শালুগাড়ায় পুনর্বাসন নিয়ে রাজ্য-সেনা জমি জট
নির্মীয়মাণ মিনি মহাকরণ লাগোয়া এলাকার ২৪টি পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত শিলিগুড়ির শালুগাড়ায় বিকাশনগরের জমি ঘিরে জটিলতা ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যে একাধিক ব্যক্তি ওই জমির মালিকানা দাবি করেছেন। তা নিয়ে গোলমালের আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। শনিবার সেই জমিতে দেখা গেল ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩৩ কোরের জওয়ানদের। সেনার দাবি, ওই জমি তাদের। সে জন্য জওয়ানদের পাহারায় মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ঘটনার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের একাংশের ভূমিকা নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেই ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। জলপাইগুড়ির ভূমি ও ভুমি সংস্কার দফতরের পক্ষ থেকে কেন জমির মালিকানা স্পষ্ট করা হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দার্জিলিং জেলা সিপিএমের তরফে জীবেশ সরকার, প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যদের অভিযোগ, পুনর্বাসন দেওয়ার নামে সরকার দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ করায় গরিব মানুষের চরম হয়রানি হচ্ছে।
জটিলতা কাটানোর ব্যাপারে অবশ্য আশাবাদী উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। বিতর্ক এড়াতে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জমির মালিকানা নিয়ে যৌথ সমীক্ষার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, “জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। জমিতে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। ঠিক হয়েছে সেনাবাহিনী এবং প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ওই জমির পরিস্থিতি সমীক্ষা করা হবে। মঙ্গলবারের মধ্যে সেই কাজ হবে।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “বিষয়টি সংবেদনশীল। আলাপ-আলোচনার মধ্যে সমাধান করতে হবে।” যদিও এ দিন বৈঠকে উপস্থিত সেনাবাহিনী দাবি করেছে, জমির নথি তাদের কাছেই রয়েছে। সেনা তরফে কর্ণেল রাজেন্দর পান্ডে বলেন, ‘‘আমরা আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। যা বলার প্রশাসনের আধিকারিকেরাই জানাবেন।”
শিলিগুড়ির উপকন্ঠে কামরাঙ্গাগুড়ি এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় তৈরির কাজ চলছে। নির্মীয়মাণ ওই সচিবালয়ের রাস্তার জায়গায় থাকা ২৪টি পরিবারকে সরাতে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয় বিকাশনগর এলাকায়। গত বুধবার তাদের হাতে বিকাশনগরে পুনর্বাসনের জমির পাট্টার কাগজও তুলে দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। সেখানে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া জমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু পরিবারগুলিকে সেখানে নিয়ে গেলে বেঁকে বসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের একাংশ দাবি করেন, ওই জায়গায় তাঁদের অনেককে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। একাংশে খেলাধুলো হয় এবং পুনবার্সনের জন্য পরিবারগুলিকে এখানে বসানো হলে মাঠ নষ্ট হবে বলে স্থানীয় একটি ক্লাবের যুবকেরা দাবি জানান। সমস্যা মেটাতে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক, রাজগঞ্জের বিডিওদের নিয়ে শুক্রবার এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন মন্ত্রী। ওই দিন দেড় ঘণ্টা বৈঠকের পরে মন্ত্রী আশ্বাস দেন, বিকাশনগরের বাসিন্দাদের দাবির বৈধতা বিচার করে পাট্টা দেওয়া হবে। তবে তার জন্য আবেদন করতে হবে। সেই সঙ্গে ফুলবাড়ির বাসিন্দাদের জমি দেওয়ার পরেও এক বিঘা জমি অতিরিক্ত থাকবে। তাতেই খেলার মাঠ হবে। যদিও বাসিন্দারা মন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, আগে তাঁদের জমির পাট্টা দিতে হবে। পরে পুনর্বাসন পাওয়া কামরাঙ্গাগুড়ির বাসিন্দারা পাট্টা পেতে পারেন। তাঁর আগে নতুন কাউকে এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না।
যে ২৪টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা তাদের তরফে দুলাল আনসারি-সহ কয়েকজন জানান, পুনর্বাসনের জায়গায় যাবেন বলে তাঁরা কামরাঙ্গাগুড়ির ঘর ভেঙে ফেলেছিলেন। এখন কার্যত খোলা আকাশের নীচে প্লাস্টিক টাঙিয়ে থাকতে হচ্ছে। এ দিকে, বিকাশনগরের যে এলাকাকে পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের প্রশ্ন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সুষ্ঠু ভাবে সমীক্ষা না করিয়ে কেন ওই জমি চিহ্নিত করে পাট্টা বিলি করল? গরিবদের পুনর্বাসনের নামে দুর্ভোগে ফেলা হলে লাগাতার আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে সিপিএম।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.