সেল গ্রোথ ডিভিশনের কুলটি কারখানায় পুরোমাত্রায় উৎপাদন চালু ও সেলের প্রস্তাবিত মিশ্র ইস্পাত শিল্প গড়ার দাবিতে নাগরিক সম্মেলন হল কুলটিতে। আসানসোলের সাংসদ তথা খনি ও ইস্পাত বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বংশগোপাল চৌধুরীর ডাকা এই সম্মেলনে শিল্পাঞ্চলের নানা শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও কর্মী-সদস্যেরা যোগ দেন। দাবি আদায়ের জন্য শিল্পাঞ্চল জুড়ে ধারাবাহিক কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় কুলটির গাঁধী ময়দানে হাজির হন কয়েকশো বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই কারখানার প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মী ও বর্তমান ঠিকাকর্মী। শুরুতে সাংসদ জানান, কুলটি কারখানার পরিকাঠামো ব্যবহার করে এখানে একটি মিশ্র ইস্পাত শিল্প গড়ার প্রস্তাব দিয়েছে ইস্পাত মন্ত্রক। তাতে সায় দিয়েছেন সেল কর্তৃপক্ষ। তা সত্ত্বেও এই প্রস্তাব কার্যকরের কোনও সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না দাবি করে বংশগোপালবাবু জানান, কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে এই শিল্প তৈরি হলে এলাকার কর্মহীনেরা চাকরি পাবেন। পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে। তিনি বলেন, “গত ৫ সেপ্টেম্বর বার্নপুরে সেলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে এই প্রকল্পের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্তের আবেদন করেছি।”
সাংসদের প্রস্তাবকে সমর্থন জানান সিটু নেতা সুজিত ভট্টার্চায, আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী চট্টোপাধ্যায়, এআইটিইউসি নেতা সিঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। একটি সর্বদল কমিটি গড়ে আন্দোলন কর্মসূচির আবেদনও জানান তাঁরা। রবিবারের সম্মেলনে নানা পক্ষ অভিযোগ করেন, ঠিকা সংস্থাকে দিয়ে উৎপাদন শুরু হলেও আদতে কোনও লাভ হয়নি। খাতায়-কলমে কারখানাটি চালু হয়েছে মাত্র।
ইস্কো কারখানার কুলটি শাখার উৎপাদন প্রক্রিয়া পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ। তার অনেক আগেই কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রক দেশের প্রাচীন এই ইস্পাত কারখানাটিকে রুগ্ণ ঘোষণা করে। সেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের এই ‘সাবসিডিয়ারি’ সংস্থাটিকে অলাভজনক বলে জানিয়ে দেন। কারখানার ঝাঁপ বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। প্রায় ২৩০০ শ্রমিক-কর্মীকে স্বেচ্ছাবসরের প্রস্তাব পাঠান সেল কর্তৃপক্ষ। ২০০৩ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে ২৯ জন শ্রমিক-কর্মী বাদে সকলেই স্বেচ্ছাবসর নেন। স্বেচ্ছাবসর না নেওয়া শ্রমিক-কর্মীদের সেলের অন্য সংস্থায় বদলি করা হয়। প্রায় চার বছর পরে ২০০৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর কুলটিতে এসে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় ও ইস্পাতমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান এখানে পুনরায় উৎপাদন চালুর কথা ঘোষণা করেন। তখন থেকে এখানে স্টিল কাউন্ট্রি মেশিন শপে উৎপাদন চালু হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী পদে নিয়োগ হয়নি। ঠিকা সংস্থাকে দিয়ে উৎপাদন চলছে। |