বহরমপুর পুরসভার সঙ্গেই ২২ নভেম্বর মুর্শিদাবাদ পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন হবে। এই উপ-নির্বাচন ঘিরে ভাগীরথীর পাড় লাগোয়া ওই ওয়ার্ডে হাওয়া গরম হচ্ছে।
২০১০ সালে মুর্শিদাবাদ পুরসভার নির্বাচনে ১৬ আসনের মধ্যে ১০টিতে জিতে কংগ্রেস বোর্ড গড়ে। ছ’মাসের মধ্যেই ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের তৃপ্তি সিংহ মারা যান। ফলে বছর তিনেক কাউন্সিলরশূন্য থাকার পর ওই ওয়ার্ডে ভোট হতে চলছে।
২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা ২১৫২। গত বার তৃপ্তিদেবী ১৩৭ ভোটে কংগ্রেসের চন্দনা গঙ্গোপাধ্যায়কে হারান। তৃপ্তিদেবীর বোনঝি তথা প্রয়াত মন্ত্রী ছায়া ঘোষের মেয়ে গার্গী ঘোষ বামফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন। অন্য দিকে কংগ্রেসের রিনা দাস এবং চয়নিকা দাস তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন। |
জেলার প্রধান তিন রাজনৈতিক শক্তিই ভোট প্রচারে এক অপরের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে ব্যস্ত। কংগ্রেসের দাবি, কাউন্সিলর না থাকলেও ওই এলাকায় নাগরিক পরিষেবা মিলেছে। উন্নয়নকে সামনে রেখে উপনির্বাচনে লড়ছে কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেস কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা কাউন্সিলর বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, “গত তিন বছর এলাকায় যাবতীয় নাগরিক পরিষেবা দিয়েছি। এলাকার রাস্তা-ঘাট হয়েছে। পথবাতিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।” বাম প্রার্থী গার্গী দাসের অবশ্য অভিযোগ, “এলাকার কোনও উন্নয়ন হয়নি। মেলেনি বার্ধ্যক্য ও বিধবা ভাতা।”
বামফ্রন্ট ও তৃণমূল ক্ষমতাসীন বোর্ডের অর্ন্তদ্বন্দ্বকে ইস্যু করে ভোট ময়দানে কিস্তিমাত করতে মরিয়া। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহম্মদ আলির অভিযোগ, “নিজেদের কাউন্সিলররাই বার বার অনাস্থা এনে পুরসভায় অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। দলীয় কাউন্সিলররাই পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে।” এ ব্যাপারে বিপ্লববাবুর সাফ কথা, “গোষ্ঠী কোন্দল নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ফাটল ধরাতে পারেনি। কোন্দলকে দূরে সরিয়ে রেখে কর্মীরা এককাট্টা হয়ে ভোট প্রচার করছে।” প্রসঙ্গত, দলীয় তিন কাউন্সিলর বিরোধিতায় ইতিমধ্যে ওই পুরসভায় একবার পুরপ্রধানের বদল হয়েছে। কিছু দিন আগেই বর্তমান পুরপ্রধানকে সরাতে উদ্যোগী হয়েছিল ওই তিন কাউন্সিলরই। বাম প্রার্থীর বিরুদ্ধে ‘পরিবারতন্ত্রের’ পাশাপাশি ‘টাকা ছড়ানোর’ অভিযোগ তুলেছে শাসকদল। মহম্মদ আলি বলেন, “পরিবারতন্ত্র কায়েম করে রেখেছে বাম প্রার্থী। উপনির্বাচনে ধনতন্ত্র বনাম সাধারণতন্ত্রের লড়াই হবে। সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যকলাপকে মূলধন করে আমরা ভোটে লড়ছি।” বিপ্লববাবুও বলেন, “টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার চেষ্টা হচ্ছে।” গার্গীদেবীর পাল্টা জবাব, “আমার রাজনৈতিক পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে, তা ভোটাররা জানেন। ফলে পরিবারতন্ত্রের কথা বলে এলাকাবাসীদের বিভ্রান্ত করা যাবে না। আর হারার আশঙ্কা থেকেই প্রত্যেকবারই টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তোলে বিরোধীরা।” |