন মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তাই এখন আমাদের উপরে দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন ওঁরা। আমরা এ সব ভুয়ো অভিযোগের পরোয়া করি না।” তাঁর দাবি, হাজারো প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে প্রকল্পের কাজ অনেকটাই শেষ করে এনেছেন তিনি। জানুয়ারি থেকেই পুরোদমে নতুন জলপ্রকল্পটি চালু হয়ে যাবে, আশ্বাস তাঁর। |