ডার্বির আগে বাগানের আশা ভারতীয় ডিফেন্স, আশঙ্কা ওডাফা
মোহনবাগান-০
ইউনাইটেড স্পোর্টস-০
রিম বেঞ্চারিফা যদি এক সপ্তাহ আগেই ডার্বির জট খুলে ফেলে থাকেন, তা হলে অবাক হওয়ার বোধহয় কিছু নেই!
সবুজ-মেরুনের প্রধান বিদেশি স্টপার ইচে পরের রবিবার চিডি-মোগাদের সামলাতে আই লিগের বড় ম্যাচে থাকছেন না। সেটা মাথায় রেখে রবিবার কলকাতা লিগে ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে বড় ম্যাচেও তাঁকে খেলাননি বুদ্ধিমান মরক্কান কোচ। স্রেফ রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রাখলেন, এই ম্যাচে কার্ড-সমস্যা না থাকায়। এবং নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার দেখে গেলেন, করিমের চার ভারতীয় ডিফেন্ডার কিংশুক, রাউইলসন, শৌভিক আর প্রীতম কোটালের দাপটে র্যান্টি-হাসানদের সামলানোর ছবি। র‌্যান্টি ছাব্বিশ মিনিটের বেশি মাঠে না থাকলেও করিমের ভারতীয় ডিফেন্স লাইন নতুন আলোর রেখা দিয়ে গেল।
ইউনাইটেড ম্যাচ থেকে মোহন-ডিফেন্সের সেরা প্রাপ্তি বোঝাপড়া। নিজেদের বক্সে কিংশুক-রাউইলসনরা যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ খেললেন, তাতে এ দিন অন্তত ইচের অভাব সে ভাবে টের পাওয়া যায়নি। বিপক্ষের ‘ফার্স্ট’ কিংবা ‘সেকেন্ড’ বল বেশির ভাগ সময় ধরেছেন। বল ডিস্ট্রিবিউশনও নিখুঁত। কোনও স্পেশ্যাল টোটকা দিয়েছিলেন কি করিম? “চার জনকেই ফাইনাল ট্যাকলে যেতে বারণ করেছিলাম। যতটা সম্ভব খেলাটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে বল সাপ্লাইয়ের দিকে বেশি জোর দিতে বলেছিলাম,” ম্যাচ শেষে বলছিলেন তৃপ্ত বাগান কোচ।
আটকে যাওয়া ওডাফা। রবিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
তবে ডার্বির আগে নতুন ডিফেন্স-সংগঠন যদি করিমের প্রাপ্তি হয়, তা হলে ওডাফার ব্যর্থতা অন্যতম দুশ্চিন্তা মোহনবাগানে। প্রায় তিন মাস পর আবার শুরু থেকে খেললেন বাগানের নাইজিরিয়ান গোলমেশিন। কিন্তু সেই পরিচিত দৌড়, বিদ্যুৎ গতির শট, চকিত টার্নিং কোথায়? সত্তর মিনিট মাঠে ছিলেন। তা হলে কি ডার্বির এক সপ্তাহ আগেও পুরো ম্যাচ ফিট নন বাগানের সেরা ভরসা? দশটা বল ধরলেন। পাঁচটা মিস পাস। তিনটে বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেন না। দু’টো ‘ওয়ান টু ওয়ান’ সুযোগ মিস। ইউনাইটেডের অনুপম-ধনচন্দ্র সিংহরাই অবলীলায় ওডাফার পা থেকে বল কেড়ে নিলেন। ওপারা-অর্ণব মণ্ডলের সামনে পড়লে কী হবে? করিম অবশ্য আশাবাদী, “সদ্য ফিট হয়ে দলে ফিরেছে। একটু সময় তো লাগবেই। আমার বিশ্বাস, ডার্বির আগে ওডাফা পুরো ম্যাচ ফিট হয়ে যাবে।”
মাঝমাঠেও বেশ অদল-বদল করেছিলেন করিম। আদিল খানের চোট। বড় ম্যাচে পাওয়া যাবে কি না, নিশ্চিত নয়। এই পরিস্থিতিতে ডেনসন-কাৎসুমিদের পাশে করিম প্রথম বার নামিয়েছিলেন এরিয়ান থেকে আসা পঙ্কজ মৌলা-কে। কিন্তু তিনি তেমন আশা জাগালেন না। সাবিথ-ওডাফাকে মাঝেমধ্যে দু’একটা ভাল থ্রু বাড়ালেও ইউনাইটেডের হাসান-স্নেহাশিসরা বারবার টপকে যাচ্ছিলেন পঙ্কজকে। তাঁর পাশ দিয়েই একটা সময় আক্রমণের রাস্তা তৈরি করে ফেলেছিল এলকো-র দল। কিন্তু প্রকৃত স্ট্রাইকার এবং কোচের অতি সাবধানী মনোভাবে গোলের মুখ খুলতে পারেনি ইউনাইটেড।
করিমের যেমন ডার্বি, এলকো তেমনই আই লিগে ডেম্পো ম্যাচের কথা মাথায় রেখে র‌্যান্টিকে শেষ ছাব্বিশ মিনিটের বেশি ব্যবহার করেননি। বড় দলগুলোর যা মনোভাব, তাতে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের নাম অনায়াসে ‘কলকাতা প্রস্তুতি লিগ’ করে দেওয়া যায়! সাত ম্যাচে ছ’পয়েন্ট নষ্ট করে ইতিমধ্যেই স্থানীয় লিগ জয়ের স্বপ্ন প্রায় শেষ বাগানের। তবে শুরু থেকে র‌্যান্টি না খেললেও ইউনাইটেডের তরুণ স্ট্রাইকার বিশ্বজিৎ বিশ্বাস প্রশংসা কুড়োলেন বিপক্ষ কোচেরও। ম্যাচের পরে করিম জানতে চাইলেন, “ম্যাচের সেরা যে হল, তার নাম কী? প্রথম কুড়ি মিনিট বেশ ভাল খেলল ছেলেটা।”
কলকাতা লিগ কার্যত হাতছাড়া হলেও বেসামাল একটা টিমকে দাঁড় করানোর চেষ্টায় কোনও খামতি নেই করিমের। কিন্তু সবুজ-মেরুন কর্তারা যেন কোচের সেই পরিশ্রমেও জল ঢেলে দিচ্ছেন! ক্লাব সূত্রের খবর, কর্তাদের আচরণে এ দিন ম্যাচের আগে থেকেই বিরক্ত ছিলেন করিম। সমস্যার সূত্রপাত, ফুটবলারদের লাঞ্চ নিয়ে। ম্যাচের দিন দুপুর বারোটার মধ্যে ওডাফাদের লাঞ্চ করে নেওয়ার কথা থাকলেও, সেটা শুরু হতে পঁয়তাল্লিশ মিনিটে দেরি হয়ে যায়। তাতে চটে যান করিম। খুব সহজ তাঁর রাগের কারণ। খেলার আগে সঠিক সময় খাবার না খেলে হজম-সমস্যায় ভাল ফুটবল কঠিন। ডার্বির দিন এ ধরনের টুকরো ঘটনা না ঘটলেই রক্ষে!

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.