ফের একটা ছোট্ট লাফ। পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পাকাপাকি ভাবে লাল গ্রহের দিকে রওনা দেওয়ার আগে আরও একটু দূরত্ব বাড়াল মঙ্গলযান। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে মহাকাশযানটিকে পৃথিবী থেকে ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৭৪ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে।
সংস্থার মুখপাত্র বি আর গুরুপ্রসাদ শনিবার জানান, আপাতত এটিই পৃথিবী থেকে মঙ্গলযানের সর্বোচ্চ দূরত্ব। আগামী ৩০ নভেম্বর রাতে ফের মঙ্গলযানের ইঞ্জিন চালু করা হবে। সে দিনই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পাকাপাকি ভাবে মঙ্গলের দিকে রওনা দেবে সে। প্রায় ৩০০ দিনের যাত্রা শেষে ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলের কক্ষপথে ঢুকবে ভারতের এই দূত।
গত ৫ নভেম্বর শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে রওনা দেওয়ার পর থেকে পৃথিবীর চার পাশে চক্কর কাটছে মঙ্গলযান। মাঝে মাঝে লাফ দিয়ে দিয়ে দূরত্ব বাড়ানো হচ্ছে তার। ইসরো জানিয়েছে, গত রবিবার রাতে চার নম্বর লাফ দিতে গিয়ে যান্ত্রিক সমস্যায় পড়েছিল যানটি। ফলে সে দিন রাতে নির্দিষ্ট দূরত্বে পাঠানো যায়নি তাকে। সংস্থার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, রবিবার রাতে পৃথিবীর থেকে প্রায় ৭১ হাজার কিলোমিটার দূরে ছিল যানটি। তাকে সে দিনই প্রায় ১ লক্ষ কিলোমিটার দূরে পাঠানোর কথা ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের ফলে ৭৮ হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে পাঠানো যায়নি। মঙ্গলবার ভোরে ফের ইঞ্জিন চালু করে যানটিকে পৃথিবী থেকে ১ লক্ষ ১৮ হাজার কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হয় মঙ্গলযানকে।
ইসরো সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ভোর থেকে টানা চার দিন পৃথিবী থেকে প্রায় ১ লক্ষ কিলোমিটার দূরেই চক্কর কেটেছে এই মহাকাশযান। শুক্রবার রাত ১টা ২৭ মিনিটে ফের তার ইঞ্জিন চালু করা হয়। মিনিট চারেকের মধ্যেই সে আরও ৭৪ হাজার কিলোমিটার দূরে চলে যায়।
ইসরো সূত্রের খবর, ১ লক্ষ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব থেকেই গতি বাড়িয়ে লাল গ্রহের দিকে রওনা দিতে পারত মঙ্গলযান। প্রাথমিক ভাবে তেমনটা ভেবেওছিলেন সংস্থার কর্তারা। সেই কারণেই মঙ্গলবার লাফ দেওয়ার পর মঙ্গলযান পৃথিবী থেকে সর্বোচ্চ দূরত্বে পৌঁছে গিয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরবর্তী কালে ফের যান্ত্রিক গোলযোগের ঝুঁকি না নেওয়ার কথা ভেবেই আরও একটু দূরত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইসরো। |