খ্রিস্টান মিশনারি-সহ সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অভাব-অভিযোগ শুনে তা মেটানোর জন্য একটি সেল গড়বে রাজ্য সরকার।
শনিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রিশ্চিয়ান স্কুলস-এর বার্ষিক সাধারণ সভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ কথা জানালেন। ওই সেল-এর গঠন কেমন হবে, সেখানে কারা থাকবেন, শীঘ্রই এই সব স্থির করে ফেলা হবে বলেও জানান তিনি।
খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলের ওই সংগঠনে এ রাজ্যে প্রায় ৭০০ স্কুল রয়েছে। সেই সব স্কুলের বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত মেটানোর জন্য একটি এক-জানলা পদ্ধতি চালু করার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তার পরেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ওই ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ব্রাত্যবাবু বলেন, “বিকাশ ভবনে, স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের নিয়েই সেল তৈরি হবে। তার কাজই হবে সংখ্যালঘু স্কুলগুলি নিয়ে কাজ করা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন, পেনশন সংক্রান্ত সমস্যা থেকে শুরু করে সব সমস্যার দ্রুত সমাধান করাই হবে এর মূল কাজ।” সংখ্যালঘু স্কুলগুলির পঠনপাঠন ও সার্বিক মানোন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও খুবই উৎসাহী বলে সরকারি সূত্রের খবর। শিক্ষামন্ত্রী এ দিন জানান, দেশের সংবিধান অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কিছু ছাড় রয়েছে। ওই সব সুবিধা তারা যাতে পায়, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেবে। |
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে আলিঙ্গন সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের। রয়েছেন আর্চবিশপ টমাস ডি’সুজা-ও।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রিশ্চিয়ান স্কুলস’-এর বার্ষিক সভায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক। |
ওই সংগঠনের সম্পাদক মলয় ডি’কোস্টা পরে জানান, সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলগুলিতে সরকারই শিক্ষক নিয়োগ করে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রতার কারণে ৭১টি খ্রিস্টান মিশনারি প্রাথমিক স্কুলের ৩৬৪টি শিক্ষক পদের মধ্যে ২৬২টিই এখন শূন্য হয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন মলয়বাবু। তিনি বলেন, “মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক বাছাই ও নিয়োগের কাজ মিশনারি স্কুলগুলি নিজেরাই করে। তাই সেখানে শিক্ষকের তেমন অভাব নেই। কিন্তু প্রাথমিকে সমস্যা আছে।” সংগঠনের সভাপতি আর্চবিশপ অব ক্যালকাটা টমাস ডি’সুজা-ও শিক্ষক পদ ফাঁকা থাকার কথা জানিয়েছেন।
শিক্ষামন্ত্রী পরে জানান, এই সব স্কুল নিজেদের মতো করে শিক্ষক নিয়োগ করতে পারে কি না, তা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে। এ দিনই বিভিন্ন জেলার স্কুল পরিদর্শকদের সঙ্গে ওই সংগঠনের সদস্যদের বৈঠকে বসার সুযোগ দিতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাতে সম্মতও হন ব্রাত্যবাবু।
ডেরেক পরে বলেন, “ছাড়পত্র দেওয়া, সংখ্যালঘু তকমা দেওয়া, শিক্ষকদের বেতন, পেনশন সংক্রান্ত জটিলতা মেটানো ইত্যাদি নিয়ে নানা রকম সমস্যা হয়। জেলা পরিদর্শকদের সঙ্গে আলোচনা হওয়া জরুরি।” সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে আগামী বছর জেলায় জেলায় স্কুল পরিদর্শকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং ডেরেক নিজেও তাঁদের সঙ্গে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
সংগঠন সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে স্কুলগুলিকে ছাত্রভর্তির পদ্ধতি আরও স্বচ্ছ করার কথা বলেন ডেরেক। পাশাপাশি, ছাত্র ও অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুল প্রধানদের আরও সহজ ভাবে মেশার পরামর্শও দেন তিনি। |