সারা ভারত যখন সচিন-বিদায়ের শোকে আচ্ছন্ন, তখন সীমা পেরিয়ে তার রেশ পাকিস্তানে এসে আছড়ে পড়বে না, তাই কখনও হয়?
মুম্বইয়ে সচিনের শেষ টেস্ট নিয়ে ও দেশে গত দু’সপ্তাহ ধরে যা চলছিল, তার খবর আমরা, এখানকার ক্রিকেট সাংবাদিকরা নিয়মিত রাখছিলাম। সত্যিই অসাধারণ বিদায়-পক্ষ বলা উচিত একে। কলকাতায় সচিন তাঁর শেষ সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলার সময়ও এখানে অতটা হইচই ছিল না। কিন্তু যে মুহূর্ত থেকে ফোকাসটা মুম্বইয়ে সরে গেল, সেই মুহূর্ত থেকে যেন সচিনের বিদায়ী লগ্নের মুহূর্তগুলো শুধু ভারতীয়দের নয়, পাকিস্তানিদেরও। এটা ঠিকই যে সচিনের এই বিদায়বেলা কভার করতে আমরা কেউ যাইনি ভারতে। কিন্তু ভারত থেকে সংবাদসংস্থা মারফত যে সব রিপোর্ট ও ছবি পেয়েছি বা যে টিভি ক্লিপিংস এখানকার নিউজচ্যানেলগুলোতে এসে পৌঁছেছে, সেগুলো পাকিস্তানি ক্রিকেট ফ্যানদের সামনে তুলে ধরতে আমরা কেউ কার্পণ্য করিনি। রাস্তা ঘাটে সচিনের এই প্রাচুর্যে ভরা বিদায় সংবর্ধনা নিয়ে আলোচনাও শুনেছি অনেক। আবার একেবারে যে সমালোচনা হয়নি, তা নয়। লোকে যেমন বলেছে, এত বাড়াবাড়ি করার কী দরকার ছিল আবার আর এক দলকে বলতে শুনেছি, সচিন যদি আমাদের দেশে জন্মাতেন হয়তো তাঁকে আমরা এর চেয়েও বেশি জাঁকজমক করে বিদায় জানাতাম। নেহাত পাকিস্তানের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে আগ্রহও প্রচুর। না হলে হয়তো আমরাও সচিনের শেষ টেস্টের আরও বেশি কভারেজ দিয়েই পাতা ও স্লট ভরাতাম। |
তবু শেষ দিনের কভারেজই যা হয়েছে, তা-ই মনে রাখার মতো। এখানকার বহুল প্রচারিত ‘দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল’-এ সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে, যার শিরোনাম ‘সচিন’। কোনও ক্রিকেটারকে নিয়ে এমন এডিটোরিয়াল আজ পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনও সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে বলে মনে পড়ছে না। খেলার পাতাতেও বিশাল করে বেরিয়েছে সচিনের কান্নার ছবি, ওয়াংখেড়ের পিচে দাঁড়িয়ে প্রণাম করার ছবি। তার সঙ্গে মহানায়কের হৃদয়স্পর্শী বিদায়ী ভাষণও বারবার দেখানো হচ্ছে নিউজ চ্যানেলগুলোতে। পাকিস্তানি ক্রিকেট দলের কাছে বরাবরই চরম শত্রু ছিলেন সচিন। বিশেষ করে শোয়েব আখতারের। কিন্তু সে তো মাঠে। মাঠের বাইরে ব্যক্তি ও ক্রিকেটার সচিনের বরাবরের ভক্ত পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ।
|
(লেখক পাকিস্তানের ‘জঙ্গ’ সংবাদপত্রের ক্রিকেট-লিখিয়ে)
|