রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী দু’শো বছরের প্রাচীন রাসমেলা শুরু হল কোচবিহারে। শনিবার সন্ধ্যায় মেলার মূল প্রবেশ পথের ফিতে কেটে এবারের রাসমেলার উদ্বোধন হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব মেলার উদ্বোধন করেছেন। তারপর মেলার মাঠ লাগোয়া এমজেএন স্টেডিয়াম চত্বরে সাংস্কৃতিক মঞ্চের উদ্বোধন করেন রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। দু’টি অনুষ্ঠানেই পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া, জেলাশাসক মোহন গাঁধী, পুরসভা চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রাতে মদনমোহন মন্দিরে বিশেষ পুজো করে রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন কোচবিহারের জেলাশাসক তথা দেবোত্তর ট্রাষ্ট বোর্ডের সভাপতি মোহন গাঁধী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “রাসমেলার সঙ্গে দু’শো বছরের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী ওই মেলা এবারে আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে বলে আশা করছি।” |
কোচবিহার পুরসভা রাসমেলার আয়োজক। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার মেলা চলবে আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। উদ্বোধনের দিনেই মেলায় জিলিপির দোকানের জন্য তৈরি পৃথক লেনে ক্রেতাদের নজরকাড়া ভিড় ছিল। মেলার মাঠে নাগরদোলা চালুর তোড়জোড়ের পাশাপাশি অস্থায়ী দোকান তৈরির শেষ মূহুর্তের ব্যস্ততাও ছিল তুঙ্গে। তাঁবু ফেলেছে সার্কাস কোম্পানিও। সার্কাসের হাতি দেখতে দিনভর উসাহীদের ভিড় ছিল। আজ, রবিবার থেকে সার্কাস শুরু হবে। সেজে উঠেছে কোচবিহার মদনমোহন বাড়িও। শীতের রাতে রাস উৎসবের উদ্বোধনের পর রাসচক্র ঘোরাতে পূর্ণ্যার্থীদের হুড়োহুড়ি দেখা গিয়েছে। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “রাস উৎসবের রীতি মেনে পুজোর জন্য দিনভর উপোস থেকেছি। ভালই লাগছে।” |
পুরসভার চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু বলেন, “প্রথম দিনেই মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। রবিবার সাকার্স চালু হলে ওই ভিড় আরও বাড়বে।” রাসমেলা ঘিরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা শহর। জঙ্গি নাশকতার আশঙ্কা এড়াতে অসম সীমানায় বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তের নজরদারি নিয়েও বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে জেলা পুলিশ। প্রশিক্ষিত কুকুর এনে এদিন মেলা চত্বরে তল্লাশি চালানো হয়েছে। মদনমোহন মন্দিরে ৯টি এবং মেলার মাঠে ১১টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসেছে। মন্দির চত্বরে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পও চালু হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “জেলা ও বাইরের বাহিনী মিলিয়ে ৮৫০ জন পুলিশকর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। সতর্কতার অন্য সব ব্যবস্থা হয়েছে। নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখতে চাইছি না।” |