সকালে সূর্যর সঙ্গে চলতি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের গেমগুলো নিয়ে আলোচনার পর থেকেই মনে হচ্ছিল শুক্রবার কার্লসেনকে স্বমহিমায় দেখা যাবে। আগের চারটে গেমে আনন্দের হোমওয়ার্ক আর ডিফেন্স মেপে নেওয়ার পর কার্লসেন সম্ভবত জেতার একটা মরিয়া চেষ্টা চালাবে পঞ্চম গেমে। আর যা ভাবা তা-ই হল।
আগের দুটো গেমে রেটি ওপেনিংয়ের পর এ দিন ইংলিশ ডিফেন্সে শুরু করে আশঙ্কাটাই সত্যি করে তুলল কার্লসেন। এই ওপেনিংয়ের অনেক বেশি বৈচিত্র। বোর্ডের যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা সহজে করা যায়। তা-ও কার্লসেনের মধ্যে যতই টগবগে তারুণ্যের মরিয়া ভাব থাক, প্রচণ্ড অভিজ্ঞ আনন্দ এত সহজে ওর ফাঁদে পা দেবে আন্দাজ করতে পারিনি।
গত দু’বছর ধরে কার্লসেনের এই ফাঁদে প্রায় সবাই পা দিচ্ছে। তাড়াতাড়ি মন্ত্রী এক্সচেঞ্জ করা। খেলাটাকে লং গেমে নিয়ে যাওয়া আর এন্ড গেম টেকনিক প্রয়োগ করা। জেনেবুঝেও কার্লসেনের এই ফাঁদ অনেকেই এড়াতে পারেনি। আনন্দও দেখলাম পারল না। স্লাভ ডিফেন্সে শুরু করে ১৫ নম্বর চালে আনন্দের মন্ত্রী এক্সচেঞ্জ করতে রাজি হয়ে যাওয়াটাও কার্লসেনের পক্ষে গিয়েছে। এর পরই গেমের রাশ চলে যায় কার্লসেনের হাতে।
|
পঞ্চম গেম-এ আনন্দ ও কার্লসেন। চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই। |
ইংলিশ ডিফেন্সে শুরু করে পরে মার্শাল গ্যামবিটের নিরাপদ লাইনে খেলছিল কার্লসেন। ওর প্রিয় লং গেমের আদর্শ পরিস্থিতি ছিল। মিডল গেমেও ওরই কর্তৃত্বের মধ্যে আনন্দ ভুল করে বসায় কাজটা আরও সহজ হয়ে যায় নরওয়ের চ্যালেঞ্জারের। আনন্দের ৩৪ নম্বর চালে নৌকো অ্যাকটিভ করতে যাওয়ার ভুলের পরেও কিন্তু গেম ড্র করার সুযোগ ছিল। কিন্তু ৪৫ নম্বর চালে সেই নৌকোরই আবার ভুল চালে আনন্দের ম্যাচে ফিরে আসার সব আশা শেষ হয়ে যায়। অসাধারণ এন্ড গেম টেকনিকে ৫৮ চালের পর ম্যাচটা মুঠোয় পুরে নেয় কার্লসেন।
পাঁচ গেমের পর কার্লসেনের পয়েন্ট ৩। আনন্দের ২। এখনও সাতটা গেম বাকি। লড়াইয়ে ফেরার যথেষ্ট সময় রয়েছে। এর আগেও এ রকম পরিস্থিতি থেকে আনন্দ উঠে দাঁড়িয়েছে। আমার বিশ্বাস, এ বারও দাঁড়াবে। যদিও হারের পর টিভি-তে সাংবাদিক বৈঠকে ওর বডি ল্যাঙ্গুয়েজটা ভাল লাগল না। একটু বেশিই হতাশ লাগছিল। ষষ্ঠ গেমে ওকে পাল্টা জবাব দিতে হলে ওপেনিংয়ে কার্লসেনকে চমকে দিতে হবে। তবেই জেতা সম্ভব। দেখা যাক, আনন্দ জবাবটা এ বার কী ভাবে দেয়। |