ভারতীয় দলের ড্রেসিং রুমে আর থাকবেন না সচিন তেন্ডুলকর, এই কথা ভাবলেই মনমরা হয়ে যাচ্ছেন তিনি ও তাঁর সতীর্থরা। তাই রোহিত শর্মাদের টেস্ট সিরিজ জয়ের আনন্দ গ্রাসই করে নিল সচিন-বিদায়ের বিষাদ। সিরিজ সেরা রোহিত নিজেই স্বীকার করে নিলেন সে কথা।
যিনি এখন তাঁর ক্রিকেট জীবনের সেরা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, সেই রোহিতের গলায় যতটা উত্তেজনা থাকার কথা, ততটা ছিল না শনিবার দুপুরে। বরং বিষাদের সুর তাঁর গলায়। কারণটা যে অবশ্যই সচিনের অবসর, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। বললেন, “এখন থেকে আর সচিন তেন্ডুলকর আমাদের সঙ্গে মাঠে নামবে না, এটাই বারবার মনে হবে। দল জিতেছে, আমি খুশি। এতে আমার অবদানও রয়েছে, এটাও অবশ্যই ভাল ব্যাপার। কিন্তু আগামী কয়েক দিন সচিনের অবসরের রেশ আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে থাকবে।”
শনিবার যে ভাবে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন, যে ভাবে সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ার কাছ থেকে বিদায় চাইলেন, তাতেও সম্মোহিত তাঁর ভারতীয় দলের সতীর্থরা। এই নিয়ে রোহিত বলেন, “মাঠে সচিন পাজির বিদায়ী বক্তৃতা শুনে তো আমরা আবেগে ভাসছিলাম। এই কথাগুলোই বুঝিয়ে দিচ্ছিল ওর গুণের কথা। যাঁদের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছে, যাঁরা ওর পাশে দাঁড়িয়েছে, প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানিয়েছে। এক জন অসাধারণ মানুষের অসাধারণ গুণের পরিচয় এ ভাবেই পাওয়া যায়। আমি তো শুধু ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। চার পাশে আর কী হচ্ছিল, সে সবে খেয়ালই ছিল না আমার। এটাই যে হেতু সচিনকে দেখার শেষ সুযোগ, তাই সেই সুযোগটা আর ছাড়তে চাইনি।”
শুধু কি রোহিত? ভারতীয় দলে তাঁর সতীর্থরা প্রত্যেকেই সচিনের গুণমুগ্ধ। এর আগে বারবার তাঁদের কথায় এসেছে সচিন-প্রশস্তি। সচিন-পরবর্তী ভারতীয় ড্রেসিং রুম নিয়ে রোহিতও তাঁদের মতোই বললেন, “আর তো ড্রেসিং রুমে ওকে পাব না। শুধু তো আর ব্যাটিংয়ের জন্য নয়, জীবনে উন্নতির জন্যও ওর কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা খুব প্রয়োজন ছিল। সেগুলোও এ বার থেকে আর পাব না। জানি আমাদের এই শোকটা কাটিয়ে উঠতে হবে। কিন্তু কত তাড়াতাড়ি পারব জানি না।” সচিনকে নিয়ে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে রোহিত বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় ২০০৮-এ ওর সঙ্গে প্রথম ব্যাট করতে নামা আমার। তার পর ২০১০-এ দক্ষিণ আফ্রিকায়। তখন ওঁর সঙ্গে কথা বলে উপলব্ধি করেছিলাম, বিদেশে সাফল্য পাওয়াটা মোটেই সোজা নয়। একটা ফোনেই আমি ওকে পেয়ে যেতাম। যখনই ব্যাটিংয়ের টিপস দরকার হত, একটা ফোন করলেই তা পেয়ে যেতাম। তবে শুধু ব্যাটিং নয়, নিজেকে কিভাবে মাঠে রাখতে হয়, তাও আমি ব্যক্তিগত ভাবে শিখেছি সচিনের কাছ থেকে। এটাই মিস করব।”
দক্ষিণ আফ্রিকায় যখন টেস্ট সিরিজ খেলতে যাবে ভারত, তখন আর চার নম্বরে ব্যাট হাতে নামতে দেখা যাবে না সচিনকে। এই জায়গাটা কি তিনিই পূরণ করতে চান? উত্তরে রোহিত বলেন, “তা নিয়ে ভাবছিই না। সবে তো দুটো ম্যাচ খেলেছি। অনেক দূর যেতে হবে আমাকে।” |