ইস্টবেঙ্গল-২ (লোবো, চিডি)
এরিয়ান-১ (স্ট্যানলি-পেনাল্টি) |
মোহনবাগান কোচ করিম বেঞ্চারিফার উপস্থিতিতে গোলে ফিরলেন ইস্টবেঙ্গলের এডে চিডি। সাত ম্যাচ পর। ডার্বির ঠিক আট দিন আগে।
নাইজিরিয়ান গোলমেশিনের জোরালো শট এরিয়ানের গোলে আছড়ে পড়তেই, নিজের অজান্তেই যেন প্রেসবক্সে বসে থাকা বাগান কোচের মুখ থেকে বেরিয়ে এল, “ওয়াও! গুড গোল।”
পরক্ষণে মরক্কান কোচের কপালের বলিরেখায় যেন স্পষ্ট চিন্তার ভাঁজ। মাঠ ছাড়ার আগে করিম অবশ্য বলে গেলেন, “চিডিকে আটকানোর অস্ত্র আমার হাতে মজুত রয়েছে।” রঘু নন্দীর দলের বিরুদ্ধে গোলের খরা কাটিয়ে ওঠা লাল-হলুদ স্ট্রাইকারের আবার পাল্টা হুঙ্কার, “ডার্বির গোলগুলো পকেটে নিয়ে ঘুরছি।”
জাতীয় দলে চলে গিয়েছেন লাল-হলুদের চার ফুটবলার। চোটে কাবু আরও চার। এই অবস্থায় টিম গড়তেই সমস্যায় পড়েছিলেন স্টপ গ্যাপ কোচ রঞ্জন চৌধুরী। কিন্তু তাঁর সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনলেন চিডি। শুধু গোলই করলেন না, গোল করালেনও। বারবার আক্রমণ সচল রাখলেন চোটের পর প্রথম খেলতে নামা সুয়োকার সঙ্গে জায়গা অদল-বদল করে। |
গোলের পরে চিডি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
কলকাতা লিগ ম্যাচের শুরু থেকেই এ দিন ইস্টবেঙ্গল ছিল গোলের জন্য মরিয়া। গত কয়েক বছর এরিয়ান গাঁট লাল-হলুদের। প্রথম মিনিটেই চিডির দুরন্ত হেড এরিয়ান কিপার শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে লেগে বেরিয়ে যায়। তবে চিডির গোলের পর লোবো, তুলুঙ্গারা যখন তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসছেন, তখনও যেন ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারেননি ম্যাচের নায়ক। বহু দিন অপেক্ষার পর গোল পেয়ে ক্ষণিকের জন্য নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন যেন। ম্যাচের পর বললেন, “গোল না পেয়ে খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। গোল পাওয়ার জন্য পাগলের মতো একা একা অনুশীলন করে গিয়েছি। কোচকে অনুরোধ করেছিলাম, এরিয়ান ম্যাচে পুরো খেলানোর জন্য। গোল পেয়ে আবার হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলাম মনে হচ্ছে। পরের ম্যাচগুলোতেও গোল করতে হবে।’’
বিরতির আগেই কেভিন লোবো এবং চিডির গোলে ২-০ এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। লোবোর গোলও এসেছে চিডির পাস থেকেই। কিন্তু বিরতির মিনিট পনেরো পেরিয়ে যাওয়ার পর খেলা থেকে হারিয়ে যেতে থাকেন অ্যালভিটো, তুলুঙ্গা, সুয়োকারা। মাঝমাঠের দখল নিতে শুরু করে রঘু নন্দীর ছেলেরা। ডার্বি ম্যাচের কথা ভেবেই সম্ভবত আনফিট সুয়োকাকে চুরাশি মিনিট পর্যন্ত মাঠে রেখেছিলেন রঞ্জন। কিন্তু বিরতির পরই জাপানি মিডিওর দম শেষ হয়ে গিয়েছিল। তার প্রভাব পড়ে ম্যাচেও। সুয়োকা নিজেদের বক্সে ফাউলও করেন স্ট্যানলিকে। পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমায় এরিয়ান। ম্যাচের পর জায়ান্ট কিলার হিসাবে পরিচিত এরিয়ান কোচ রঘু স্বীকার করলেন, “চিডির জন্যই এ দিন হারতে হল আমাদের।”
ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, খাবরা, সৌমিক, গুরবিন্দর, রবার্ট, আলভিটো (বলজিৎ), লোবো, সুবোধ, তুলুঙ্গা (দীপঙ্কর), সুয়োকা (লেন), চিডি। |