কেন্দ্রীয় অনুদান রাজ্য ঠিক মতো খরচ করছে কি না, তা নিয়ে নজরদারির জন্য অর্থ কমিশনের কাছে একযোগে আবেদন জানাল সিপিএম ও কংগ্রেস। শনিবার ওই দুই দলের পাশাপাশি বামফ্রন্টের অন্য শরিকরাও অর্থ কমিশনের কাছে তাদের বক্তব্য জানায়। তারাও একই দাবি তুলেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চতুর্দশ অর্থ কমিশনের কাছে অতিরিক্ত অর্থ সাহায্য দাবি করেছেন। ওই দাবিকে সমর্থন করেও বাম এবং কংগ্রেস দু’ পক্ষেরই বক্তব্য, কেন্দ্রের টাকা ঠিক মতো খরচ হচ্ছে কি না, তা দেখতে অর্থ কমিশন এবং সিএজি-কে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় অনুদানের টাকা উন্নয়ন খাতে খরচ না করে উৎসব ও মেলার পিছনে খরচ করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে ক্লাবগুলিকেও। কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার অভিযোগ, “উন্নয়নের টাকা এ ভাবে অনুৎপাদক ক্ষেত্রে খরচ না করলে রাজ্যের জিডিপি ১% বাড়ত।”
সিপিএমের তরফে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান ওয়াই ভি রেড্ডির কাছে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। পরে আলিমুদ্দিনে অসীমবাবু বলেন, কেন্দ্র তৃণমূল সরকারকে নানা ভাবে ঋণ লাঘবের সুযোগ করে দিয়েছে। উন্নয়ন খাতে অতিরিক্ত অর্থ সাহায্যও করছে। তা সত্ত্বেও এই সরকার বাজার থেকে বিপুল অর্থ ধার করায় রাজ্যের ঋণের বোঝা ক্রমেই ঊর্ধ্বগামী। কংগ্রেসেরও বক্তব্য একই। বিরোধীদের বক্তব্য, ২০১১ সালের মে মাসে বাম জমানার অবসানের সময়ে রাজ্যের উপরে ঋণের বোঝা ছিল এক লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরের শেষে তা বেড়ে দাঁড়াবে আনুমানিক দু’ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকায়।
বৃহস্পতিবার অর্থ কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাম জমানার সুদ গুনতে রাজ্যের কোষাগার থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ৫ বছর রাজ্যের আর্থ-সামাজিক ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য দু’লক্ষ ৫৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। সিপিএম রাজ্যের দাবির দ্বিগুণ, অর্থাৎ, সাড়ে ৫ লক্ষ কোটি টাকা অর্থ সাহায্য দাবি করেছে কমিশনের কাছে। অসীমবাবুর কথায়, “ওঁরা যে টাকা চেয়েছেন, আমাদের তাতে আপত্তি নেই। আমরা আরও বেশি টাকা চেয়েছি। কিন্তু টাকাটা উন্নয়ন খাতেই খরচ করতে হবে।” বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে অসীমবাবুর প্রশ্ন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরও কেন কয়লার রয়্যালটি বাবদ ৮ হাজার কোটি টাকা দাবি করা হচ্ছে না?” |