নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ব্লক অফিস প্রাঙ্গণের বেশ কিছু পুরনো গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে বেলপাহাড়ি ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে। গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত সমিতি-কর্তৃপক্ষ ও ব্লক প্রশাসনের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের ক্ষমতাসীন বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ কাঞ্চন মাণ্ডি এবং তৃণমূলের স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য বিকাশ সিংহের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার ব্লক অফিস প্রাঙ্গণ থেকে কাটা গাছগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে বন দফতর।
বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বংশীবদন মাহাতো বলেন, “গত কয়েক দিনে ব্লক অফিস প্রাঙ্গণের নিম, শিরিষ, আকাশমণির মতো বেশ কয়েকটা গাছ কেটে ফেলা হয়। আমি ভেবেছিলাম পূর্বতন সিপিএম বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়তো গাছগুলি কাটা হয়েছে। কিন্তু বন দফতরে খবর নিয়ে জানতে পারি, গাছ কাটার ব্যাপারে প্রশাসনের তরফে বন দফতরকে আগাম কিছু জানানো হয়নি। গাছ কাটার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতিও নেওয়া হয়নি। এরপরই বেলপাহাড়ি রেঞ্জ অফিসারকে লিখিত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। কার নির্দেশে গাছগুলি কাটা হল তা তদন্ত করে দেখার দাবি করেছি আমরা।”
বেলপাহড়ি ব্লক অফিস প্রাঙ্গণে বহু পুরনো গাছ রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, ডালপালা বিস্তৃত কয়েকটি গাছের জন্য অফিস প্রাঙ্গণের বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ ব্যহত হচ্ছিল। এছাড়া প্রশাসনিক ভবনটির আশপাশে কয়েকটি দীর্ঘ গাছ এমন ভাবে ছাদ ঘেঁষে নুইয়ে পড়েছিল, যার ফলে ভবনের ছাদ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে গাছ কাটার দায় নিতে চাননি বেলপাহাড়ির বিডিও সর্বোদয় সাহা। তাঁর দাবি, “গাছগুলি যখন কাটা হয়েছে, আমি তখন ছুটিতে ছিলাম। কার নির্দেশে গাছগুলি কাটা হয়েছে আমার জানা নেই। কাটা গাছগুলি বাজেয়াপ্ত করার জন্য শুক্রবার আমিই বন দফতরকে চিঠি দিই।”
ঝাড়গ্রামের ডিএফও আশিসকুমার সামন্ত বলেন, “প্রায় ২৫টি বিভিন্ন ধরনের কাটা গাছ আমরা বাজেয়াপ্ত করেছি। গাছগুলি কাটার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক তথা বিডিও সর্বোদয় সাহার সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি বংশীবদন মাহাতোর বেশ কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গাছকাটা নিয়ে বন দফতরে অভিযোগ দায়ের করে বংশীবদনবাবুরা পরোক্ষে বিডিওকেই চাপে ফেলতে চেয়েছেন বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহলের একাংশ। বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির প্রবীণ কংগ্রেস সদস্য সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “সভাপতি ও বিডিও’র মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের ফলে প্রশাসনিক স্তরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। গাছকাটার ঘটনায় তা বেআব্রু হয়ে পড়েছে।” |