|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
নাম মনে নেই, ওঁকে মিস্টার হোসপাইপ বলেই তো ডাকতাম। যখন আড্ডা হত, নানা জন নানা বিষয়ে কথা বলতেন, কেউ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কেউ লেমন ঘাসে চাষ। উনি চুপচাপ থাকতেন। ‘কী দাদা, আপনি চুপচাপ কেন, কিছু বলুন...’ বললে উনি বলতেন, ‘কী বলব, আমি তো হোসপাইপ ছাড়া কিচ্ছু জানি না।’ উনি ছিলেন আমাদের ভ্রমণসঙ্গী। ২০০৩ নাগাদ আনন্দবাজারে একটা বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম ‘লাওস-কম্বোডিয়া ভ্রমণের জন্য উৎসুক ব্যক্তি চাই।’ দেখা করলাম। এই ভ্রমণের উদ্যোক্তা এক জন চিকিৎসক। ওঁরও ওই দিকটা দেখার খুব ইচ্ছে, তখনও কনডাক্টেড ট্যুর-এ এই অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হত না, তাই সঙ্গী খোঁজার জন্য বিজ্ঞাপন। আমরা আট-ন’জনের একটা দল হয়েছিলাম। ওই দলে সাংবাদিক, অধ্যাপক, ব্যবসায়ী ইত্যাদি নানা পেশার লোক ছিলেন। আর ছিলেন মিস্টার হোসপাইপ।
হোটেলে আড্ডা হত। ধরা যাক, ভাত নিয়ে আড্ডা হচ্ছে। রায়গঞ্জের তুলাইপাঞ্জি চালের কথা উঠল। কেউ বলল ব্ল্যাক রাইস হয় ফিলিপিন্স-এ, কেউ বলল তাইল্যান্ড-চিন-জাপানের লোক চটচটে ভাত
|
ছবি: সুমন চৌধুরী। |
খায়। স্টিকি রাইস। হোসপাইপ’দা চুপচাপ। সবাই বলল, আপনি কিছু বলুন...। উনি বলছেন রাইস ঠান্ডা হয়ে গেলে শক্ত হয়ে যায়। জলে ভিজিয়ে রাখলে অতটা শক্ত হয় না। রাবার’ও গ্যালভানাইজ করলে নরম থাকে, ঠান্ডা হলেই শক্ত। রাবারের মধ্যে সালফার মিশিয়ে গরম করে রোলিং করতে হয়। সেই নরম রাবারের ভিতর দিয়ে রেয়ন মেশানো কটন সুতো পাস করিয়ে দিতে হয়। সুতোর গায়ে রাবার জড়িয়ে গেল, ব্যস হয়ে গেল হোসপাইপ বুনবার সুতো। হয়তো কথা হচ্ছে ‘মমি’ নিয়ে। এক জন বলল, কাপড়ে রজনের আস্তরণ দিয়ে, সেই কাপড়কে ওয়াটারপ্রুফ করে দেহটা পেঁচিয়ে ফেলা হত। অন্য কেউ বলল, যদি মিশরে রাবারগাছ
থাকত, তা হলে রাবারের রসে বডিটা পেঁচিয়ে দেওয়া যেত। রাবার দারুণ জিনিস।
হোসপাইপ দাদা তখন সরব না না, রাবার খুব একটা দারুণ জিনিস নয়। অসুবিধেও আছে। হোসপাইপে রাবারের পাইপ ইউজ করা হয় না, বেঁকালেই জল আটকে যাবে। দমকলের হোসপাইপ দেখেছেন তো, পিয়োর কটন সুতো। .১৫ মিলিমিটার পুরু, তার উপর রাবার কোটিং...।
ওঁর কাছ থেকে জেনেছিলাম, প্রথম যৌবনে উনি ডানলপ কোম্পানিতে সাধারণ শ্রমিক হয়ে ঢোকেন। তখন সব সাহেবসুবোদের কারবার। টায়ার হত। টায়ারের ভিতরে সুতোর জালিও থাকত। সে সময় ভারতে হোসপাইপ তৈরি হত না, বিদেশ থেকে আনতে হত। উনি রাবার’কে খুব ভালবেসে ফেললেন। রাবার’কে গলানো যায় না, নানা কায়দায় রাবার’কে নরম করা যায়, নানা রকমের নরম। সুতোর উপর রাবারের আস্তরণ ফেলার কায়দাও বের করে ফেললেন, এবং বিদেশি হোসপাইপের অনুকরণে বানিয়েও ফেললেন হোসপাইপ, মেড ইন ইন্ডিয়া। ইঞ্জিনিয়াররা এই কায়দাটাকে উন্নত করল, এবং প্রোডাকশন শুরু হল। কোম্পানির কর্তারা খুশি হয়ে ওঁকে লাভের একটা ছোট্ট অংশ রয়্যালটি দিতে লাগল। সেই রয়্যালটির পরিমাণ অনেক। অনেক টাকা জমিয়ে ফেলেছেন, বছরে অন্তত বার দুয়েক ফরেন ঘোরেন। স্ত্রী গত হয়েছেন, দুই কন্যা পাত্রস্থ। একাই লাইফ এনজয় করেন। তখন ওঁর বয়স ছিল ৭৮। আশা করি এখনও লাইফ এনজয় করে যাচ্ছেন।
আমরা ঘুরতে ঘুরতে গেলাম আংকোর ভাট। বিশাল মন্দির। অসাধারণ ভাস্কর্য! খুব সরু এবং ঝুঁকিপূর্ণ সিঁড়ি রয়েছে মন্দিরের কিছুটা উপরে ওঠার জন্য। ধরার জন্য লোহার হাতল ছিল। আমি তখন যদিও পঞ্চাশ পেরোনো, তবুও দলে কনিষ্ঠতম। বললাম, সিঁড়ি দিয়ে উঠব। মিস্টার হোসপাইপ বললেন, আমিও উঠতে চাই, একটু হেল্প করবেন?
আমি অবাক। এই বয়সে এত সাহস? বললাম, আপনি আগে আগে উঠুন, আমি পিছনে আছি। উনি ধীরে ধীরে, রড ধরে উঠছিলেন। পিঠে ব্যাগ। ঠিক উঠে গেলেন। একটা চাতাল। ছোট চূড়াগুলো চার দিকে। একটা বেদিতে বসে পিঠের ব্যাগটা খুলে একটা হুইস্কির বোতল বের করে চুমুক দিয়ে একটা পরম তৃপ্তির হাসি হেসে বললেন, এই শখটাও মিটল।
কী শখ ছিল আপনার? বললেন, এখানে বসে হুইস্কি খাওয়া।
বলি, শুধু এই জন্যই এত দূর এসেছেন স্যর?
উনি বললেন, হোসপাইপের পয়সাগুলো এ ভাবেই বের করে দিই ভাই, চিনের প্রাচীরের উপর দাঁড়িয়ে খেয়েছি বাইজিউ। ফেমাস চাইনিজ ওয়াইন। যে দেশের যা। আইফেল টাওয়ারের মাথায় উঠে আঁতেঁলে রেড ওয়াইন, ভেনিসে গন্ডোলায় বসে জ্যাক্স ব্র্যান্ডি, পেরুর মাচুপিচু-তে টাকিলা, ক্রেমলিনের বাগানে ঝপ করে দু’ঢোক ব্রেজনেভ ভদকা, লিসবনের আল কাঁতরা’র ছাদে বসে রোজ ওয়াইন, গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে দাঁড়িয়ে জিন-টনিক, পম্পেই শহরের ধ্বংসাবশেষে দাঁড়িয়ে, ভিসুভিয়াসের দিকে তাকিয়ে বিখ্যাত জাপানি লিকার মুসুকাতু, যে ভিসুভিয়াস ওর নিজস্ব হোসপাইপে লাভা ঢেলে এক দিন পম্পেই শহরটা ধ্বংস করেছিল। তাজমহলের দাওয়ায় বসে ব্ল্যাক লেবেল-ও মেরেছি, সবই হোসপাইপের দয়া। কিন্তু কলকাতার মনুমেন্টের মাথায় দাঁড়িয়ে বাংলা খাওয়ার শখটা মিটল না ভাই।
সে শখ এত দিনে মেটাতে পেরেছেন কি না জানি না।
কিন্তু সে দিন বুঝেছিলাম, দাদা হোসপাইপ ছাড়াও আরও কিছু জানেন। |
|
সুমিত্র বসাক
|
|
• ফেসবুকে ঢুকে ক্রিকেট সুপারস্টারের প্রোফাইল খুঁজে আশৈশব ভক্তি ও ক্রেজ জানিয়ে আলাপ করতে গেলেন।
রিপ্লাইও এল: এত বড় ফ্যান যখন, চ্যারিটির জন্য সাংঘাতিক মোটা ডোনেশন দে! |
|
|
• নতুন বান্ধবীর সঙ্গে সিনেমা-অ্যাপো। টিকিট কেটে
দাঁড়িয়ে আছেন। সে দেরি করছে। আরও। শেষে যত
ক্ষণে এল, আপনি টেনশনের
চোটে টিকিট দুটো পাকিয়ে
গুটিয়ে কুচি কুচি করে ফেলেছেন। ও দিকে ‘হাউসফুল’! |
• দুর্গাঠাকুরের সিংহটা পাড়ার ছেলেরা কিছুতে বিসর্জন দিতে
দিল না। বলল, এত ভাল হয়েছে, ওরা প্রিজার্ভ করবে।
কিন্তু জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় প্যান্ডেলে গিয়েই সিংহটাকে
আপনার আগাপাশতলা চেনা চেনা ঠেকতে লাগল। |
|
|
|
|
• রেসিং-ট্র্যাকে কেরিয়ার শেষ করার প্রায় ৫০ বছর পর বিজ্ঞাপন করার ডাক পেলেন মিলখা সিংহ। কলকাতার এক সংস্থার তৈরি করা চ্যবনপ্রাশের অ্যাড-মুখ হতে চলেছেন তিন অলিম্পিকে দৌড়নো এই অ্যাথলিট, কর্তৃপক্ষের মতে ৮৪ বছর বয়সেও প্রাক্তন দৌড়বীরটি তারুণ্য ও তাকত-এর প্রতীক, তাই তাঁকেই বেছে নেওয়া। কিন্তু যা ওপেন সিক্রেট: এই টি-টোয়েন্টিধন্য শর্ট পাবলিক মেমরিতে মিলখা অ্যাদ্দিন ছিলেন প্রাগৈতিহাসিক (নন)এনটিটি, ফারহান আখতার-অভিনীত বলিউডি ছবি ‘ভাগ মিলখা ভাগ’-এর দৌলতে সম্প্রতি ফিনিক্সপ্রতিম রেজারেকশন পেয়েছেন। এমনিতে স্বদেশি অ্যাথলিটদের নিয়ে আম-ভারতীয় মোটে মাথা ঘামান না, বিজ্ঞাপন-জগৎ তো দূরস্থান। সদ্য চোখফোটা বাচ্চাও যেখানে টিভির পরদায় সচিনের রিটায়ারমেন্ট-হাহাকারে ওঁয়াওঁয়া সঙ্গত করছে, সেখানে মিলখার নাম জানে শুধু ‘উড়ন্ত শিখ কে?’-র কুইজ-উত্তর গাঁতানো স্কুলপড়ুয়ারা। এই বাজারে সিনেমার মস্তান ও ক্রিকেটের গ্ল্যামারাস টুয়েলফ্থ ম্যানকে টপকে বিজ্ঞাপনে ডাক পাচ্ছেন একে রাম-প্রাক্তন তায় বৃদ্ধ মিলখা, অভাবনীয়। ধন্য কলির পপুলার কালচার, যার ছোঁয়ায় ফসিলও পরশপাথর হয়। ফারহানের সঙ্গে মিলখার আদলের তিলমাত্র মিল না থাকুক, ছবি হিট= হিমঘরে রাখা ইমেজ ফিট= জবরদস্ত বিজ্ঞাপনী ট্রিট। এ বার কে কোথায় ভাগবে, দেখার।
• মস্কো-র রেড স্কোয়ারে রাশিয়ান পারফরমেন্স আর্টিস্ট পিয়োতর পাভলেনস্কি সম্পূর্ণ নগ্ন দেহে পাথর-বাঁধানো রাস্তার সঙ্গে পেরেক দিয়ে গাঁথলেন নিজের যৌনাঙ্গ। গণবিপ্লবের আঁতুড়ঘর, একদা সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া আজ ‘পুলিশ স্টেট’ হয়ে উঠছে, বাড়ছে সরকারি দুর্নীতি, মানবাধিকার বিপন্ন এই মত প্রকাশ করে, এইগুলির বিরুদ্ধে মূর্ত প্রতিবাদ করতে, শিল্পীর রক্তাক্ত আত্মনিগ্রহ। জনতা শিউরে উঠে দেখল, বিশ্বও। রাষ্ট্রের আগ্রাসনের মুখে শিল্পকে আঁকড়ে চির দিন রুখে দাঁড়িয়েছে মানুষ, লক্ষ বই-ছবি-গান-অভিনয় সাক্ষী। কিন্তু নিজের শরীরের অমন স্পর্শকাতর অঙ্গটিকে তীব্র তীক্ষ্ণ যন্ত্রণায় বিদ্ধ করে হাত-পা ছড়িয়ে অসহায় নতশির বসে থাকা ওই নিপীড়ন-দ্যোতক শরীর-স্থাপত্য অবশ্যই অভিনব। যৌনাঙ্গের অন্য ব্যঞ্জনাও আছে, এটি বেপরোয়া লাগামছাড়া আকাঙ্ক্ষা ও সৃষ্টির প্রতীক। সেটিকে কেউ অমন রুদ্ধ করলে বোঝানো যায়, এখানে আত্মার সর্বাধিক উড়ান-অঞ্চলটিই টুঁটি-টেপা। অর্থাৎ স্বাধীনতার হাওয়ায় বিষ। ধারণা ও প্রয়োগের স্পর্ধাকে কুর্নিশ। |
|
|
১৮৭
সচিন তেন্ডুলকর ভারতের
যত নম্বর টেস্ট প্লেয়ার। |
১০০০০০
যত টাকায় এক বছরের জন্য কাবেরী নামের একটি বাঘিনিকে দত্তক নিল মাইসোর-এর ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাংক। |
১০৮
যত জন কম্যান্ডো আছেন নরেন্দ্র মোদী-র সুরক্ষার দায়িত্বে। |
১১০০০০
ইংল্যান্ডে নিলামে যত পাউন্ডে
বিক্রি হল মহাত্মা গাঁধীর চরকা।
|
৯৫
বার্ষিক যত মিলিয়ন ডলার আয়ের নিরিখে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি রোজগেরে
সেলেব্রিটি-জোড়ি মার্কিন পপ গায়িকা বেয়ন্স ও র্যাপার জে জি। |
১৬২
বছরে এক জন মেক্সিকোবাসী গড়ে যত লিটার ঠান্ডা পানীয় পান করেন (বিশ্বে সব চেয়ে বেশি)।
|
১৪০০০০০০০
চেন্নাইয়ে শুরু হওয়া বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে মোট পুরস্কারমূল্য যত টাকা। জয়ী পাবেন ৮৪০০০০০০ টাকা, রানার্স ৫৬০০০০০০ টাকা।
|
১১৫
কলকাতা-হলদিয়া-সাগরদ্বীপের মধ্যে ২১২ কিলোমিটার জলপথে যতগুলো ডুবে যাওয়া জাহাজ আছে বলে জানা গেল কলকাতা বন্দরের রিপোর্টে।
|
৯৬
জিনগত ভাবে বাঘ ও বেড়ালের মধ্যে যত শতাংশ মিল। |
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
সাপের মতো লাইন, কোনও মতে ঢুকেছি।
স্বর্গ হাতের কাছে। পেয়ে যাব দু’কেজি।
বোকারাই পোকা-পচা বেছে চায় কিনতে।
সরকারি আলু ঝোলে ঘাসফুলবৃন্তে। |
বিরোধীদের ঘর জ্বালানোর হুকুম ছিল সে-বার,
দিলাম নতুন ফতোয়া আজ... কবজি কেটে নেবার।
এ সব বললে ক্ষতি কী?
সবটাই তো ‘প্রতীকী’!
একটু গালি দিতেই হবে, কাজটা যে দেশসেবার! |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
বিবর্তনের ঝামেলায় যে নেই, সে-ই ফিটেস্ট সার্ভাইভর |
|
|
|
আপনিও লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের একটা রিপোর্ট? ঠিকানা:
টাইম মেশিন,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০ ০০১ |
|
|
|
|
|
|
|