কয়েক দফায় আলোচনার পরেও রেল গতি নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব না মানাতেই ডুয়ার্সের জঙ্গল এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে চলেছে বলে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের কর্তাকে অভিযোগ জানালেন জলপাইগুড়ির বনাধিকারিকরা।
শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের সহ ইন্সপেক্টর জেনারেল চৈতন্য মূর্তি নাগরাকাটার জলঢাকা সেতু লাগোয়া জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাওয়া রেল লাইন পরিদর্শন করেন। গত বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ওই এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় পাঁচটি হাতি মারা যায়। একটি গর্ভবতী হস্তিনী জখম হয়। পরিদর্শনের সময়ে বনাধিকারিকরা ঘটনার দিন ট্রেনের গতি কতটা বেশি ছিল তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের কর্তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। পরে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের সহ ইন্সপেক্টর জানান, দিল্লিতে ফিরে তিনি ঘটনাটি নিয়ে সবিস্তারে রিপোর্ট পেশ করবেন। |
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার এবং বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও সুমিতা ঘটক জানান, ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার না করা হলে দুর্ঘটনা বাড়বে। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করলেও কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের কর্তা বনাধিকারিকদের জানান, তাঁরাও মনে করেন জঙ্গল এলাকায় রেল লাইনের পাশে নজরমিনার অথবা সাবওয়ে তৈরি করে সমস্যার সমাধান হবে না। বুনো হাতি কোন পথে চলাচল করবে সেটা কেউ জানে না বলেই নজরমিনার বা সাবওয়েতে সমাধান হবে না। একমাত্র উপায়, জঙ্গল পথে ট্রেনের গতি কমিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার থেকে ৩০ কিলোমিটার করা এবং বিকেল পাঁচটা থেকে পরের দিন সকাল নটা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখাও জরুরি বলে তিনি জানান। দেশের বেশ কিছু এলাকায় ওই পদ্ধতিতে বন্যপ্রাণ ও ট্রেনের সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলেও তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। বনাধিকারিকরা তাঁকে ওই বিষয়ে রেল মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার অনুরোধ করেন।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে চৈতন্য মূর্তি এ দিন জখম হস্তিনীকে দেখতে যান। রেল লাইনের পাশে তাবু টাঙিয়ে সেটির চিকিৎসা চলছে। ওই সময় বন কর্মীদের কয়েকজন জানান, বৃহস্পতিবার রাতেও এলাকায় হাতি এসেছে। বনাধিকারিকরা জঙ্গল এলাকার মানচিত্র সামনে রেখে কেন্দ্রীয় কর্তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন ঠিক কত কিলোমিটার রেল পথে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ জরুরি। পরে চাপরামাড়ি বনবাংলোতে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের কর্তার সঙ্গে বনাধিকারিকরা বৈঠকে বসেন।
|