নবদ্বীপের রাসের শোভাযাত্রাকে মসৃণ করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। বেশ কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাসের শোভাযাত্রা বা ‘আড়ং’ থমকে দাঁড়িয়ে পড়ছে। সেই শোভাযাত্রাকে সচল রাখাটাই এবার যেন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের। শোভাযাত্রার প্রায় সোয়া পাঁচ কিলোমিটার চক্রপথের বিভিন্ন জায়গায় ড্রপগেট ও গার্ডরেল ব্যবহার করে প্রতিমার অবাধ প্রবেশ এ বার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এই পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
নবদ্বীপের আই সি তপনকুমার মিশ্র বলেন, “শোভাযাত্রার চক্রপথে অন্তত কুড়িটি জায়গা দিয়ে প্রতিমা প্রবেশ করে। আর এই প্রবেশ করার ব্যাপারটি বারোয়ারি পুজো কর্তাদের ইচ্ছামতো হয়ে থাকে। সকলেই চায় সন্ধ্যাবেলায় বের হতে। যার ফলে পুরো ব্যপারটাই কিছুক্ষণের মধ্যে জট পাকিয়ে যায়।” আর তিনশো প্রতিমা জট পাকালে সে জট খুলতে খুলতে রাত কাবার হয়ে যায়। এবার তাই পুরো শোভাযাত্রার ব্যাপারটা ঢেলে সাজিয়েছেন পুলিশ, পুরসভা এবং রাসযাত্রা সমন্বয় কমিটির সদস্যরা। |
কী ভাবে সচল রাখা হবে আড়ং? প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, যোগনাথতলা মোড়, পোড়ামাতলা মোড়, রাধাবাজার মোড়, দন্ডপাণিতলা মোড়, বুড়োশিবতলা ব্যানার্জিপাড়া মোড়, পোড়ামাতলা মোড় (পশ্চিম দিক ) ছাড়াও আরও ছ’টি জায়গায় থাকছে গার্ডরেল। আই সি তপনবাবু বলেন, “কারা, কখন, কোন দিক দিয়ে প্রতিমা নিয়ে প্রবেশ করবেন তার একটা সময়সারণী আমরা পুরসভা এবং রাসযাত্রা সমন্বয় কমিটির সঙ্গে বসে তৈরী করেছি। উদ্যোক্তাদের পুজোর অনুমতির নেওয়ার সময় ওই সময় সারণী দিয়ে দেওয়া হবে। এরপর বিভিন্ন ড্রপগেট এবং গার্ডরেল খোলা বন্ধ করে শোভাযাত্রার গতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।”
নবদ্বীপের রাসকে মাদক বর্জিত করতে বৃহস্পতিবার নবদ্বীপের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা পথে নেমেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন কয়েক’শো মহিলা। তাঁদের মধ্যে পুরসভার মহিলা কাউন্সিলাররাও ছিলেন। ওই মিছিল গোটা নবদ্বীপ পরিক্রমা করে মাদক বর্জিত উৎসব পালনের ডাক দেয়। পুন্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, “প্রশাসনকে বলেছি, মদ্যপান এবং তার জন্য কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন বরদাস্ত না করা হয়। নবদ্বীপের রাসকে সুন্দর করতে আমরা সব ধরণের চেষ্টা করছি। বিদ্যুৎ পরিষেবায় যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কোন রকম উচ্ছৃঙ্খলতা দেখলেই প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
|