ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে না এলে আইনি ব্যবস্থা
বন্ধ, পরিত্যক্ত বাগান চালুতে উদ্যোগী রাজ্য
ডুয়ার্সের বন্ধ ও পরিত্যক্ত চা বাগানের অচলাবস্থা কাটাতে বাগান কর্তৃপক্ষকে কলকাতায় তলব করবে রাজ্য সরকার। যে সব বাগানের কর্তৃপক্ষ ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে উপস্থিত হবেন না তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা সম্ভব কিনা তা নিয়েও আলোচনা করছে রাজ্য সরকার। শ্রম দফতর থেকে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে বাগান মালিকদের প্রশাসনের বৈঠকে অনুপস্থিতির কথা জানানোর পরেই রাজ্য সরকার থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের এক সূত্রে জানা যায় আগামী সপ্তাহে শিলিগুড়িতে যুগ্ম শ্রম কমিশনারের দফতরে ৩টি বাগান নিয়ে বৈঠক। সেই বৈঠকের গতিপ্রকৃতি জানার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “শ্রম কমিশনের উত্তরবঙ্গ অফিসে কয়েকটি বাগান মালিকপক্ষকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে। সেখানে সমাধান না হলে মালিক পক্ষকে কলকাতায় ডেকে পাঠানো হবে। আইন মেনেই পদক্ষেপ করা হবে।” যদিও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব সরাসরি আইনি পদক্ষেপের কথা জানিয়ে বলেছেন, “ডুয়ার্সের বন্ধ এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানগুলির শ্রমিককে যাতে অর্ধাহারে কাটাতে না হয়, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো প্রশাসন কাজ করছে। তবে বাগানে স্বাভাবিক কাজকর্ম পরিচালনা করতে যে বৈঠক হচ্ছে, তাতে অনেক ক্ষেত্রেই কতৃর্পক্ষের কোনও প্রতিনিধি আসছেন না। এই প্রবণতা বন্ধ করা প্রয়োজন। আলোচনার মাধ্যমেই সব কিছুর সমাধান সম্ভব। সরকারের শীর্ষ স্তরে আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”
গত এক মাসে ডুয়ার্সের রেডব্যাঙ্ক, সুরেন্দ্রনগর, ধরনীপুর, নিদাম, দলসিং পাড়া এবং জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া রায়পুর চা বাগানে অচলাবস্থা চলছে। রায়পুর ছাড়া অন্য চা বাগানগুলিতে মালিক পক্ষের তরফে বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। একই সময়ে ৬টি বাগান ছেড়ে মালিক পক্ষ চলে যাওয়ায় শ্রমিকদের দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়। শ্রমিকদের সাহায্যের জন্য ১০০ দিনে কাজ শুরু করা, চাল-গম, পোশাক বিলির মত রাজ্য সরকারের তরফে পদক্ষেপ করা হলেও বাগানে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোই রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার বলে জানানো হয়েছে। বাগানের স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে বৈঠক ডেকেও, মালিকপক্ষ না আসায় বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে শ্রম দফতর থেকে জানানো হয়েছে। রেড ব্যাঙ্ক, সুরেন্দ্রনগর, ধরনীপুর, এবং রায়পুর চা বাগান কর্তৃপক্ষকে নিয়ে পুজোর আগে শ্রম দফতর বৈঠক ডাকলেও মালিক পক্ষ আসেননি। বুধবার মালবাজারের সহ শ্রম কমিশনারের দফতরে বৈঠক ডাকা হলেও চিঠি দিয়ে কর্তৃপক্ষ অনুপস্থিত থাকার কথা জানিয়ে দেয়।
এ অবস্থায়, আগামী ২০ নভেম্বর শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম কমিশনারের দফতরে রেড ব্যাঙ্ক, সুরেন্দ্র নগর এবং ধরনীপুর চা বাগান নিয়ে বৈঠক রয়েছে। দলসিংপাড়া চা বাগান নিয়ে শিলিগুড়িতে বৈঠক হবে ২২ নভেম্বর। আগামী ১৯ নভেম্বর জলপাইগুড়ির উপ শ্রম কমিশনারের দফতরে নিদাম চা বাগান নিয়ে বৈঠক হবে। উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম কমিশনার মহম্মদ রিজওয়ান বলেন, “এর আগে কয়েক দফায় কয়েকটি বাগান নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকগুলিতে একটি বাদে মালিক পক্ষের সাড়া মেলেনি। ২০ ও ২২ নভেম্বর ডুয়ার্সের কয়েকটি বাগান নিয়ে বৈঠক রয়েছে। দেখা যাক কী হয়।” চা মালিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে আলোচনায় জোর দেওয়া হয়েছে। চা মালিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে তৈরি কনসালটেটিভ কমিটি অব প্ল্যার্ন্টাস অ্যাসোসিয়েশনের মহা সচিব মনোজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, “শ্রম কমিশনারের দফতর সিসিপিএকে কিছু জানায়নি। জানানো হলে নিশ্চয়ই আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।” নানাশ্রমিক সংগঠনের তরফে রাজ্যের পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.