জন-অরণ্যে ফিসফাস, ওই যে সেই দোকানটা
চেখে দেখা তো আছেই, চোখে দেখার উৎসাহও কম নয়!
উৎসুক চোখে এক পলক তাকিয়ে পাশের বন্ধুকে বললেন বছর তিরিশের যুবক, “এই যে, এই যে! এখান থেকেই খেয়েছে!” খানিক বাদে এলেন আর এক দল। দোকানের সামনে ভিড় জমিয়ে তাঁরা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চাইলেন অভিজ্ঞতার কথা।
সব দেখেশুনে মুচকি হাসেন ‘চৌহান ভিক্টোরিয়া বড়া’-র মালিক অনুরাগ চৌহান। বৃহস্পতিবার তাঁর ফুটপাথের দোকানেই শালপাতায় করে ডালবড়া খেয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন! খুশি হয়ে তারিফ করেছেন। রাতারাতি বিখ্যাত হওয়া দোকানে শুক্রবার সকাল থেকেই ক্রেতা বেড়ে গিয়েছে। বিক্রি বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। ক্যামেরন যে মুগডালের বড়া খেয়েছিলেন, সবাই তা-ই খেতে চান। সঙ্গে সামলাতে হচ্ছে গুচ্ছ প্রশ্ন, “ক্যামেরনকে কেমন দেখতে? ক’টা বড়া খেলেন? কী বললেন? কী করে ওঁর কথা বুঝলেন?” ইত্যাদি-ইত্যাদি।
অনুরাগ চৌহান (বাঁদিকে) ও তাঁর ভাই অর্জুন। শুক্রবার, ক্যামাক স্ট্রিটে। ছবি: সুমন বল্লভ।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় এসে ক্যামাক স্ট্রিটের ওই দোকানে চাটনি-সহ সুস্বাদু বড়া তাঁর এতই ভাল লেগেছে যে তা তৈরির প্রণালীও জেনেছেন অনুরাগের থেকে। বছর তেইশের এই যুবকের কথায়, “ওঁর কাছে ভারতীয় মুদ্রায় ৩০ টাকা ছিল। পুরোটাই দেন।” প্লাস্টিকের প্যাকেটে টাকা ক’টা যত্ন করে মুড়ে রেখেছেন উত্তরপ্রদেশের ওই যুবক।
ক্যামেরন আসার দিন কয়েক আগে ব্রিটিশ কনস্যুলেটের কয়েক জন কর্তা এসে ওই দোকানে বড়া খেয়ে যান। তখনই অনুরাগ জানতে পারেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী আসবেন তাঁর দোকানে খেতে। যদিও তখন সে কথা বিশ্বাস করতে পারেননি কলা শাখায় স্নাতক অনুরাগ। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে লালবাজার থেকে পুলিশকর্মীরা এসে বেশ কয়েক প্লেট বড়া চেখে দেখায় বোঝেন ব্যাপারটা সত্যিই ঘটতে চলেছে। ক্যামেরন চলে আসেন সাড়ে সাতটা-আটটা নাগাদ।
বিদেশি রাষ্ট্রকর্তার সামনে কেমন লাগছিল? অনুরাগের জবাব, “ভাল লাগছিল। উনি খুব আন্তরিক ভাবে হাত মিলিয়ে হাসলেন। উৎসাহ নিয়ে খেলেন। টাকা মিটিয়ে চলে গেলেন।”
খাঁটি ভারতীয় খাবারের দোকান, তার পসরাও সাধারণ মুগ ডালের বড়া। সেই দোকানের নামে একটা ‘ভিক্টোরিয়া’ রয়েছে। অনুরাগ জানালেন, ব্রিটিশ আমলে তাঁর দাদু ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে মুড়ি বিক্রি করতেন। ভালই চলত। পরে বাবা রাজেন্দ্রপ্রসাদ যখন ক্যামাক স্ট্রিটে বড়ার দোকান দিলে নামটা রেখে দিয়েছিলেন। নামের টানেই ভিক্টোরিয়ার দেশের প্রধানমন্ত্রী সেখানে হাজির হয়েছিলেন কি না, সে নিয়ে জল্পনা চলতেই পারে।
এই যে এত মানুষ আপনার কথা জানতে চাইছে, খবরের কাগজ- চ্যানেলে আপনার ছবি, কেমন লাগছে? অনুরাগের ছোট্ট জবাব, “ভাল। কিন্তু এটা সাময়িক।” ফুচকা, চাট, কোল্ড ড্রিংকের সারিবদ্ধ দোকানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিঁকে থাকতে হলে পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে, জানেন অনুরাগ। তাই হাতের কাজ ফেলে একটু কথা বলেই ফিরে গেলেন দোকানে। ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ডাল বড়া বিক্রিতে।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.