ইডেনে যে ‘দুসরা’র শিকার হয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর, সেটা কি তা হলে সত্যিই ছোড়া হয়েছিল? বিষেণ সিংহ বেদী সে দিনই আনন্দবাজারকে বলেছিলেন, “ছেলেটা বল ছোড়ে।” আর শনিবার রাতে মুম্বই টেস্টের দুই আম্পায়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজের অফ স্পিনার শেন শিলিংফোর্ডের বিরুদ্ধে ‘সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের’ রিপোর্ট জমা দিয়ে বেদীর বক্তব্যেই শিলমোহর মেরে দিলেন।
যা শুনে রবিবার বেদী ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, “আমার দেখায় তা হলে কোনও ভুল ছিল না, কী বলেন?” শনিবার রাতে আইসিসি ই-মেল করে জানিয়ে দিয়েছে, আম্পায়ারদের রিপোর্ট তারা ম্যাচ রেফারি মারফত পেয়ে গিয়েছে। যে রিপোর্টে আম্পায়াররা শিলিংফোর্ডের দুসরা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যা শোনার পর দিল্লি থেকে বেদী বলছিলেন, “সচ্ হামেশা সচ্-ই হোতা হ্যায় (সত্যি সর্বদা সত্যিই হয়)। সচ্ কভি ঝুটমে বদল নেহি সকতা (সত্যি কখনও মিথ্যেতে বদলে যেতে পারে না)। সত্যিটা চেপে রাখা যায় না। তখন আমি বারবার বলেছিলাম, ছেলেটা ‘চাক’ করছে। কেউ আমার কথায় কান দেয়নি। এ বার তো আম্পায়াররা আইসিসি-র কাছে রিপোর্ট করেছে। এ বার নিশ্চয়ই লোকে আমার কথা শুনবে।” |
আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী ২১ দিনের মধ্যে নিরপেক্ষ প্যানেলের সামনে নিজের বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে হবে শিলিংফোর্ডকে। শুধু শিলিংফোর্ডই নন, মার্লন স্যামুয়েলসের জোরের উপর ছাড়া অফ স্পিন নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে রিপোর্ট দিয়েছেন আম্পায়াররা। দু’জনকেই এখন পরীক্ষায় বসতে হবে। পরীক্ষার পরে ১৪ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে। তারপরে সিদ্ধান্ত নেবে আইসিসি। তত দিন পর্যন্ত অবশ্য দুই বোলারই বল করতে পারবেন। তবে ভারতের বিরুদ্ধে আসন্ন ওয়ান ডে সিরিজে দলে নেই শিলিংফোর্ড।
ইডেনে সচিনের আউট প্রসঙ্গে বেদী এ দিন আরও বলেন, “বলটা স্টাম্পের উপর দিয়ে যাচ্ছিল কি না, সে তো পরের প্রশ্ন। বোলারের বলটাই যেখানে নো-বল, সেখানে তো আউট হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। কিন্তু তখনও তো আম্পায়াররা কোনও রিপোর্ট দেননি। তাই অন্যায় ভাবে সচিনের উইকেট পেয়ে গেল ছেলেটা। আর এখন তো সারা জীবন বুক বাজিয়ে বলে বেড়াবে যে সচিন তেন্ডুলকরকে আউট করেছে। ইডেনের দর্শকরাও সচিনের একটা ভাল ইনিংস দেখা থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল। ক্রিকেটের এই ক্ষতি পূরণ করার রাস্তা নিশ্চয়ই আইসিসি-র জানা নেই। সুতরাং ক্ষতিটা রয়েই গেল।”
আইসিসি-ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, শিলিংফোর্ডের দুসরা নিয়েই যত সমস্যা। শিলিংফোর্ডের ‘দুসরা’-র গুরু, পাকিস্তানের প্রাক্তন অফ স্পিনার সাকলিন মুস্তাক সে দিন বেদীর অভিযোগের জবাবে বলেছিলেন, “বেদীসাব বোধহয় জানেন না, ঠিক কতটা কনুই ভাঙলে সেটা বেআইনি বলা হয়।” আম্পায়ারদের রিপোর্টের পর প্রাক্তন পাক অফ স্পিনারকে অনেক চেষ্টা করেও অবশ্য ফোনে পাওয়া যায়নি।
|